পড়াশুনার জন্য রয়েছে অদ্ভুত থেকে অদ্ভুতুরে সব বিষয়। এ পর্বে তেমনই আরো কয়েকটি বিষয় নিয়ে হাজির হলাম।
ঘাসযুক্ত লনের বিজ্ঞান: টার্ফগ্রাস সায়েন্স। পড়ানো হয় পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। গলফ থেকে শুরু করে বিভিন্ন খেলার জন্য সুন্দর সুষম ঘাসযুক্ত মাঠের প্রয়োজন হয়। এ সকল মাঠ কীভাবে তৈরি করতে হয় তা নিয়ে পড়াই এ বিষয়ের মূল লক্ষ্য। রীতিমতো জীববিজ্ঞান, রসায়ন, প্ল্যান্ট সায়েন্স, আবহাওয়া বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে হয় ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন টার্ফগ্রাস সায়েন্সের শিক্ষার্থীদের।
বিনোদন প্রকৌশল: ইউনিভার্সিটি অব নেভাডা অ্যাট লাস ভেগাসে বিনোদন প্রকৌশলের ওপর ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি দেয়া হয়। ইউনিভার্সিটির অবস্থান শুনেই আমরা বুঝতে পারছি এ বিষয়ে আসলে কী পড়ানো হয়। পড়ানো হয় মূলত ক্যাসিনোর বিভিন্ন গেইম তৈরি, সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, সৌন্দর্য ও বাণিজ্যিক উপস্থাপন বিষয়ে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের বায়োমেকানিক্স থেকে শুরু করে অ্যানিমেট্রনিক্স পর্যন্ত পড়তে হয়।
ফ্যামিলি এন্টারপ্রাইজ: অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে যেগুলো একই পরিবারের সদস্যরা পরিচালনা করেন। যেমন- ওয়ালমার্ট, ফোর্ড, গ্যাপ, মোটোরালা ইত্যাদি। পরিবারের সদস্যদের সাথে ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে কী করা উচিৎ আর কী করা উচিৎ নয় তা নিয়ে পড়াশুনা করায় ফ্লোরিডার স্টেটসন ইউনিভার্সিটি।
কানাডিয়ান স্টাডিজ: আফ্রিকান, ওরিয়েন্টাল কিংবা আমেরিকান স্টাডিজ রয়েছে। কিন্তু কানাডিয়ান স্টাডিজ? হ্যাঁ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় তার ছাত্রদের জন্য কানাডিয়ান স্টাডিজ খুলে রেখেছে। মার্কিন নাগরিকরা যেন তাদের উত্তর অবস্থিত বিশাল কানাডার মানুষ সম্পর্কে আরেকটু ভালো করে জানতে পারে সেজন্য। কানাডার ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি সব বিষয়েই এখানে পড়ানো হয়। ডিউক ইউনিভার্সিটি, জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক প্ল্যাটসবার্গ, ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্টে কানাডিয়ান স্টাডিজ নিয়ে পড়ানো হয়।
জ্যাজ স্টাডিজ:সঙ্গীত ঘরানার অন্যতম এক শাখা জ্যাজ। বিশেষ করে পাশ্চাত্যে। তবে বিশ্বব্যাপী এর বহু ভক্ত রয়েছে। শুধুমাত্র জ্যাজ মিউজিক শেখা এবং তার ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ভূমিকা, বিগত দশকগুলোতে জ্যাজ সঙ্গীতের ব্যবহার নিয়ে পড়ানো হয় জ্যাজ স্টাডিজে। ইউনিভার্সিটি অব নর্থ টেক্সাস, ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিল ও ইস্ট ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটিতে পড়ানো হয় এ বিষয়টি।
ইকোগ্যাস্ট্রনোমি: ইউনিভার্সিটি অব নিউ হ্যাম্পশায়ারে পড়ানো হয়। মাঠ থেকে মানুষের প্লেট পর্যন্ত খাবার কীভাবে পৌঁছায় তাই নিয়েই এদের পড়াশুনা। কতগুলো ধাপ পেরিয়ে কোনো জিনিস মানুষের খাবারে পরিণত হয়, মানুষের খাদ্যাভ্যাস ইকোলজিতে কী প্রভাব বিস্তার করে এসব তাদের পাঠ্য। ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি আছে গ্র্যাজুয়েটদের। কৃষি থেকে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট সবই পড়তে হয় তাদের। মনে হচ্ছে, এ বিষয়টা নিয়ে আমার পড়া উচিৎ ছিল।
অশ্ববিদ্যা: ঘোড়া নিয়ে অনেকের আগ্রহ থাকে। ওয়েস্টার্ন মুভিতে ঘোড়া নিয়ে খুব ভাবসাবের দৃশ্য থাকে। অশ্বচালনা, অশ্বপালন এবং অশ্বকে বিভিন্ন খেলার জন্য প্রস্তুত করা, প্রশিক্ষণ দেয়া প্রভৃতি বিষয়ে পড়ানো হয় এ অশ্ববিদ্যা বা ইকোয়াইন স্টাডিজে। ম্যাসাচুসেটসের বেকার কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি অভ মেরিল্যান্ডে এ বিষয়ে ডিগ্রি দেয়া হয়।
ন্যানিইং: পাশ্চাত্যে ন্যানি খুব পরিচিত একটা বিষয়। বিশেষ করে ধনী পরিবারে ন্যানিদের দেখা যায়। ধনী পরিবারের শিশুদের দেখাশুনা করে থাকেন তারা। বাংলাদেশের বুয়া আর কি। তো এই ন্যানিইং এর ওপর ১২ মাসের ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেয় কেনটাকির সুলিভান বিশ্ববিদ্যালয়। সিপিআর, প্রাথমিক চিকিৎসা, বাচ্চার সুরক্ষাজনিত বিষয়, বাচ্চাকাচ্চাকে আনন্দ দেয়ার কৌশল থেকে শুরু করে বাচ্চা ও বাচ্চার মা-বাপের সাথে “ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন” পর্যন্ত শেখানো হয় এ কোর্সে।
কমিক আর্ট: কমিক বইয়ের মতো অসাধারণ জিনিস আর কয়টা আছে? এই তো টিভি, কম্পিউটার যখন ছিল না তখন ছবির মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে গল্প বলার জাদুকরী ভূমিকা পালন করেছে কমিক্স। যত আধুনিক প্রযুক্তিই আসুক না কেন টিনটিন, আর্চি, চাচা চৌধুরী, নন্টে-ফন্টের আবেদন কী কমেছে আমাদের কাছে? বড় বড় কমিক আর্টিস্টরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যতীতই জন্ম দিয়েছেন অসাধারণ সব কমিক্স বইয়ের। এই কমিক আর্টের ওপর ব্যাচেলর অব ফাইন আর্টস ডিগ্রি প্রদান করে মিনিয়াপোলিস কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন।
বন্দুক বানানো (গানস্মিথিং), ঘড়ি বানানো (ওয়াচস্মিথিং), আউটার ওয়ার্ল্ডের বায়োলজি নিয়েও পড়াশুনার অস্তিত্ব এ পৃথিবীতে রয়েছে। আছে সার্কাসে পারফর্ম করার বিদ্যা নিয়েও ডিগ্রি। সেগুলো হয়তো হাজির হবো অন্য কোনোদিন।
তথ্যসূত্র: স্টাডি ইন আনইউজুয়াল সাবজেক্টস লিখে গুগলে সার্চ দিলে প্রথম পাতায় যা আসে সব
Wednesday, June 25, 2014
Tuesday, June 24, 2014
অগতানুগতিক কিছু বিষয় যেগুলোর ওপর রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাওয়া সম্ভব
বহু আগে অদ্ভুত কিছু পেশা নিয়ে লিখেছিলাম। খুঁজতে খুঁজতে অদ্ভুত বা গতানুগতিক নয় এমন কিছু বিষয় পেয়ে গেলাম যার ওপর রীতিমতো উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর, মাস্টার, পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। আমাদের দেশে কেউ শিক্ষা কিংবা শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন নিয়ে পড়াশুনা করলে আমরা অবাক হয়ে যাই, এইটা আবার কোন বিষয়? অথচ সারা পৃথিবীর প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়গুলো পড়ানো হয়। কিন্তু যে বিষয়গুলো সত্যিই অপ্রচলিত এবং কিছু ক্ষেত্রে অদ্ভুত সেগুলো নিয়েই আজকের লেখা।
দ্য বিটলস: হ্যাঁ, ৬০ এর দশকের জনপ্রিয় ব্যান্ড বিটলসের ওপরে রীতিমতো ডিগ্রি প্রদান করে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল হোপ বিশ্ববিদ্যালয়। পুরো ডিগ্রির নাম এম.এ ইন দ্য বিটলস, পপুলার মিউজিক অ্যান্ড সোসাইটি। এখানে গত ৫০ বছরে কী ধরণের পপ সঙ্গীত গাওয়া হয়েছে, সে সঙ্গীতের ওপর বিটলসের প্রভাব এসব বিষয়ে পড়ানো হয়।
মারিজুয়ানা চাষ: ক্যালিফোর্নিয়ার ওকস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় রীতিমতো মারিজুয়ানা চাষের ওপর ছাত্রদের পড়াশুনা করায়। তবে অবশ্যই তা চিকিৎসার কাজে মারিজুয়ানার গুণাবলীর বিষয়ে। মারিজুয়ানা চাষ পদ্ধতি, তার ইতিহাস, আইনি দিক নিয়ে পড়ানো হয়। ড্রাগ ডিলিং হচ্ছে এমন সন্দেহে তবে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ক্লাস চলতে চলতে সেখানে হাজির হয় যুক্তরাষ্ট্রের ডিইএ, ইউ মার্শাল আর আইআরএস প্রভৃতি ফেডারেল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বিয়ার বানানো: পোশাকী নাম ফারমেন্টেশন সায়েন্স। পড়ানো হয় অ্যাপালাচান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। এ বিষয়ে ব্যাচেলর করতে হলে রীতিমতো রসায়ন ও জীববিদ্যার ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। পড়তে বিয়ার ব্যবসা ও পরিবেশনার বাণিজ্যিক দিক নিয়ে। কঠিন অবস্থা।
যৌনতা: সান ফ্রান্সিস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যৌনতা বিষয়ে বিস্তারিত পড়াশুনার সুযোগ রয়েছে। মানুষের যৌন আচরণ, কলা, শিল্প ও সাহিত্যে মানব যৌনতার বহিঃপ্রকাশ প্রভৃতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয় এ সাবজেক্টে। ডিগ্রির মূল উদ্দেশ্য সমাজে যৌন হয়রানী বন্ধ করা।
মদ মেকিং: কেতাবী নাম ভিটিকালচার অ্যান্ড এনোলজি। পারফেক্ট মদ বানানো নিয়ে পড়াশুনা। আঙ্গুর চাষের জন্য মাটি পরীক্ষা, আবহাওয়া নির্বাচন থেকে শুরু করে উন্নত মানের মদ তৈরির জন্য আঙ্গুর বাছাই করে মদ বানানোর সকল প্রক্রিয়া শেখানো হয় এখানে। মদ বাজারজাতকরণের দিকও পড়ানো হয়। নিউ ইয়র্কের কর্নেল ইউনিভার্সিটি এ বিষয়ের গর্বিত ডিগ্রিদাতা।
সিদ্ধান্ত বিজ্ঞান: ডিসিশন সায়েন্স। আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না?? কেন পারেন না? কীভাবে মানুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এসব কিছুর ওপর পড়াশুনা করে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিশন সায়েন্সের পন্ডিত শিক্ষার্থীরা। ডিসিশন সায়েন্সের ওপর রীতিমতো পিএইচডি ডিগ্রি দেয় তারা। এই পিএইচডিধারী পন্ডিতরা অংক কষে আপনার কোম্পানীর জন্য প্রয়োজনীয় ডিসিশনও নিয়ে দিতে পারে।
জনপ্রিয় সংস্কৃতি: এ বিষয়ের ওপর বিএ ডিগ্রি দেয় যুক্তরাষ্ট্রের বাওলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি। সাম্প্রতিক সময়ের টেলিভিশনের অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র, গাড়ি, বাড়ি, সঙ্গীত, ম্যাগাজিন, ফ্যাশন, ট্রেন্ড, সেলিব্রেটিদের জীবনযাপন ভালোমতো খিয়াল করে তা নিয়ে গবেষণা করাই এ বিষয়ের শিক্ষার্থীদের কাজ। কীভাবে আগের চেয়ে এখনকার সংস্কৃতি পরিবির্তন হলো তাও তারা খুঁজে বের করে। চমৎকার কিন্তু!
ফুলের দোকানদারি: ফ্লোরাল ম্যানেজমেন্ট। আমাদের শাহবাগের ফুলের দোকানদাররা এই বিষয়ে না পড়েই কঠিন ব্যবসায় করে ফেলছে। কিন্তু মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে উৎপাদকের কাছ থেকে ফুল কিনে বাজারজাত করা এবং দোকানে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার ওপরে পড়ানো হয়। ফুলের দোকানকে আনন্দদায়ক বাগানের আদলে সাজিয়ে ফুল বিক্রিও যে একটা শিল্প তাও শেখানো হয়। আর ফুল ব্যবসার বাণিজ্যিক দিক (সহজ কথায় বিবিএ) তো অবশ্যই পড়ানো হয়।
নিলামওয়ালা: অকশনিয়ারিং। নিলামে মাল তুলে কীভাবে তা বেচতে হবে এ বিষয়ে ২০ ক্রেডিটের কোর্স করায় পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গ এরিয়া কমিউনিটি কলেজ। রীতিমতো লাইসেন্সড নিলামওয়ালা হওয়া যায় এ কোর্স শেষে পরীক্ষায় পাশ করে।
প্যাকেজিং: প্যাকেজিং বা বাক্স-প্যাটরা বিষয়ে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি ব্যাচেলর, মাস্টার এমনকি পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করে। তা কী শেখানো হয় এখানে? পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং। দুনিয়া লাখ লাখ ধরণের প্রোডাক্ট প্রতিদিন বিক্রি হয়। এসবই কিন্তু বাজারে আসে কোনো না কোনোরকম প্যাকেটের ভেতরে। এই প্যাকেজিং পরিবেশকে যথাসম্ভব কম ক্ষতি করে কীভাবে করা যায় তাই নিয়ে পড়াশুনা। এই বিষয়ের শিক্ষার্থীরা এমন স্বপ্ন দেখেন যে অদূর ভবিষ্যতে এমন কোনো সিস্টেম তারা দাঁড় করাবেন যখন প্যাকেট ছাড়াই পণ্য বিক্রি হবে। (আমার প্রশ্ন- তখন এই পন্ডিতরা করবে কী?)
তথ্যসূত্র: গুগলে স্টাডি ইন আনইউজুয়াল / উইয়ারড সাবজেক্ট লিখে সার্চ দিলে প্রথম পাতায় যা আসে সব
দ্য বিটলস: হ্যাঁ, ৬০ এর দশকের জনপ্রিয় ব্যান্ড বিটলসের ওপরে রীতিমতো ডিগ্রি প্রদান করে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল হোপ বিশ্ববিদ্যালয়। পুরো ডিগ্রির নাম এম.এ ইন দ্য বিটলস, পপুলার মিউজিক অ্যান্ড সোসাইটি। এখানে গত ৫০ বছরে কী ধরণের পপ সঙ্গীত গাওয়া হয়েছে, সে সঙ্গীতের ওপর বিটলসের প্রভাব এসব বিষয়ে পড়ানো হয়।
মারিজুয়ানা চাষ: ক্যালিফোর্নিয়ার ওকস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় রীতিমতো মারিজুয়ানা চাষের ওপর ছাত্রদের পড়াশুনা করায়। তবে অবশ্যই তা চিকিৎসার কাজে মারিজুয়ানার গুণাবলীর বিষয়ে। মারিজুয়ানা চাষ পদ্ধতি, তার ইতিহাস, আইনি দিক নিয়ে পড়ানো হয়। ড্রাগ ডিলিং হচ্ছে এমন সন্দেহে তবে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ক্লাস চলতে চলতে সেখানে হাজির হয় যুক্তরাষ্ট্রের ডিইএ, ইউ মার্শাল আর আইআরএস প্রভৃতি ফেডারেল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বিয়ার বানানো: পোশাকী নাম ফারমেন্টেশন সায়েন্স। পড়ানো হয় অ্যাপালাচান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। এ বিষয়ে ব্যাচেলর করতে হলে রীতিমতো রসায়ন ও জীববিদ্যার ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। পড়তে বিয়ার ব্যবসা ও পরিবেশনার বাণিজ্যিক দিক নিয়ে। কঠিন অবস্থা।
যৌনতা: সান ফ্রান্সিস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যৌনতা বিষয়ে বিস্তারিত পড়াশুনার সুযোগ রয়েছে। মানুষের যৌন আচরণ, কলা, শিল্প ও সাহিত্যে মানব যৌনতার বহিঃপ্রকাশ প্রভৃতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয় এ সাবজেক্টে। ডিগ্রির মূল উদ্দেশ্য সমাজে যৌন হয়রানী বন্ধ করা।
মদ মেকিং: কেতাবী নাম ভিটিকালচার অ্যান্ড এনোলজি। পারফেক্ট মদ বানানো নিয়ে পড়াশুনা। আঙ্গুর চাষের জন্য মাটি পরীক্ষা, আবহাওয়া নির্বাচন থেকে শুরু করে উন্নত মানের মদ তৈরির জন্য আঙ্গুর বাছাই করে মদ বানানোর সকল প্রক্রিয়া শেখানো হয় এখানে। মদ বাজারজাতকরণের দিকও পড়ানো হয়। নিউ ইয়র্কের কর্নেল ইউনিভার্সিটি এ বিষয়ের গর্বিত ডিগ্রিদাতা।
সিদ্ধান্ত বিজ্ঞান: ডিসিশন সায়েন্স। আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না?? কেন পারেন না? কীভাবে মানুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এসব কিছুর ওপর পড়াশুনা করে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিশন সায়েন্সের পন্ডিত শিক্ষার্থীরা। ডিসিশন সায়েন্সের ওপর রীতিমতো পিএইচডি ডিগ্রি দেয় তারা। এই পিএইচডিধারী পন্ডিতরা অংক কষে আপনার কোম্পানীর জন্য প্রয়োজনীয় ডিসিশনও নিয়ে দিতে পারে।
জনপ্রিয় সংস্কৃতি: এ বিষয়ের ওপর বিএ ডিগ্রি দেয় যুক্তরাষ্ট্রের বাওলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি। সাম্প্রতিক সময়ের টেলিভিশনের অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র, গাড়ি, বাড়ি, সঙ্গীত, ম্যাগাজিন, ফ্যাশন, ট্রেন্ড, সেলিব্রেটিদের জীবনযাপন ভালোমতো খিয়াল করে তা নিয়ে গবেষণা করাই এ বিষয়ের শিক্ষার্থীদের কাজ। কীভাবে আগের চেয়ে এখনকার সংস্কৃতি পরিবির্তন হলো তাও তারা খুঁজে বের করে। চমৎকার কিন্তু!
ফুলের দোকানদারি: ফ্লোরাল ম্যানেজমেন্ট। আমাদের শাহবাগের ফুলের দোকানদাররা এই বিষয়ে না পড়েই কঠিন ব্যবসায় করে ফেলছে। কিন্তু মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে উৎপাদকের কাছ থেকে ফুল কিনে বাজারজাত করা এবং দোকানে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার ওপরে পড়ানো হয়। ফুলের দোকানকে আনন্দদায়ক বাগানের আদলে সাজিয়ে ফুল বিক্রিও যে একটা শিল্প তাও শেখানো হয়। আর ফুল ব্যবসার বাণিজ্যিক দিক (সহজ কথায় বিবিএ) তো অবশ্যই পড়ানো হয়।
নিলামওয়ালা: অকশনিয়ারিং। নিলামে মাল তুলে কীভাবে তা বেচতে হবে এ বিষয়ে ২০ ক্রেডিটের কোর্স করায় পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গ এরিয়া কমিউনিটি কলেজ। রীতিমতো লাইসেন্সড নিলামওয়ালা হওয়া যায় এ কোর্স শেষে পরীক্ষায় পাশ করে।
প্যাকেজিং: প্যাকেজিং বা বাক্স-প্যাটরা বিষয়ে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি ব্যাচেলর, মাস্টার এমনকি পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করে। তা কী শেখানো হয় এখানে? পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং। দুনিয়া লাখ লাখ ধরণের প্রোডাক্ট প্রতিদিন বিক্রি হয়। এসবই কিন্তু বাজারে আসে কোনো না কোনোরকম প্যাকেটের ভেতরে। এই প্যাকেজিং পরিবেশকে যথাসম্ভব কম ক্ষতি করে কীভাবে করা যায় তাই নিয়ে পড়াশুনা। এই বিষয়ের শিক্ষার্থীরা এমন স্বপ্ন দেখেন যে অদূর ভবিষ্যতে এমন কোনো সিস্টেম তারা দাঁড় করাবেন যখন প্যাকেট ছাড়াই পণ্য বিক্রি হবে। (আমার প্রশ্ন- তখন এই পন্ডিতরা করবে কী?)
তথ্যসূত্র: গুগলে স্টাডি ইন আনইউজুয়াল / উইয়ারড সাবজেক্ট লিখে সার্চ দিলে প্রথম পাতায় যা আসে সব
Labels:
Career,
Daily Life,
অদ্ভুত বিষয়,
ডিগ্রি,
পড়াশুনা,
বিশ্ববিদ্যালয়
রমজানের প্রস্তুতি
রোজা তো প্রায় এসেই গেল তাই যারা অনেক বিজি থাকেন তাদের জন্য আমার কিছু টিপস রইল। রোজায় যেহেতু সবারই কিছুটা ক্লান্ত লাগে তাই কিছুটা কাজের চাপ যেন কম থাকে তার জন্য চাইলে এইগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন।
১। রোজায় আমরা যে সমস্ত রান্না সচরাচর করে থাকি সেগুলোতে বাটা মশলা লাগে এজন্য তুলনামুলক রোজার মাঝে বাটা মশলা বেশি লাগে। তাই রোজার আগেই বেশি করে আদা, রসুন, পিঁয়াজ সহ সব মশলা বেটে বা ব্লেন্ড করে ফ্রিজের ডিপে তুলে রাখুন। আমি ইতিমধ্যেই করে রেখেছি।
২। ডালের বড়ার জন্য ডাল বেটে ডিপে রাখুন। প্রতিদিন ডাল বাটার ঝামেলা থেকে মুক্ত।
৩। রোজার আগের দিন ছোলা বেশি করে (আমি অন্তত সাত দিনের জন্য রাখি) সিদ্ধ করে প্লাস্টিকের ঢাকনা দেয়া বক্সে তুলে ফ্রিজে রাখুন, ডিপে না রাখলেও চলবে। ওগুলো শেষ হলে আবার বেশি করে একদিন সিদ্ধ করে রাখুন। তাহলে চটপট ছোলা তৈরি করা যাবে।
৪। আগেই কাঁচাবাজার করে ফেলুন এবং কাটা ধোয়া করে ফ্রিজে রাখুন তাহলে আর রোজা থেকে বাজার করা বা তা গোছানো নিয়ে ঝামেলা করতে হবে না।
৫। মাছ, মাংস তো বটেই শাক বাদে অন্যান্য সবজির গায়ে লেগে থাকা পানি ময়লা এগুলো পরিষ্কার করে মুছে রাখলে ১০- ১৫ দিন পর্যন্ত ভাল থাকে।
৬। চাইলে কিছু মাংস ভুনা করে ডিপে রাখতে পারেন, মাছও রাখা যায়। একদিন যতটুকু লাগে এই পরিমান নিয়ে একেকটা বক্সে রেখে দিলে মোটেই স্বাদ নষ্ট হয়না।
৭। খেজুর আগেই বিশুদ্ধ পানিতে ধুয়ে শুকিয়ে ফ্রিজে (ডিপে না) রেখে দিন এরপর ইফতারের প্লেট সাজানোর সময় সরাসরি দিতে পারবেন ধুতে হবে না।
৮। যারা নিজেরাই শিঙ্গাড়া, পুরি বানাতে পারেন, বেশি করে বানিয়ে সংরক্ষন করুন ফ্রিজে।
৯। চাদর, পর্দার মত ভারি কাপড় গুলো ধুয়ে ফেলুন।
এভাবে গুছিয়ে রাখলে কম পরিশ্রমে আর কম সময়ের মাঝেই কাজ শেষ করতে পারবেন বাইরের ভেজাল খাবার খেতে হবে না। যেটুকু সময় বেঁচে গেল সে সময় ব্যবহার করে নিজের ধর্ম নিয়ে পড়ালেখা করা যায়, কারন নিজে যদি জানেন আসলে আপনার ধর্ম আপনার কাছে কি চায় তাহলে কেউ আপনাকে অন্তত ধর্মের দোহাই দিয়ে প্রতারনা করতে পারবে না বা ধোকা দিতে পারবে না।
সবাইকে রমজানের অগ্রিম শুভেচ্ছা।
Subscribe to:
Posts (Atom)