Sunday, April 20, 2014

হার্টব্লিড বাগ নিয়ে একজন ননটেকির কিছু কথা

বাল্যকালে “ডাকঘর চাই” এই মর্মে একখান লেখা লিখে তা ছাপানোর জন্য বহুল আলোচিত দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক বরাবর আরেকখানা আবেদনপত্র লিখতে হতো। তবে বাস্তবে না, পরীক্ষার খাতায়। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে। ডাকঘর কেন চাই তার একটা অব্যর্থ যুক্তি হিসেবে দিতে হতো, “এলাকায় ডাকঘর না থাকাতে অনেক দূর থেকে পিয়ন চিঠি ও মানি অর্ডার নিয়ে আসে। অনেক সময় মানি অর্ডারের টাকা ‘পথিমধ্যে খোয়া যায়’।” পয়েন্ট টু বি নোটেড। এই অব্যর্থ বাক্যখানা লিখতে পারলে মনে হয় ডাকঘর স্থাপনের সম্ভাবনা বেড়ে যেত। যাই হোক, এখন ডিজিটাল যুগ। পথিমধ্যে মানি অর্ডারের টাকা খোয়া যাওয়ার সুযোগ নাই কিন্তু ইন্টারনেটের অবাধ তথ্য প্রবাহের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড নাম্বারের তথ্য খোয়া যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর এই সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছে হার্টব্লিড নামক এক বাগ। ব্যাপক হৈচৈ অবস্থা। হালকা টেকি লোকজন এইটা নিয়ে রসায় রসায় নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিয়ে ফেলছে। আমি টেকনিক্যাল লাইনের লোক না। প্রযুক্তি বুঝি কম। হার্টব্লিড সম্পর্কে বেশি কিছু জানি না তবে গুগলিং এর কল্যাণে যতটুকু জানলাম তা হলো এটা কোনো ভাইরাস না। কোনো দুষ্টু সফটওয়্যার এমপ্লয় করে তথ্য হাতিয়ে নেয়া বা সিস্টেম ধ্বংস করার কারবার এখানে নেই। ভূত সর্ষের মধ্যেই বসবাস করছেন।

heartbleed

ইন্টারনেটে আমরা বিভিন্ন সাইটে ঘুরে বেড়াই। কত জায়গায় লগইন করি, মেইল পাঠাই, অর্থ আদান-প্রদান করি। এখানে কিন্তু গোপনীয়তার প্রয়োজন রয়েছে। ইচ্ছা করলেই যেন আমি কোন ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করছি তা যেন সবাই দেখতে না পারে সেজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নিরাপত্তা বলয় থাকে। ৬৪ শতাংশ ওয়েবপেইজ তথ্যের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করে থাকে Open Security Sockets Layer বা OpenSSL সফটওয়্যার। এর কাজ হলো আমরা যখন কোনো তথ্য দিয়ে সার্ভারে হিট করি এবং বিনিময়ে আরেকটি তথ্য আমাদের কাছে আসে তখন পুরো প্রক্রিয়ায় তথ্য আদান-প্রদানকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া। অনেকটা মোর্স কোডের মতো। একটা শব্দ প্রথমে এনক্রিপ্ট করে পাঠানো হয়। গ্রাহকের কাছে গিয়ে তা ডিক্রিপ্টেড হয় তখন গ্রাহক তা পড়তে পারে। ইমেইল, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং (আইএম), ওয়েবপেইজে লগইন এ ধরণের সব কাজে আমরা ব্যক্তিগত বা গোপনীয় তথ্য আদানপ্রদান করে থাকি সিস্টেম বা অপর পাশে আরেকজনের সাথে। এখন এই তথ্য বাহিত হয় Transport Layer Security Protocol বা TLS এর মাধ্যমে। আর এই প্রোটোকলটি ব্যবহার করা হয় ওপেনসোর্স TLS সফটওয়্যার OpenSSL দিয়ে। ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া OpenSSL ভার্সন 1.0.1f এ একটি বাগ থাকে। জার্মান ডেভেলপার রবিন সেগেলম্যানের প্রোগ্রামিং এর ভুলের কারণে এই বাগের জন্ম হয়। সফটওয়্যারের নকশায় ভুল ছিল না। ভুলটি কোডিং করার সময় হয়। ধারণা করা হয়, হ্যাকাররা এই ভুলের সুযোগ নিয়ে অনেক তথ্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। গুগলের সফটওয়্যার নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা নিল মেহতা সম্প্রতি এ বাগ আবিষ্কার করেন। তখনই OpenSSL তাদের বাগ সারানোর কাজ শুরু করে। অবশেষে বাগমুক্ত করে গত ৭ এপ্রিল ভার্সন 1.0.1g ছাড়া হয়। বাগ ঠিক করেন অ্যাডাম ল্যাংলি এবং বোডো মোলার। বিভিন্ন ওয়েবপেইজ ও সিস্টেম সার্ভার সেবা প্রদানকারী সংস্থা তাদের নতুন ভার্সনে তাদের সিস্টেমকে উন্নীত করছেন। তবে হ্যাকাররা আগেই আপনার গোপনীয় তথ্য পেয়ে থাকতে পারে। সেজন্য অনলাইন ট্রানজেকশনে সকল ধরণের পাসওয়ার্ড এবং কি পরিবর্তন করে নেয়া উচিৎ। নয়তো আগে পেয়ে থাকা তথ্য ব্যবহার করে হ্যাকাররা ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে বা কোনো ওয়েবপেইজে ছদ্মবেশে আপনার হয়ে প্রবেশ করে আপনার ক্ষতি করতে পারে।

হার্টব্লিড বাগ সম্পর্কে আরো জানতে ঘুরে আসতে পারেন হার্টব্লিড.কম থেকে।

Sunday, April 6, 2014

কীভাবে অনলাইনে ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করবেন- ২য় পর্ব

ভিসার আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভারতে কারো রেফারেন্স দিতে হবে। ভ্রমণের উদ্দেশ্যে গেলে হোটেলে নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর প্রয়োজন হবে। একই সাথে বাংলাদেশেরও একজনের রেফারেন্স দিতে হবে। এরপর ৩য় পৃষ্ঠার কাজ শেষ করে নেক্সট দিলে আপনার দেয়া সকল তথ্য একটি পূরণকৃত ফরমে দেখাবে। একদম নিচে থাকবে দু’টি বোতাম, modify/edit এবং verified and continue। তথ্যগুলো দেখে সংশোধনের প্রয়োজন হলে modify বোতামে চেপে আবার সংশোধণের সুযোগ পাবেন আর সব ঠিক থাকলে verified and continue বোতামে চেপে পরের পৃষ্ঠায় যেতে হবে। এই পৃষ্ঠায় আপনি ভারতে গেলে যেখানে থাকবেন সেখানকার জায়গা/হোটেলের নাম, ঠিকানা, রাজ্যের নাম এবং জেলার নাম দিতে হবে। যেমন- আপনার হোটেল কোলকাতায় হলে হোটেলের নাম, ঠিকানা এবং রাজ্যের নাম হিসেবে West Bengal এবং জেলার নাম হিসেবে দিতে হবে Kolkata. শেষে দিতে হবে ফোন নাম্বার। কয়েকটি হোটেলের নাম, ঠিকানা দেয়ার অপশন থাকলেও একটির বেশি দেয়ার প্রয়োজন নেই। এরপর continue বোতামে চাপলে Date and Time Allotment to Applicant নামে একটি পাতা আসবে। সেখানে আপনার নাম এবং ওয়েব ফাইল নাম্বার বলে একটি নাম্বার দিবে। এই নাম্বারটা অবশ্যই লিখে রাখতে হবে। যদি আপনাকে সময় দেয়া হয় তাহলে পেইজের একদম নিচে ডানদিকে সময় ও তারিখ লেখা থাকবে আর যদি সময় না দেয়া হয় তাহলে লেখা থাকবে No appointment dates are available. এক্ষেত্রে লেখার প্রথমে দেয়া লিংকে গিয়ে পেইজের নিজের দিকের reprint registered application বোতামে ক্লিক করে প্রথমে ক্যাপচা পূরণ করতে হবে। এরপর সাবমিট বোতামে ক্লিক করে পরের পাতায় গিয়ে যে ভারতীয় মিশনে আপনি আবেদন করছেন সেটি নির্বাচন করে, ওয়েব ফাইল নাম্বার, জন্ম তারিখ, পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে আরেকটি ক্যাপচা পূরণ করে reprint বোতামে ক্লিক করলে একটি পিডিএফ ফাইল খুলবে যার ডানদিকে আপনার সাক্ষাতকারের সময় লেখা থাকবে। ফাইলটি কম্পিউটারে সেইভ করে রাখবেন। আর যদি তারিখ না থাকে তাহলে বুঝতে হবে সাক্ষাতকারের জন্য কোনো সময় খালি নেই।

10154333_10203387860994239_760129560_n

সময় খালি পাবেন সে আশা করাও ঠিক নয়। কারণ ওদের সার্ভারে সময় খালি না থাকার বলার জন্যই কমান্ড দেয়া থাকে। দিনের অজানা কোনো সময় অল্প কয়েক মিনিটের জন্য সার্ভার খোলা রাখে যখন আবেদন করলে সময় পাওয়া যায়। কিন্তু এ তথ্য কেউ জানে না। এ কারণে কিছু দালাল রয়েছে যাদের কাজই হলো অর্থের বিনিময়ে আপনাকে ভিসার জন্য ভারতীয় দূতাবাসে সাক্ষাতকারের জন্য আপনাকে তারিখ পাইয়ে দিবে। সেক্ষেত্রে উপরের প্রক্রিয়ায় পুরো আবেদনপত্র পূরণ করে তারিখ না পেলে দালালকে আপনার পাসপোর্ট নাম্বার, জন্ম তারিখ, ওয়েব ফাইল নাম্বার দিয়ে দিলে তারা সারাদিন ধরে চেষ্টা করে তারিখ পাইয়ে দেয়। সেজন্য তারা ৩০০ থেকে শুরু করে ১০০০ বা ১৫০০ টাকা নিয়ে থাকে। অনেকজনের ভিসার কাজ দিলে তারা টাকা কম নেয়। সাধারণত ৭০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যেই নেয় মাথাপিছু। আর নিজে যদি আপনি তারিখ ও সময় পেয়ে যান তাহলে তো কেল্লা ফতে। তারিখ পাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে আপনাকে দূতাবাসে যে সকল কাগজপত্রের ফটোকপি ও আসল কপি নিয়ে যেতে হবে তা হলো-
১। সাক্ষাতকারের তারিখ লেখা পিডিএফ ফাইলটির প্রিন্ট করা কপি
২। পাসপোর্ট
৩। ইউটিলিটি বিল
৪। জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্মনিবন্ধন সনদ
৫। ২”/ ২” সিল-ছাপ্পড়, স্বাক্ষর না করা সদ্য তোলা রঙিন ছবি ৪ টি
৬। অফিস/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া পরিচয়পত্র
৭। প্রতিষ্ঠান থেকে দলগত ভ্রমণ বা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গমন হলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত প্রয়োজনীয় সুপারিশের কাগজ

ভিসা প্রক্রিয়ার খরচ ৪০০ টাকা। আর ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ভারতে যেতে চাইলে নূন্যতম ১৫০ ডলার পাসপোর্টে এনডোর্স করিয়ে নিতে হবে। অনেক সময় তারা বিগত ৩ বা ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্টও চেয়ে থাকে।

Saturday, April 5, 2014

কীভাবে অনলাইনে ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করবেন- ১ম পর্ব

বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের ভারত যেতে হতে পারে। চিকিৎসা, ভ্রমণ হলো সাধারণ কিছু কারণ। আর অনেকের তো বিয়ের কেনাকাটা কোলকাতা থেকে করতে না পারলে জীবনই বৃথা। এছাড়া অনেকের আত্মীয়-স্বজন আছে সে দেশে। আমাদের দেশের তিনদিকে ভারত হওয়ায় স্থলপথে নেপাল কিংবা ভুটান যেতে হলেও ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হয়। যেকোনো দেশের ভিসা পাওয়ার চেয়ে এখন ভারতের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অন্যতম কারণ প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ভারতে যাওয়ার জন্য আবেদন করে থাকেন। এক সময় ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল নিতে হতো। এখন অনলাইনে আবেদন করে সাক্ষাতের তারিখ নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিয়ে ভারতের হাইকমিশনে হাজির হতে হয়। আজকে আলোচনা করবো কীভাবে অনলাইনে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় তা নিয়ে।

প্রথমেই http://indianvisaonline.gov.in/visa/ এই পেইজে গিয়ে Online Visa Application Registration বাটনে ক্লিক করলেই ফরম চলে আসবে। ফরমের উপরের দিকে Temporary Application ID বলে একটা নাম্বার দেয়া থাকবে। ফরম পূরণের আগেই নাম্বারটি লিখে রাখুন। কেননা ফরমের কিছু অংশ পূরণ করে পরে বাকিটা পূরণ করতে চাইলে ঐ আইডি ব্যবহার করে যতটুকু আগেই করে রেখেছেন তার পর থেকে বাকিটা পূরণ করা যাবে।  বিভিন্ন ঘর পূরণ করতে গিয়ে আমাদেরকে বেশকিছু সংশয়ের মধ্যে পড়তে হয়। সেজন্য খুব মনোযোগ দিয়ে ফরম পূরণ করা জরুরি। প্রথম পৃষ্ঠার সবগুলো আবশ্যিক ঘর পূরণ না করে আপনি পরবর্তী পৃষ্ঠায় যেতে পারবেন না। একদম প্রথম ঘরে আপনি বাংলাদেশে ভারতের কোন মিশন অফিসে থেকে আবেদন করছেন তা নির্বাচন করবেন। ওখানে অপশনের মধ্যে ঢাকা, চিটাগাং এবং রাজশাহী রয়েছে। আপনি আপনার নিকটস্থ মিশন নির্বাচন করবেন। এরপর আপনার নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান (জেলার নাম) এগুলো পূরণ করে citizenship/national id নম্বরের ঘরে যাবেন। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অথবা জন্মনিবন্ধন সনদের Personal Identification Number টি দিবেন। অর্থাৎ, পাসপোর্টে ব্যক্তিগত নম্বরের ঘরে যে সংখ্যাটি থাকে সেটিই দিতে হবে। কেননা পাসপোর্টের ঐ সংখ্যাটি আসলে আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আর তা না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ থেকেই নেয়া হয়। Visible Identification Mark এর ঘরে আপনাকে দেখেই খুঁজে পাওয়া যায় এমন কোনো চিহ্নের উল্লেখ করবেন যেমন- মুখের কোনো কাটা দাগ, তিল, জন্মদাগ বা হাত কিংবা পায়ের নিচের দিকের কোনো দাগ যা সহজেই দেখা যায়। এরপর আপনাকে পাসপোর্টে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এখানে মনে রাখতে হবে, আপনার পাসপোর্ট যদি মেশিন রিডেবল হয়, তাহলে আপনি বাংলাদেশের যে অঞ্চল থেকেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন না কেন Place of Issue হবে ঢাকা।

Online_Indian_Visa_Form_-_2014-04-05_16.03.4822222

প্রথম পৃষ্ঠা পূরণ শেষে একটি ক্যাপচা পূরণ করে ২য় পৃষ্ঠায় যেতে হবে। সেখানে রয়েছে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা লেখার ঘর। বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা এক হলে বর্তমান ঠিকানা লিখে একটা জায়গায় রয়েছে টিক চিহ্ন দেয়ার সেখানে ক্লিক করলেই স্থায়ী ঠিকানার ঘর স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। এরপর আপনার মা-বাবার নাম ও বিস্তারিত লেখার ঘর আসবে। তারপর একটা অপশনে রয়েছে যে আপনার নানা-নানী, দাদা-দাদী কি পাকিস্তান বা পাকিস্তানের দখলকৃত অঞ্চলের নাগরিক বা সেখানে বাস করতেন কিনা। এখানে No দেয়াই শ্রেয়। এখানে পাকিস্তান বলতে পাকিস্তানই বোঝানো হয়েছে। ৭১ এর আগের পূর্ব পাকিস্তানকে নির্দেশ করা হয় নি। মা-বাবার জন্মস্থান বলতে জন্মের জেলাকে বোঝানো হয়েছে। Occupation Detail of Applicant অংশে আপনার পেশার বিস্তারিত দিতে হবে। তবে আপনি ছাত্র হলে যখন Student নির্বাচন করবেন তখন আরেকটি অপশন আসবে আপনার বাবা অথবা স্বামী/স্ত্রী’র পেশার বিস্তারিত দেয়ার জন্য বলা হবে। বাবা মৃত হলে এবং আপনি অবিবাহিত হলে বাবার শেষ পেশা, চাকরি/ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা দিতে হবে। আর Designation অংশে Retired লিখে এরপর পদের নাম লিখতে হবে। বাবা অবসরে থাকলেও একই কথা প্রযোজ্য। তৃতীয় পৃষ্ঠায় আপনার ভিসার ধরণ, ভিসার মেয়াদ, ভ্রমণের উদ্দেশ্য সংক্রান্ত অপশন নির্বাচন করতে হবে। কোন পথে ভারতে প্রবেশ করবেন এবং কোন পথে বের হবেন তাও আপনাকে নির্বাচন করে দিতে হবে। আকাশপথ হলে by air দিতে হবে। যেমন- বেনাপোল দিয়ে যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে বের হন তাহলে port of entry দিতে হবে By road Haridaspur. ওদিক দিয়ে বের হলেও একই। আর বুড়িমারী দিয়ে বাংলাদেশ দিয়ে বের হলে দিতে হবে by road Changrabandha.     (চলবে)

Tuesday, April 1, 2014

কীভাবে করাবেন নাগরিকত্বের সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র

বিভিন্ন প্রয়োজনের আমাদের লাগতে পারে নাগরিকত্বের সনদপত্র। সিটি করপোরেশন এলাকায় নাগরিকত্বের সনদপত্র দিয়ে থাকেন ওয়ার্ড কমিশনার। অনেক কাজে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদের সাথে নাগরিকত্বের সনদপত্রও প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ সনদ লাগতে পারে। কেননা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকে না। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বর্তমানে নির্বাচিত মেয়র ও ওয়ার্ড কমিশনাররা না থাকায় এ সনদ বর্তমানে ওয়ার্ড সচিবের সুপারিশক্রমে প্রদান করেন সিটি করপোরেশনের সহকারী সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা। এ সনদ কীভাবে করাবেন তা নিয়ে আজকের আলোচনা।

এক কপি পাসপোর্টের সাইজের ছবি, নিজেদের বাসা হলে হোল্ডিং ট্যাক্সের ফটোকপি, ভাড়া বাসা হলে ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি, জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে তার ফটোকপি নিয়ে চলে যান স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের কার্যালয়ের। সেখানে গিয়ে নাগরিকত্বের সনদের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদনপত্র পূরণ করে সঙ্গে নেয়া অন্যান্য নথি ও ছবির সাথে জমা দিন। সিটি করপোরেশনে যাতায়াতের জন্য কিছু টাকাপয়সা দিতে হবে তাদের হাতে। সাধারণত দুই কর্মদিবসের মধ্যে তারা নগরভবন থেকে স্বাক্ষর করিয়ে এনে আপনার হাতে তুলে দেবে নাগরিকত্বের সনদ। সনদ গ্রহণের সময়  আরো কিছু টাকা চাইবে তারা। পুরো প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ২০০ টাকা খরচ হতে পারে। কোনো সরকারি ফি নেই এ কাজের জন্য।

ec-logo-new-SM20131029081854

এবার আসি জাতীয় পরিচয়পত্র প্রসঙ্গে। বয়স ১৮ বছর বা তার উর্ধ্বে হলেই কেবলমাত্র আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র করাতে পারবেন। মূলত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে ভোটার আইডি ও ন্যাশনাল আইডি করার হিড়িক পড়ে। তখন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্যাম্প করে করে এ সেবাগুলো প্রদান করে থাকেন। কিন্তু আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যাদের বয়স বেশ আগেই ১৮ বছর হয়ে গেলেও বিবিধ কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র করান নি এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হন নি। এর অন্যতম কারণ হিসেবে নির্বাচন কমিশন বলে থাকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কথা। অর্থাৎ, নির্বাচনের আগে আগে দেশের বাইরে থাকায় অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র করাতে পারেন নি। অনেকে আবার দেশে থেকেও কাজটি করাতে পারেন নি। যেমন- আমি। বাসায় ভোটার নিবন্ধন কর্মী আসে নি। আমিও গাফিলতি করে স্থানীয় বিদ্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধন ফরম পূরণ করি নি। এখন এ অবস্থায় জাতীয় পরিচয়পত্র করতে হলে প্রথমেই জেলা নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। ঢাকা মহানগরীর স্থানীয় নির্বাচন অফিস হলো ৬৭, পশ্চিম আগারগাঁওয়ে। আবারো বলছি, এ কাজের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে যেতে হবে না, যেতে হবে জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে। ওখানে গেলে ওরা প্রথমেই জানতে চাইবে কেন আপনি নির্বাচনের আগে ভোটার হন নি। তখন আপনি কারণ জানাবেন যে দেশের বাইরে ছিলেন বা বাসায় ভোটার নিবন্ধন কর্মী আসেন নি এরকম। অতঃপর তারা আপনাকে ফরম-২ দিবে। আরেকটি ফরম (ফরম-১১) নিতে হবে সামনের ফটোকপির দোকান থেকে ৪-৫ টাকা দিয়ে। পূরণকৃত ফরমের সাথে কি কি কাগজের ফটোকপি লাগবে তাও তারা একটি কাগজে লিখে দেবে। সুবিধার্থে আমি বলে দিই এখানে।

১। পাসপোর্টের ফটোকপি

২। জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি

৩। সিটি করপোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্বের সনদপত্রের ফটোকপি

৪। হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদের (নিজেদের বাসা হলে) ফটোকপি
৫। বিদ্যুৎ/পানি/গ্যাস বিলের ফটোকপি

৬। এসএসসি সনদের ফটোকপি

৭। সনাক্তকারীর (মা/বাব/স্বামী/স্ত্রী) জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি

প্রতিটি কপি অবশ্যই প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তাকে দিয়ে সত্যায়িত করাতে হবে।

এসব কাগজপত্র প্রথমবার যাওয়ার সময়েই নিয়ে যেতে পারেন। তাহলে অফিসে বসেই ফরমগুলো পূরণ করে জমা দিয়ে আসতে পারবেন। তবে কাগজগুলো তারা ঐদিন জমা নাও নিতে পারে। ৭ দিন পরে ছবি তোলার একটি তারিখ দেবে। ঐ দিন এসব কাগজ নিয়ে আপনাকে হাজির হতে হবে অফিসে। তারা কাগজপত্র জমা নিয়ে আপনার ছবি তুলে একটি ডেলিভারি স্লিপ ধরিয়ে দেবে আপনাকে। এর এক মাস পরে নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয় অর্থাৎ আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের ৭ম তলায় গিয়ে স্লিপ দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে। উল্লেখ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র করাতে কোনো টাকা-পয়সা দিতে হয় না। জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সারা বছর কার্যকর থাকে না। বিভিন্ন কাজে তারা অফিস বন্ধ করে অন্যান্য জেলা-উপজেলায় চলে যায়। তাই সেখানে গিয়ে কয়েকবার খোঁজ-খবর নিতে হতে পারে।

সকল ফরম ডাউনলোডের লিংক

ছবি:বাংলানিউজ২৪