Sunday, December 30, 2012
ওয়াটার ফলস এর ছোট গল্প [এক]
গত তিন দিন আকাশের অবিরাম ক্রন্দন দেখে কে বলবে এখন অক্টোবরের পোস্ট মনসুন পিরিয়ড চলছে? ৭২ ঘন্টা ধরে ভানলাল দা'র জুমে আমরা দু'জন আঁটকা পরে আছি। প্রতিদিনই ভাবি আজকে হয়ত মেঘ কেঁটে যাবে আর আমরা নীচে নেমে প্রয়োজনীয় ডাটা গুলো কালেক্ট করতে পারব। কিন্তু প্রকৃতি আমাদের এই ইচ্ছার সাথে তিন দিন ধরে একমত হতে পারছে না। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শুধু খাই দাই ঘুমাই। প্রতিদিন পালা করে একজন ৩০০মিটার নিচে নেমে ঝিঁড়ি থেকে খাবার পানি নিয়ে আসি। সারভাইভাল টেকনিকে দিয়াশলাই/লাইটার ছাড়া সারাদিন ধরে আগুন জ্বালানো প্র্যাকটিস করি। কষ্ট সবচেয়ে বেশী হয় রাতের বেলা। ঝুম বৃষ্টির মধ্যেই বাধ্য হয়ে সারা শরীরে পলিথিন পেঁচিয়ে মাচায় কোন রকমে রাত কাটাতে হচ্ছে। জুম ঘর ভর্তি নতুন কাঁটা ধান। ধানের সাথে সাথে হাজার রকমের পোকা ফ্রী। পোকার কামড়ে অতিষ্ঠ হওয়ার চাইতে বৃষ্টির ছাঁট গায়ে লাগানো আমাদের জন্য বেশী আরামদায়ক ছিল।
আজকে সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেছে। রাতের ঘন কালো মেঘ গুলো এখন থোকা থোকা হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা তাড়াতাড়ি মাম এর ৫ লিটার এর বোতল, কম্পাস, স্টপ ওয়াচ,রশি, জিপিএস আর হাবিজাবি নিয়ে নীচে নামা শুরু করলাম। আজকে যেভাবেই হোক ডাটা সংগ্রহ করতেই হবে। বাংলাদেশের ওয়াটার ফল গুলোকে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত করতে ডি-ওয়ে এক্সপেডিটর্স এর "হান্ট ওয়াটার ফল" নামে একটা প্রজেক্ট আছে। বিভিন্ন ঋতুতে ওয়াটার ফল গুলোর ফ্লো, এক্টিভ সোর্স, চারপাশের ভূ-প্রাকৃতিক গঠন ইত্যাদি হাবিজাবি ডাটা সংগ্রহ করতে হান্ট ওয়াটার ফল প্রজেক্টের এক্সটেন্ডেড এক্সপিডিশনে বাকলাই এসেছি আমি আর মাইনুল ভাই। জুমের রাস্তা দিয়ে নামতে নামতে এক সময় রাস্তা শেষ হয়ে গেল। এরপর ঝুড়া মাটির লম্বা একটা ঢাল শুরু হয়ে গেছে। কয়েকদিনের ঝুম বৃষ্টিতে সব কাঁদা হয়ে আছে। সাবধানে নামা শুরু করতেই দেখি মাটি ধসে যাচ্ছে। মাইনুল ভাই ব্যাগ থেকে ১০০ফিট রশি বের করে গাছের সাথে বেঁধে দিল। এত ভারি একটা রশি ক্যারি করতে দেখে মনে মনে আবারও স্বীকার করলাম-মাইনুল ভাই আসলে মানুষ না। আস্ত একটা অমানুষ!
রশি ধরে রেপেলিং করে একজন একজন করে নিচে নামা শুরু করলাম। ১০০ফিট শেষ হতেই দেখি বাকলাই ফলস এর স্ট্রীম আরও প্রায় ৫-৭ফিট নীচে। এখানে পাহাড়ে ধসে পুরা নম্বর ডিগ্রি হয়ে আছে। পাথরে বাড়ি খাইলে খাইলাম, যা আছে কপালে চিন্তা করে ঝিড়ির উপর দিলাম লাফ। মাইনুল ভাই নামতেই আমরা ঝিড়ি ধরে উপর দিকে এগুতে লাগলাম। ১০ মিনিট ও গেল না, কোথা থেকে যেন এক ঝাঁক কালো মেঘ পুরো আকাশ ঢেকে ফেলল। শুরু হল অঝোরে বৃষ্টি। ধীরে ধীরে ঝিঁড়ির পানি বাড়তে লাগল। শান্ত হয়ে বয়ে চলা প্রসবন এখন উত্তাল হয়ে চাপা গর্জন শুরু করল। মাইনুল ভাই এর অভিজ্ঞ চোখে মুহুর্তেই অবস্থার ভয়াবহতা ধরা পরল। "তাড়াতাড়ি উপরে উঠ। যে কোন সময় ঢল নামতে পারে। একটা ধাক্কা খাইলে আর তাল রাখা যাবে না". দু'জন আবার দৌড়ে উপরে উঠা শুরু করলাম। রশি ধরে এইবার জুমারিং করার সময় কাঁডায় পা দেবে যাচ্ছে। হাঁটু পর্যন্ত কাঁদা থেকে পা টেনে টেনে উপরে উঠতে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো আমার। কুকুরের মত হাঁফাতে হাঁফাতে দু'জন যখন মাঁচায় ফিরে আসতেই ভোজবাজীর মত বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল। রাগ, কষ্ট, দুঃখ আর হতাশা নিয়ে বাক্লাই এর দিকে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে গেলাম। বিস্ময়ে বিমূঢ হওয়া যাকে বলে। বাকলাই এর এই রকম পাগলা ভয়ানক চেহারা দেখব আশা করি নাই কখনো। আর তার গর্জন এর কথা আর নাই বা বলি। আমার লেখা বা ছবি কোন টাই সেই হুংকার কে রিপ্রেজেন্ট করতে পারবে না।
এক্সপিডিসনঃ সর্বোচ্চ ঝর্নার খোঁজে [২০১০]
বাকলাই ফলস
বাকলাই, বান্দরবান।
Wednesday, December 26, 2012
ট্রেকিং এর হাবিজাবিঃ গিয়ার্স [এক]
আমরা যখনই ট্রেকিং বা ক্যাম্পিং ট্রিপ এর জন্য কোন প্ল্যান করি তখন একটা প্রশ্নই খুব জ্বালাতন করে। কি নিব আর কি নিব না? ভাবতে ভাবতে সময় চলে যায় আর প্যাকিং এর সময় তাড়াহুড়া করায় দেখা যায় প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই নিয়ে আসতে ভুলে গেছি বা এত বেশী জিনিস নিয়ে আসায় হাঁটাতেই জান বেরিয়ে যাচ্ছে। তাই প্ল্যানিং এর সময় ট্রেকিং-ক্যাম্পিং গিয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। বিভিন্ন ট্রেইল, আবহাওয়া, জিওগ্রাফির জন্য বিভিন্ন ধরনের গিয়ার দরকার হয়। এক জায়গার জন্য যা অপরিহার্য আরেক জায়গায় সেটাই হয়ে যায় মাথার বোঝা। যেমনঃ হিমালয়ে গেলে আপনাকে ডাউন জ্যাকেট নিতেই হবে, কিন্তু লাউয়াছড়ায় ডাউন নিয়ে যাওয়া টা হবে বোকামী। তাই গিয়ার গুলো খুব চিন্তা আর সাবধানতার সাথে প্যাকিং করতে হয়।আগেই বলেছি গিয়ার এর সেট আপ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তার পরেও সব জায়গার জন্য একটা বেসিক গিয়ার সেট থাকেই।
নেভিগেশনের জন্য ম্যাপ, জিপিএস, থাকার শেল্টার (তাঁবু/টার্প/হ্যামক), আরামদায়ক জামা-কাপড়, শান্তিমত ঘুমের জন্য স্লিপিং গিয়ার, মেডিকেশন, টয়লেট্রিজ, রান্নার জন্য কুকিং সেট, সারভাইভাল কিট আর এই সব কিছু আরামসে ক্যারি করার জন্য একটা ভালো মানের ব্যাকপ্যাক।
যত কম ততই বেশী
“He who would travel happily must travel light”- Antoine de Saint-Exupery
ট্রেকিং শুরু করার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে একটা হালকা ব্যাকপ্যাক। ব্যাকপ্যাক যত হালকা হবে ট্রেকিং জন্য এনার্জী ততই কম দরকার হবে। সেই কম এনার্জীর ঘাটতি মেটাতে তাই আমাদের খাবার ও কম লাগবে। এর মানে হচ্ছে আরও হালকা ব্যাকপ্যাক। হালকা ওজনের ব্যাকপ্যাক ক্যারি করলে শরীরের উপর চাপ ও খুব কম পরে আর মানসিক ভাবে চাঙা থাকা যায়- ট্রেকিং এ যা খুবই প্রয়োজনীয়।
শেল্টারঃ
কোন ট্রেকিং ট্রিপ প্ল্যান করার সময় সব চেয়ে প্রথমে যেই জিনিস টা গুরুত্বপূর্ন তা হল একটি আরামদায়ক শেল্টার বা থাকার জায়গা নিশ্চিত করা। শেল্টার আসলে ডিপেন্ড করে কোন জায়গায় ট্রেকিং এ যাচ্ছি তার উপর। সেখানের আবহাওয়া কেমন, কতটুকু আরাম দরকার আর টেরেইন টা কেমন এই সব এর উপর ভিত্তি করেই আমাদের প্ল্যান টা করতে হয়। কিছু কিছু জায়গায় আমরা ট্রেকার্স হাট বা স্থানীয়দের বাসায় থেকে এই শেল্টার এর বাড়তি ওজনের ঝামেলা এড়িয়ে যেতে পারি। আবার কিছু জায়গায় ইমার্জেন্সি ক্যাম্প করা লাগতে পারে। খোলা ট্রেকিং এর সময় খোলা আকাশের নীচে ঘুমানো কখনোই কোন অপশন হতে পারে না।
ট্রেকিং এ গেলে আমরা মোটামোটি তিন ধরনের শেল্টার এর কথা চিন্তা করে প্ল্যান করতে পারিঃ
ক. তাঁবু
খ. টার্প
গ. হ্যামক
টেন্টঃ
পোকা-মাঁকড় এর কাঁমড়, মশা-মাছির উৎপাত, বন্য জীব-জন্তু, বৃষ্টি-বাদল এর দিনে আরামদায়ক আর নিরাপদে ঘুমানোর জন্য একটা তাঁবু খুবই প্রয়োজনীয়। আজকাল আমাদের দেশেই বিভিন্ন ধরনের তাঁবু পাওয়া যাচ্ছে। ট্রেকিং ও ক্যাম্পিং এর জনপ্রিয়তার সাথে সাথে আমাদের অপশন ও বাড়ছে। টেন্ট এর দাম যেহেতু একটু বেশী তাই ওয়ান টাইম ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে টেন্ট কেনার সময় আমাদের বেসিক কিছু জিনিস এর দিকে লক্ষ্য রাখতেই হবে।
জায়গাঃ
টেন্ট এর সাইজ খুবই গুরুত্বপূর্ন। টেন্ট এর ভিতরে আপনাকে আরাম করে ঘুমানোর সাথে সাথে আপনার ব্যাকপ্যাক ও অন্যান্য গিয়ার গুলো নিরাপদে রাখতে হবে। তাই টেন্ট কেনার আগেই প্ল্যান করুন, আপনি কিভাবে টেন্ট ব্যবহার করবেন। একাই ঘুরে বেড়াবেন নাকি গ্রুপ এ ঘুরবেন? সেটার উপর ডিপেন্ড করে আপনি সিঙ্গেল টেন্ট কিনবেন না কি টু-পারসন টেন্ট নাকি ফোর-পারসন টেন্ট। টেন্ট এর ভিতর আপনি যেন আরামে বসতে পারেন, ছাদের যেন আপনার মাথা লেগে না যায়। আবার, খেয়াল রাখবেন টেন্ট টা যেন এতই ছোট না হয় যাতে ঘুমের সময় একটু কাঁত হলেই কনডেনসেশনের জন্য ঘেমে থাকা দেয়ালে আপনার শরীর লেগে ভিজে না যায়। কিছু কিছু টেন্ট এ আলাদা বারান্দা বা করিডোর এর ব্যবস্থা থাকে, যেন ঐ জায়গায় ব্যাকপ্যাক ও অন্যান্য জিনিস পত্র রাখা যায়।
ওজনঃ
টেন্ট এর ওজন খুবই গুরুত্বপূর্ন। টেন্ট যতই হালকা হবে তার দাম ও তত বেশী হবে। আবার হালকা হলেই যে টেন্ট ভাল মানের হবে সেটা মনে করার কোন কারন ই নাই। টেন্ট এর ম্যাটেরিয়াল, পোল, ভেন্টিলেশন, ফ্লোর, পেগ, ফ্লাই বা কভার শীট এর উপর নির্ভর করে টেন্ট এর ওজন। সব দিক বিবেচনা করে মান আর দামের মধ্যে সমন্বয় করে আমাদের টেন্ট কেনা উচিৎ। আমাদের দেশে এখন যে সব টেন্ট পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর ওজন সাধারনত এক থেকে পাঁচ কেজির মত হয়।
এই ক্ষেত্রে আমার সাজেশন হল, দুইজন মিলে একটি টু-পারসন টেন্ট কিনে নেওয়া। তাহলে ট্রেকিং এর সময় একজন টেন্ট ক্যারি করলে ট্রিপের অন্যান্য গিয়ার গুলো অন্যজন ক্যারি করতে পারে। এভাবে একদিকে যেমন একটা ভাল মানের টেন্ট কিনতে একজনের অর্ধেক টাকা লাগছে অন্যদিকে ট্রেকিং এর সময় ওয়েট ডিসট্রিবিউশন ও ভালভাবে হচ্ছে।
সিজনঃ
কোম্পানী গুলো বিভিন্ন সিজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের টেন্ট তৈরী করে। লো-অলটিটিউড এর জন্য যেই টেন্ট ব্যবহার করা যায় সেটা আপনি হাই-অল্টিটিউডে ব্যবহার করতে পারবেন না। বৃষ্টির দিনে যেটা ব্যবহার করা যায় সেটা আপনি হিমালয়ের বরফে ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার গরমের দিনে দরকার হয় ভালো ভেন্টিলেশন এর ব্যবস্থা থাকা টেন্ট। আবার সব ঋতুতে ব্যবহার করা যায় এমন ফোর-সিজন টেন্ট ও পাওয়া যায়। সারা বছর ধরে সব কয়টি ঋতুতে সব ধরনের আবহাওয়ায় যে টেন্ট ব্যবহার করা যায় স্বাভাবিক ভাবেই সেই টেন্ট এর দাম খুব বেশী হয়। তাই টেন্ট কেনার আগে কোন ধরনের টেন্ট আপনার দরকার সেটা আগেই চিন্তা করে ঠিক করে রাখুন।
সেট আপঃ
টেন্ট এর মডেলের উপর ডিপেন্ড করে টেন্ট এর সেট আপ কেমন হবে। কিছু কিছু টেন্ট সেট আপ করা খুবই সহজ আবার কিছু কিছু খুবই জটিল আর সময় সাপেক্ষ। কিছু টেন্ট পিচ করতে একজনই যথেষ্ট আবার দুই তিন জন মিলেও একটা টেন্ট পিচ করা অনেক কষ্টকর লাগে। এমন টেন্ট কেনা উচিৎ যেটা খুব সহজে আর কম সময়ের মধ্যে পিচ করা যায়।
কনডেন্সেসন বা বডি ঘেমে যাওয়াঃ
ফিজিক্স ১০১- ঠান্ডা কোকের গ্লাসের বডি যে কারনে ঘেমে যায় ঠিক একই কারন অর্থাৎ ভিতরে আর বাহিরের তাপমাত্রার বিভিন্নতার কারনে টেন্টের ভিতরের বডিও ঘেমে যায়।
সাধারনত টেন্ট এর দু’টা লেয়ার থাকে। উপরের লেয়ার বা ফ্লাই কভার এর ফেব্রিক বা কাপড় ওয়াটার প্রুফ হয় আর ভিতরের লেয়ার টা ওয়াটার প্রুফ হয় না। কনডেনসেশন কম হওয়ার জন্যেই ভিতরের লেয়ার টা ওয়াটার প্রুফ করা হয় না। এই কারনে টেন্ট এর ভিতর আমাদের শরীর থেকে যেই বাষ্প তৈরী হয় সেটা ভিতরের স্তর ভেদ করে বাইরে চলে যায় আর বাইরের স্তরের নীচের দিকে ঘেমে টেন্টের নীচ দিয়ে বাইরে চলে যায়। সব টেন্ট এর ভিতরের বডি কিছু টা হলেও ঘামবে। তবে ভাল টেন্ট গুলোতে এই কন্ডেন্সেসন টা খুব কম হয়। যেই টেন্ট এর ভেন্টিলেসন ভাল সেই টেন্ট ই কেনা উচিৎ।
আজকাল উন্নতমানের ফ্যাব্রিক(গোর-টেক্স) দিয়ে এক লেয়ার এর টেন্ট ও তৈরী হচ্ছে। এগুলো অনেক হাল্কা আর দাম ও সেই সাথে অকল্পনীয় রকমের বেশী হয়।
গরম এর দিনে ট্রেকিং এর জন্য টেন্টের ভেন্টিলেশন খুব ভাল না হলে আরামদায়ক ক্যাম্পিং এর চিন্তা করা ও কষ্টকর। বাতাস যেন ভালভাবে টেন্টের ভিতর প্রবেশ করতে পারে তেমন টেন্ট দেখে নেয়া উচিৎ।
পোলঃ
পোল গুলো সাধারনত স্টীল, এলুমিনাম বা ফাইবার গ্লাসের তৈরী হয়। ছোট ছোট টুকরো গুলো ইলাস্টিক কর্ড দিয়ে একটার সাথে আরেকটা লাগানো থাকে। ফাইবার গ্লাস এর পোল গুলো থেকে এলয় এর তৈরী পোল গুলো বেশী শক্তিশালী ও ফ্লেক্সিবল হয়। ফাইবার গ্লাস এর পোল গুলো এক্সট্রিম কন্ডিশনে ভেঙে যেতে পারে। ইলাস্টিক কর্ডিং পোল গুলোর আরেক টা সুবিধা হচ্ছে এগুলা অনেক বেশী প্রেসার নিতে পারে। আর টেন্ট খোলার সময় মাঝখান থেকে পোল গুলো আলাদা করে প্রেসার কমিয়ে ফেলা যায়। এভাবে পোল ভাঙার সম্ভাবনাও কমে যায়।
পেগঃ
হালকা টেন্ট গুলো জায়গামত ফিক্স রাখতে পেগ দিয়ে চারদিকে গেঁথে দিতে হয়। প্রচন্ড বাতাসে টেন্ট ঠিক রাখতে এর কোন বিকল্প নাই। কিছু কিছু টেন্ট এর উপরের কভার টাও চারদিক থেকে টানা দেয়ার জন্য পেগ লাগে। টেন্ট গুছানোর সময় গুনে গুনে পেগ গুলো রাখা উচিৎ, অনেক ছোট হওয়ার কারনে পেগ হারানোর হার সবচেয়ে বেশী।
আমাদের দেশে আজকাল তিন ধরনের টেন্ট পাওয়া যাচ্ছেঃ
ক. রীজ টেন্টঃ
এগুলো অর্থডক্স A-ফ্রেম টেন্ট। স্কাউটিং এর জন্য এই টেন্ট গুলো বেশী ব্যবহার করা হয়। এগুলো অনেক স্টেবল হলেও সেট আপ করা অনেকটাই ঝামেলা মনে হয় আমার কাছে। এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে এর ওজন। এগুলো অনেক বেশী ভারী হয়। আর চারদিকে স্ট্যাকিং অনেকই বেশী। টানা দিতে দিতেই সময় গুলো চলে যায়। ভিতরের জায়গা ও তুলনা মূলক ভাবে কম থাকে।
খ. ডোম টেন্টঃ
ওজনে হালকা, সেট আপ করা অনেক ইজি, আর ব্যাকপ্যাকে ক্যারি করা অনেক সুবিধা জনক বলেই আজকাল এই টেন্ট গুলো বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সাধারনত দুটা পোল সেট করে একজনই টেন্ট পিচ করতে পারে। ভিতরে জায়গাও অনেক বেশী থাকে। কিছু কিছু মডেলে আলাদা বারান্দা বা কম্পার্টমেন্ট ও থেকে। এরো ডাইনামিক শেইপের কারনে মাউন্টেনিয়ারিং এর জন্য তাই এই ধরনের বেশী উপযোগী। তবে একটা ভালমানের ডোম টেন্ট এর দাম ও অনেক বেশী হয়।
গ. টানেল শেইপড পপ-আপ টেন্টঃ
চোখের নিমিষেই এই টেন্ট পিচ করা হয়ে যায়। ফ্লেক্সিবল পোল কয়েল করা থাকে। ব্যাগ থেকে খুলে জায়গা মত বসিয়ে দিলেই হল- প্যাঁচানো কয়েল গুলো খুলে টেন্ট আপনা আপনি টানেল শেইপ নিয়ে নেয়। কিন্তু ট্রেকিং এর জন্য এই ধরনের মডেল খুবই অসুবিধা জনক। গোল রাউন্ড শেইপের বেশ বড় একটা কয়েল ক্যারি করতে হয়। ভিতরে জায়গা ও অনেক কম থাকে। মাঝার সাইজের একজন বসলেই ছাদে মাথা লেগে যায়। তবে দূর থেকে দেখতে এই মডেলের টেন্ট খুবই সুন্দর লাগে।
এখন যেই মডেলের টেন্ট ই কিনুন না কেন, কেনার সময় অবশ্যই নিচের কয়েকটি পয়েন্ট নিশ্চিত হয়ে নিবেনঃ
১. সহজে পিচ করা যায়
২. চেইন গুলো কাজ করছে
৩. যথেষ্ট ভেন্টিলেশন আছে
৪. সেলাই গুলো সব ঠিক আছে
৫. পোল গুলোর যথেষ্ট স্ট্যাবিলিটি আছে
আগামী পর্বে থাকছেঃ
নেভিগেশনের জন্য ম্যাপ, জিপিএস, থাকার শেল্টার (তাঁবু/টার্প/হ্যামক), আরামদায়ক জামা-কাপড়, শান্তিমত ঘুমের জন্য স্লিপিং গিয়ার, মেডিকেশন, টয়লেট্রিজ, রান্নার জন্য কুকিং সেট, সারভাইভাল কিট আর এই সব কিছু আরামসে ক্যারি করার জন্য একটা ভালো মানের ব্যাকপ্যাক।
যত কম ততই বেশী
“He who would travel happily must travel light”- Antoine de Saint-Exupery
ট্রেকিং শুরু করার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে একটা হালকা ব্যাকপ্যাক। ব্যাকপ্যাক যত হালকা হবে ট্রেকিং জন্য এনার্জী ততই কম দরকার হবে। সেই কম এনার্জীর ঘাটতি মেটাতে তাই আমাদের খাবার ও কম লাগবে। এর মানে হচ্ছে আরও হালকা ব্যাকপ্যাক। হালকা ওজনের ব্যাকপ্যাক ক্যারি করলে শরীরের উপর চাপ ও খুব কম পরে আর মানসিক ভাবে চাঙা থাকা যায়- ট্রেকিং এ যা খুবই প্রয়োজনীয়।
শেল্টারঃ
কোন ট্রেকিং ট্রিপ প্ল্যান করার সময় সব চেয়ে প্রথমে যেই জিনিস টা গুরুত্বপূর্ন তা হল একটি আরামদায়ক শেল্টার বা থাকার জায়গা নিশ্চিত করা। শেল্টার আসলে ডিপেন্ড করে কোন জায়গায় ট্রেকিং এ যাচ্ছি তার উপর। সেখানের আবহাওয়া কেমন, কতটুকু আরাম দরকার আর টেরেইন টা কেমন এই সব এর উপর ভিত্তি করেই আমাদের প্ল্যান টা করতে হয়। কিছু কিছু জায়গায় আমরা ট্রেকার্স হাট বা স্থানীয়দের বাসায় থেকে এই শেল্টার এর বাড়তি ওজনের ঝামেলা এড়িয়ে যেতে পারি। আবার কিছু জায়গায় ইমার্জেন্সি ক্যাম্প করা লাগতে পারে। খোলা ট্রেকিং এর সময় খোলা আকাশের নীচে ঘুমানো কখনোই কোন অপশন হতে পারে না।
ট্রেকিং এ গেলে আমরা মোটামোটি তিন ধরনের শেল্টার এর কথা চিন্তা করে প্ল্যান করতে পারিঃ
ক. তাঁবু
খ. টার্প
গ. হ্যামক
টেন্টঃ
পোকা-মাঁকড় এর কাঁমড়, মশা-মাছির উৎপাত, বন্য জীব-জন্তু, বৃষ্টি-বাদল এর দিনে আরামদায়ক আর নিরাপদে ঘুমানোর জন্য একটা তাঁবু খুবই প্রয়োজনীয়। আজকাল আমাদের দেশেই বিভিন্ন ধরনের তাঁবু পাওয়া যাচ্ছে। ট্রেকিং ও ক্যাম্পিং এর জনপ্রিয়তার সাথে সাথে আমাদের অপশন ও বাড়ছে। টেন্ট এর দাম যেহেতু একটু বেশী তাই ওয়ান টাইম ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে টেন্ট কেনার সময় আমাদের বেসিক কিছু জিনিস এর দিকে লক্ষ্য রাখতেই হবে।
জায়গাঃ
টেন্ট এর সাইজ খুবই গুরুত্বপূর্ন। টেন্ট এর ভিতরে আপনাকে আরাম করে ঘুমানোর সাথে সাথে আপনার ব্যাকপ্যাক ও অন্যান্য গিয়ার গুলো নিরাপদে রাখতে হবে। তাই টেন্ট কেনার আগেই প্ল্যান করুন, আপনি কিভাবে টেন্ট ব্যবহার করবেন। একাই ঘুরে বেড়াবেন নাকি গ্রুপ এ ঘুরবেন? সেটার উপর ডিপেন্ড করে আপনি সিঙ্গেল টেন্ট কিনবেন না কি টু-পারসন টেন্ট নাকি ফোর-পারসন টেন্ট। টেন্ট এর ভিতর আপনি যেন আরামে বসতে পারেন, ছাদের যেন আপনার মাথা লেগে না যায়। আবার, খেয়াল রাখবেন টেন্ট টা যেন এতই ছোট না হয় যাতে ঘুমের সময় একটু কাঁত হলেই কনডেনসেশনের জন্য ঘেমে থাকা দেয়ালে আপনার শরীর লেগে ভিজে না যায়। কিছু কিছু টেন্ট এ আলাদা বারান্দা বা করিডোর এর ব্যবস্থা থাকে, যেন ঐ জায়গায় ব্যাকপ্যাক ও অন্যান্য জিনিস পত্র রাখা যায়।
ওজনঃ
টেন্ট এর ওজন খুবই গুরুত্বপূর্ন। টেন্ট যতই হালকা হবে তার দাম ও তত বেশী হবে। আবার হালকা হলেই যে টেন্ট ভাল মানের হবে সেটা মনে করার কোন কারন ই নাই। টেন্ট এর ম্যাটেরিয়াল, পোল, ভেন্টিলেশন, ফ্লোর, পেগ, ফ্লাই বা কভার শীট এর উপর নির্ভর করে টেন্ট এর ওজন। সব দিক বিবেচনা করে মান আর দামের মধ্যে সমন্বয় করে আমাদের টেন্ট কেনা উচিৎ। আমাদের দেশে এখন যে সব টেন্ট পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর ওজন সাধারনত এক থেকে পাঁচ কেজির মত হয়।
এই ক্ষেত্রে আমার সাজেশন হল, দুইজন মিলে একটি টু-পারসন টেন্ট কিনে নেওয়া। তাহলে ট্রেকিং এর সময় একজন টেন্ট ক্যারি করলে ট্রিপের অন্যান্য গিয়ার গুলো অন্যজন ক্যারি করতে পারে। এভাবে একদিকে যেমন একটা ভাল মানের টেন্ট কিনতে একজনের অর্ধেক টাকা লাগছে অন্যদিকে ট্রেকিং এর সময় ওয়েট ডিসট্রিবিউশন ও ভালভাবে হচ্ছে।
সিজনঃ
কোম্পানী গুলো বিভিন্ন সিজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের টেন্ট তৈরী করে। লো-অলটিটিউড এর জন্য যেই টেন্ট ব্যবহার করা যায় সেটা আপনি হাই-অল্টিটিউডে ব্যবহার করতে পারবেন না। বৃষ্টির দিনে যেটা ব্যবহার করা যায় সেটা আপনি হিমালয়ের বরফে ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার গরমের দিনে দরকার হয় ভালো ভেন্টিলেশন এর ব্যবস্থা থাকা টেন্ট। আবার সব ঋতুতে ব্যবহার করা যায় এমন ফোর-সিজন টেন্ট ও পাওয়া যায়। সারা বছর ধরে সব কয়টি ঋতুতে সব ধরনের আবহাওয়ায় যে টেন্ট ব্যবহার করা যায় স্বাভাবিক ভাবেই সেই টেন্ট এর দাম খুব বেশী হয়। তাই টেন্ট কেনার আগে কোন ধরনের টেন্ট আপনার দরকার সেটা আগেই চিন্তা করে ঠিক করে রাখুন।
সেট আপঃ
টেন্ট এর মডেলের উপর ডিপেন্ড করে টেন্ট এর সেট আপ কেমন হবে। কিছু কিছু টেন্ট সেট আপ করা খুবই সহজ আবার কিছু কিছু খুবই জটিল আর সময় সাপেক্ষ। কিছু টেন্ট পিচ করতে একজনই যথেষ্ট আবার দুই তিন জন মিলেও একটা টেন্ট পিচ করা অনেক কষ্টকর লাগে। এমন টেন্ট কেনা উচিৎ যেটা খুব সহজে আর কম সময়ের মধ্যে পিচ করা যায়।
কনডেন্সেসন বা বডি ঘেমে যাওয়াঃ
ফিজিক্স ১০১- ঠান্ডা কোকের গ্লাসের বডি যে কারনে ঘেমে যায় ঠিক একই কারন অর্থাৎ ভিতরে আর বাহিরের তাপমাত্রার বিভিন্নতার কারনে টেন্টের ভিতরের বডিও ঘেমে যায়।
সাধারনত টেন্ট এর দু’টা লেয়ার থাকে। উপরের লেয়ার বা ফ্লাই কভার এর ফেব্রিক বা কাপড় ওয়াটার প্রুফ হয় আর ভিতরের লেয়ার টা ওয়াটার প্রুফ হয় না। কনডেনসেশন কম হওয়ার জন্যেই ভিতরের লেয়ার টা ওয়াটার প্রুফ করা হয় না। এই কারনে টেন্ট এর ভিতর আমাদের শরীর থেকে যেই বাষ্প তৈরী হয় সেটা ভিতরের স্তর ভেদ করে বাইরে চলে যায় আর বাইরের স্তরের নীচের দিকে ঘেমে টেন্টের নীচ দিয়ে বাইরে চলে যায়। সব টেন্ট এর ভিতরের বডি কিছু টা হলেও ঘামবে। তবে ভাল টেন্ট গুলোতে এই কন্ডেন্সেসন টা খুব কম হয়। যেই টেন্ট এর ভেন্টিলেসন ভাল সেই টেন্ট ই কেনা উচিৎ।
আজকাল উন্নতমানের ফ্যাব্রিক(গোর-টেক্স) দিয়ে এক লেয়ার এর টেন্ট ও তৈরী হচ্ছে। এগুলো অনেক হাল্কা আর দাম ও সেই সাথে অকল্পনীয় রকমের বেশী হয়।
গরম এর দিনে ট্রেকিং এর জন্য টেন্টের ভেন্টিলেশন খুব ভাল না হলে আরামদায়ক ক্যাম্পিং এর চিন্তা করা ও কষ্টকর। বাতাস যেন ভালভাবে টেন্টের ভিতর প্রবেশ করতে পারে তেমন টেন্ট দেখে নেয়া উচিৎ।
পোলঃ
পোল গুলো সাধারনত স্টীল, এলুমিনাম বা ফাইবার গ্লাসের তৈরী হয়। ছোট ছোট টুকরো গুলো ইলাস্টিক কর্ড দিয়ে একটার সাথে আরেকটা লাগানো থাকে। ফাইবার গ্লাস এর পোল গুলো থেকে এলয় এর তৈরী পোল গুলো বেশী শক্তিশালী ও ফ্লেক্সিবল হয়। ফাইবার গ্লাস এর পোল গুলো এক্সট্রিম কন্ডিশনে ভেঙে যেতে পারে। ইলাস্টিক কর্ডিং পোল গুলোর আরেক টা সুবিধা হচ্ছে এগুলা অনেক বেশী প্রেসার নিতে পারে। আর টেন্ট খোলার সময় মাঝখান থেকে পোল গুলো আলাদা করে প্রেসার কমিয়ে ফেলা যায়। এভাবে পোল ভাঙার সম্ভাবনাও কমে যায়।
পেগঃ
হালকা টেন্ট গুলো জায়গামত ফিক্স রাখতে পেগ দিয়ে চারদিকে গেঁথে দিতে হয়। প্রচন্ড বাতাসে টেন্ট ঠিক রাখতে এর কোন বিকল্প নাই। কিছু কিছু টেন্ট এর উপরের কভার টাও চারদিক থেকে টানা দেয়ার জন্য পেগ লাগে। টেন্ট গুছানোর সময় গুনে গুনে পেগ গুলো রাখা উচিৎ, অনেক ছোট হওয়ার কারনে পেগ হারানোর হার সবচেয়ে বেশী।
আমাদের দেশে আজকাল তিন ধরনের টেন্ট পাওয়া যাচ্ছেঃ
ক. রীজ টেন্টঃ
এগুলো অর্থডক্স A-ফ্রেম টেন্ট। স্কাউটিং এর জন্য এই টেন্ট গুলো বেশী ব্যবহার করা হয়। এগুলো অনেক স্টেবল হলেও সেট আপ করা অনেকটাই ঝামেলা মনে হয় আমার কাছে। এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে এর ওজন। এগুলো অনেক বেশী ভারী হয়। আর চারদিকে স্ট্যাকিং অনেকই বেশী। টানা দিতে দিতেই সময় গুলো চলে যায়। ভিতরের জায়গা ও তুলনা মূলক ভাবে কম থাকে।
খ. ডোম টেন্টঃ
ওজনে হালকা, সেট আপ করা অনেক ইজি, আর ব্যাকপ্যাকে ক্যারি করা অনেক সুবিধা জনক বলেই আজকাল এই টেন্ট গুলো বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সাধারনত দুটা পোল সেট করে একজনই টেন্ট পিচ করতে পারে। ভিতরে জায়গাও অনেক বেশী থাকে। কিছু কিছু মডেলে আলাদা বারান্দা বা কম্পার্টমেন্ট ও থেকে। এরো ডাইনামিক শেইপের কারনে মাউন্টেনিয়ারিং এর জন্য তাই এই ধরনের বেশী উপযোগী। তবে একটা ভালমানের ডোম টেন্ট এর দাম ও অনেক বেশী হয়।
গ. টানেল শেইপড পপ-আপ টেন্টঃ
চোখের নিমিষেই এই টেন্ট পিচ করা হয়ে যায়। ফ্লেক্সিবল পোল কয়েল করা থাকে। ব্যাগ থেকে খুলে জায়গা মত বসিয়ে দিলেই হল- প্যাঁচানো কয়েল গুলো খুলে টেন্ট আপনা আপনি টানেল শেইপ নিয়ে নেয়। কিন্তু ট্রেকিং এর জন্য এই ধরনের মডেল খুবই অসুবিধা জনক। গোল রাউন্ড শেইপের বেশ বড় একটা কয়েল ক্যারি করতে হয়। ভিতরে জায়গা ও অনেক কম থাকে। মাঝার সাইজের একজন বসলেই ছাদে মাথা লেগে যায়। তবে দূর থেকে দেখতে এই মডেলের টেন্ট খুবই সুন্দর লাগে।
এখন যেই মডেলের টেন্ট ই কিনুন না কেন, কেনার সময় অবশ্যই নিচের কয়েকটি পয়েন্ট নিশ্চিত হয়ে নিবেনঃ
১. সহজে পিচ করা যায়
২. চেইন গুলো কাজ করছে
৩. যথেষ্ট ভেন্টিলেশন আছে
৪. সেলাই গুলো সব ঠিক আছে
৫. পোল গুলোর যথেষ্ট স্ট্যাবিলিটি আছে
আগামী পর্বে থাকছেঃ
- টার্প ও হ্যামক
- ক্যাম্প সেট আপ
- টেন্ট এর মেন্টেইনেন্স
Friday, December 14, 2012
গল্পবলা গেরিলা
মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়ার সাথে আমার প্রথম দেখা অফিসের লিফটে ! 'মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোন' অনুষ্ঠানের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ঠিকঠাক করতে এসেছেন । রাশভারী, বলিষ্ঠ, দাড়ি-গোঁফে ঢাকা মুখ । ভয়ে ভয়ে সালাম দিয়ে হাত বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, 'স্যার, আপনি ভাল আছেন ?' হাসিমুখে উত্তর দিয়ে মাঝারি উচ্চতার মানুষটা নেমে গেলেন লিফট থেকে । পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিরক্ত মানুষটিকে বললাম, ইনিই বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া, 'বিজয়ী হয়ে ফিরব নইল ফিরবই না', 'জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা' এই বইগুলো তাঁরই অস্ত্রধরা হাত থেকে বেরিয়েছে !
[caption id="attachment_59" align="aligncenter" width="190"] জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা-মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া[/caption]
'মুক্তিযুদ্ধের হাজারো গণযোদ্ধার একজন' এভাবেই নিজেকে তিনি পরিচয় করিয়ে দেন 'জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা'বইয়ের শুরুতে । ইতিহাসে যে যোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ থাকে একটি মাত্র বাক্য - 'বাংলাদেশের ছাত্র কৃষক, জনতা, পেশাজীবী, শ্রেণীগোত্র নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন ।' এরপর ইতিহাস এর চরিত্র হিসেবে বেছে নেয় 'অল্প কিছু রাজনৈতিক নেতা, কিছু সামরিক ব্যক্তিত্ব, কিছু বুদ্ধিজীবী'-কে । এই বই (এবং মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়ার প্রায় সব বইই) তাই সেসব উপেক্ষিত, অনাদৃত পার্শ্বচরিত্রের মহানায়ক হয়ে ওঠার দলিল। এই বইয়ের নায়ক চোরাকারবারি তাজুল, মিরাশের মা, বোকা হাবিলদার রমিজ, 'নষ্টা' মেয়ে সায়রা, ১৪ বছরের বাচ্চু, ৭২ বছরের অহেদ কেরানি, রাখাইন মেয়ে প্রিনছা ! এই বই বিদেশী বন্ধু ঔডারল্যান্ড, মেঘ সিং এর অসামান্য অবদানের সামান্য স্বীকৃতি ।
অভিজ্ঞ চোরাকারবারি তাজুল তার 'পেশাগত' দক্ষতায় নিপুণতার সাথে সম্পন্ন করে রেকি, যুদ্ধের আকস্মিক পরিস্থিতেও ঘাবড়ায় না, তার এক কথা পরিস্থিতি যাই হোক, 'যুদ্ধ না করে যুদ্ধ শেষ করবে না'। শান্তিবাহিন চেয়ারম্যান বাবা নিজ হ উপঢৌকন হিসেবে ক্যাম্পে রেখে আসেন সায়রাকে । তাঁর দিন কাটতে থাকে পশুদের রাতের খাবার হিসেবে । কিন্তু এই গ্লানিও দমিয়ে রাখতে পারে না সায়রাকে, সুনিপুণ গুপ্তচরের মত ঠিকঠিক খবর বের করে শত্রু অবস্থানের খবর জানিয়ে দিয়ে আসে মুক্তি বাহিনীকে । নিজের সর্বস্ব বিকিয়ে দিয়েও একইভাবে জিতে যায় রাখাইন মেয়ে প্রিনছা ! কোলের ছেলেকে সাথে নিয়েই মুক্তিবাহিনীর সাথে আঠার মত লেগে থাকে মিরাশের মা, তার অবিশ্রান্ত গুলিতে হতাহত পাকসেনাদের রক্তে লাল হয়ে যায় মগরা নদী! এই প্রাণশক্তি, এই প্রেরণার উৎপত্তি কোথায় ?
চা বাগানের কুলি হরি । সন্তানসম্ভবা কিশোরী বধূ ছাড়া আর কেউ নেই । তার উপর দায়িত্ব পড়েছে মুক্তিবাহিনীকে পথ দেখিয়ে শত্রুদলের কাছে নিয়ে যাওয়ার । রেইডের মাঝেই খবর আসে একটা মৃত সন্তান জন্ম দিয়ে মারা গেছে হরির বউ ! সর্বহারা হরি চোখ মুছতে মুছতে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তায় পালন করে তার শেষ কর্তব্য, তারপর হারিয়ে যায় ! খর্বাকৃতির জন্য মুক্তিবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দিতে পারেনা মহিউদ্দীন । নাছোড়বান্দা এই যোদ্ধা আড়াআড়ি শুয়ে পড়ে ক্যাপ্টেনের জিপের সামনে, বাহিনীতে ঢোকার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি বাতলে দেয় সে নিজেই, 'স্যার, হাতে একটা গ্রেনেড দেন, শত্রুর বাঙ্কার দেখায় দেন । যে সাহস করে শত্রুর বাঙ্কার ধ্বংস করে ফিরে আসতে পারবে তাকেই ভর্তি করে নেন' ! নির্বোধ? না তো কি? এই পরীক্ষার অবধারিত ফলালফল তো মৃত্যু ! বাধ্য হয়েই বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এই কিশোরকে । ১৪ই ডিসেম্বর ভোরে সব পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাস করে চিরদিনের জন্য ময়দান ত্যাগ করে এই যোদ্ধা ! Job accomplished!
এই অসাধারণভাবে সাধারণ মানুষগুলো কিন্তু একেবারে অদৃশ্য নন । যুদ্ধের নাটকের শুরুতে তাদের নাম থাকে - 'যুবক ১', 'যুবক ২'; সিনেমার credit line -এও 'গ্রামবাসী' বলে তাদের প্রাপ্য পাওনা তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয় । তারপরও বারবার এই 'তুচ্ছ' 'তুচ্ছ'গল্পগুলো আমাদের শোনান ২নং সেক্টরের যোদ্ধা কামরুল, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের ইন্টার-পরীক্ষার্থী । তাঁকে দেখেই বুঝতে পারি তাঁর জীবনটা আটকে গেছে ওই ‘নয় মাসে’ । হাতে ধরে রাখা কলমটা মাঝে মাঝে খুব জোরে চেপে ধরেন, বুলেট বের হয় না যদিও ওটা থেকে ! তাঁর সহযোদ্ধা চোরাকারবারি তাজুল তার ‘পেশার’ প্রতি নিষ্ঠাবান থেকেছে শেষ পর্যন্ত - দেখেই বোঝা যায় খুব একটা ভাল নেই, মিরাশের-মা স্বামী, সন্তান সব হারিয়ে এখন মরমী ফকির, গ্রামছাড়া সায়রার নষ্ট হবার মত যৌবন ফুরিয়ে গেছে কবেই ! স্বীকৃতি পায়নি কিছুই, তবু মরে গিয়ে বেঁচে গেছে অহেদ কেরানি । যুদ্ধের প্রতিটি রাত ভাত বেড়ে বসে থাকতো যে গ্রাম্যবধূ তার অপেক্ষার পালা শেষ হল কিনা তা অবশ্য জানা নেই এই বইয়ের লেখকের !
যুদ্ধের পুরনো সত্য - ‘স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলা চায় না’ এটা জেনে গেছেন আজন্ম যোদ্ধা কামরুল ! তাঁর সামনে বসে থাকা যুবকের জ্বলজ্বলে চোখ তাঁকে স্পর্শ করে কি করেনা, কথা বলতে বলতে তিনি তখন চলে গেছেন মুকুন্দপুর, প্রিয় রণাঙ্গনে ! তবুও না চাইলেও তাঁকে আবার ফিরে আসতে হয় এই নষ্ট সময়ে । সহযোদ্ধা তৈয়ব আলীকে যে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁকে যে বেঁচে থাকতেই হবে এই গল্পগুলো বলে যাবার জন্যে !
বইয়ের নামঃ 'জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা'
লেখকঃ মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া
প্রকাশকঃ Centre for Bangladesh Liberation War Studies
প্রাপ্তিস্থানঃ http://iferi.com/index.php/books/freedom.html
[caption id="attachment_59" align="aligncenter" width="190"] জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা-মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া[/caption]
'মুক্তিযুদ্ধের হাজারো গণযোদ্ধার একজন' এভাবেই নিজেকে তিনি পরিচয় করিয়ে দেন 'জনযুদ্ধের গনযোদ্ধা'বইয়ের শুরুতে । ইতিহাসে যে যোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ থাকে একটি মাত্র বাক্য - 'বাংলাদেশের ছাত্র কৃষক, জনতা, পেশাজীবী, শ্রেণীগোত্র নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন ।' এরপর ইতিহাস এর চরিত্র হিসেবে বেছে নেয় 'অল্প কিছু রাজনৈতিক নেতা, কিছু সামরিক ব্যক্তিত্ব, কিছু বুদ্ধিজীবী'-কে । এই বই (এবং মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়ার প্রায় সব বইই) তাই সেসব উপেক্ষিত, অনাদৃত পার্শ্বচরিত্রের মহানায়ক হয়ে ওঠার দলিল। এই বইয়ের নায়ক চোরাকারবারি তাজুল, মিরাশের মা, বোকা হাবিলদার রমিজ, 'নষ্টা' মেয়ে সায়রা, ১৪ বছরের বাচ্চু, ৭২ বছরের অহেদ কেরানি, রাখাইন মেয়ে প্রিনছা ! এই বই বিদেশী বন্ধু ঔডারল্যান্ড, মেঘ সিং এর অসামান্য অবদানের সামান্য স্বীকৃতি ।
অভিজ্ঞ চোরাকারবারি তাজুল তার 'পেশাগত' দক্ষতায় নিপুণতার সাথে সম্পন্ন করে রেকি, যুদ্ধের আকস্মিক পরিস্থিতেও ঘাবড়ায় না, তার এক কথা পরিস্থিতি যাই হোক, 'যুদ্ধ না করে যুদ্ধ শেষ করবে না'। শান্তিবাহিন চেয়ারম্যান বাবা নিজ হ উপঢৌকন হিসেবে ক্যাম্পে রেখে আসেন সায়রাকে । তাঁর দিন কাটতে থাকে পশুদের রাতের খাবার হিসেবে । কিন্তু এই গ্লানিও দমিয়ে রাখতে পারে না সায়রাকে, সুনিপুণ গুপ্তচরের মত ঠিকঠিক খবর বের করে শত্রু অবস্থানের খবর জানিয়ে দিয়ে আসে মুক্তি বাহিনীকে । নিজের সর্বস্ব বিকিয়ে দিয়েও একইভাবে জিতে যায় রাখাইন মেয়ে প্রিনছা ! কোলের ছেলেকে সাথে নিয়েই মুক্তিবাহিনীর সাথে আঠার মত লেগে থাকে মিরাশের মা, তার অবিশ্রান্ত গুলিতে হতাহত পাকসেনাদের রক্তে লাল হয়ে যায় মগরা নদী! এই প্রাণশক্তি, এই প্রেরণার উৎপত্তি কোথায় ?
চা বাগানের কুলি হরি । সন্তানসম্ভবা কিশোরী বধূ ছাড়া আর কেউ নেই । তার উপর দায়িত্ব পড়েছে মুক্তিবাহিনীকে পথ দেখিয়ে শত্রুদলের কাছে নিয়ে যাওয়ার । রেইডের মাঝেই খবর আসে একটা মৃত সন্তান জন্ম দিয়ে মারা গেছে হরির বউ ! সর্বহারা হরি চোখ মুছতে মুছতে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তায় পালন করে তার শেষ কর্তব্য, তারপর হারিয়ে যায় ! খর্বাকৃতির জন্য মুক্তিবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দিতে পারেনা মহিউদ্দীন । নাছোড়বান্দা এই যোদ্ধা আড়াআড়ি শুয়ে পড়ে ক্যাপ্টেনের জিপের সামনে, বাহিনীতে ঢোকার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি বাতলে দেয় সে নিজেই, 'স্যার, হাতে একটা গ্রেনেড দেন, শত্রুর বাঙ্কার দেখায় দেন । যে সাহস করে শত্রুর বাঙ্কার ধ্বংস করে ফিরে আসতে পারবে তাকেই ভর্তি করে নেন' ! নির্বোধ? না তো কি? এই পরীক্ষার অবধারিত ফলালফল তো মৃত্যু ! বাধ্য হয়েই বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এই কিশোরকে । ১৪ই ডিসেম্বর ভোরে সব পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাস করে চিরদিনের জন্য ময়দান ত্যাগ করে এই যোদ্ধা ! Job accomplished!
এই অসাধারণভাবে সাধারণ মানুষগুলো কিন্তু একেবারে অদৃশ্য নন । যুদ্ধের নাটকের শুরুতে তাদের নাম থাকে - 'যুবক ১', 'যুবক ২'; সিনেমার credit line -এও 'গ্রামবাসী' বলে তাদের প্রাপ্য পাওনা তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয় । তারপরও বারবার এই 'তুচ্ছ' 'তুচ্ছ'গল্পগুলো আমাদের শোনান ২নং সেক্টরের যোদ্ধা কামরুল, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের ইন্টার-পরীক্ষার্থী । তাঁকে দেখেই বুঝতে পারি তাঁর জীবনটা আটকে গেছে ওই ‘নয় মাসে’ । হাতে ধরে রাখা কলমটা মাঝে মাঝে খুব জোরে চেপে ধরেন, বুলেট বের হয় না যদিও ওটা থেকে ! তাঁর সহযোদ্ধা চোরাকারবারি তাজুল তার ‘পেশার’ প্রতি নিষ্ঠাবান থেকেছে শেষ পর্যন্ত - দেখেই বোঝা যায় খুব একটা ভাল নেই, মিরাশের-মা স্বামী, সন্তান সব হারিয়ে এখন মরমী ফকির, গ্রামছাড়া সায়রার নষ্ট হবার মত যৌবন ফুরিয়ে গেছে কবেই ! স্বীকৃতি পায়নি কিছুই, তবু মরে গিয়ে বেঁচে গেছে অহেদ কেরানি । যুদ্ধের প্রতিটি রাত ভাত বেড়ে বসে থাকতো যে গ্রাম্যবধূ তার অপেক্ষার পালা শেষ হল কিনা তা অবশ্য জানা নেই এই বইয়ের লেখকের !
যুদ্ধের পুরনো সত্য - ‘স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলা চায় না’ এটা জেনে গেছেন আজন্ম যোদ্ধা কামরুল ! তাঁর সামনে বসে থাকা যুবকের জ্বলজ্বলে চোখ তাঁকে স্পর্শ করে কি করেনা, কথা বলতে বলতে তিনি তখন চলে গেছেন মুকুন্দপুর, প্রিয় রণাঙ্গনে ! তবুও না চাইলেও তাঁকে আবার ফিরে আসতে হয় এই নষ্ট সময়ে । সহযোদ্ধা তৈয়ব আলীকে যে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁকে যে বেঁচে থাকতেই হবে এই গল্পগুলো বলে যাবার জন্যে !
বইয়ের নামঃ 'জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা'
লেখকঃ মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া
প্রকাশকঃ Centre for Bangladesh Liberation War Studies
প্রাপ্তিস্থানঃ http://iferi.com/index.php/books/freedom.html
Sunday, December 9, 2012
iFeri.com -এর উদ্যোগে শীতবস্ত্র সংগ্রহঃ কিছু একটা করার চেষ্টা
শীত খুব রোম্যান্টিক ঋতু - ধোঁয়া ওঠা পিঠা, খেজুরের রস, রঙিন পশমি কাপড় - বোনের পাঠানো বিলেতি জ্যাকেটটা বের করার সময় হয়ে গেল ! পুরো গল্পটা এটুক পর্যন্ত হলেই ভাল হত । কিন্তু বাস্তবে এই রঙিন ছবির পাশেই আছে জীর্ণ-শীর্ণ বিপর্যস্ত মানুষের (?) দল, ভিখিরি মায়ের আঁচলে উষ্ণতা খোঁজার প্রাণান্ত চেষ্টারত শিশু, আর শীতে মরো-মরো বুড়ো-বুড়ির মিছিল ।
আমরা ঠিক করেছি এবার আমরা facebook group members এবং ইউজারদের সহায়তায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেবার চেষ্টা করব । আপনাদের এজন্য যা করা লাগবে তা হল শুধু ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট-এ আমাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে পুরনো কাপড়গুলো । যারা তাদের অফিস বা গ্রুপ থেকে একসঙ্গে কাপড় পাঠাতে চান তারা আপনাদের ঠিকানা আমাদের বলে দিন, আমাদের লোক সেখান থেকে সংগ্রহ করে নেবে আপনাদের অবদান । মনে রাখবেন, ১৮ ই ডিসেম্বরের মধ্যেই কিন্তু অবশ্যই আমাদের হাতে পৌঁছুতে হবে সব শীতবস্ত্র ।
এর বাইরে যদি কিছু করার থাকে, যদি আপনি চান বিতরণ কাজে আপনি অংশগ্রহণ করবেন বা কোন নির্দিষ্ট গ্রামে পাঠালে আপনি মনে করেন আরো ভাল হবে তাহলে দয়া করে আমাদের জানান । জানাতে পারেন ফেসবুকে, info@iferi.com ইমেইলে, অথবা আমাদের hotline number 01717687551- এ.
ছবির ওই শিশুগুলোর হাসি অমলিন রাখার জন্য এটুকু কষ্ট কি আমরা করতে পারব না ?
আমরা ঠিক করেছি এবার আমরা facebook group members এবং ইউজারদের সহায়তায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেবার চেষ্টা করব । আপনাদের এজন্য যা করা লাগবে তা হল শুধু ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট-এ আমাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে পুরনো কাপড়গুলো । যারা তাদের অফিস বা গ্রুপ থেকে একসঙ্গে কাপড় পাঠাতে চান তারা আপনাদের ঠিকানা আমাদের বলে দিন, আমাদের লোক সেখান থেকে সংগ্রহ করে নেবে আপনাদের অবদান । মনে রাখবেন, ১৮ ই ডিসেম্বরের মধ্যেই কিন্তু অবশ্যই আমাদের হাতে পৌঁছুতে হবে সব শীতবস্ত্র ।
এর বাইরে যদি কিছু করার থাকে, যদি আপনি চান বিতরণ কাজে আপনি অংশগ্রহণ করবেন বা কোন নির্দিষ্ট গ্রামে পাঠালে আপনি মনে করেন আরো ভাল হবে তাহলে দয়া করে আমাদের জানান । জানাতে পারেন ফেসবুকে, info@iferi.com ইমেইলে, অথবা আমাদের hotline number 01717687551- এ.
ছবির ওই শিশুগুলোর হাসি অমলিন রাখার জন্য এটুকু কষ্ট কি আমরা করতে পারব না ?
ওয়েব সার্ভার পারফর্মেন্স টিউনিং
কয়েকদিন হল iFeri.com এর ট্রাফিক বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ওয়েব সার্ভার ঠিকমত সার্ভিস দিতে পারছিল না। আজকে সার্ভারের সব RAM পূর্ণ হয়ে সার্ভার প্রায় সব রিকোয়েস্ট deny করছিল। সমাধানের জন্য প্রথমে সার্ভারে RAM বাডানোর কথা চিন্তা করছিলাম। কিন্তু প্রতি মাসে অতিরিক্ত খরচের কথা চিন্তা করে প্রথমে ওয়েব সার্ভার টিউনআপ করা শুরু করি।
আমারা apache সার্ভার্ এ পর্যন্ত ব্যবহার করছিলাম। এই apache সার্ভার যেহেতু fork ব্যবহার করে ট্রাফিক সার্ভ করে সে কারণে RAM অনেক বেশি লাগে। এইটা সমাধান করার জন্য আমরা nginx ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলাম। সার্ভার fork ব্যবহার করে না। ইভেন্ট বেজড ডিজাইন - ফলে মেমোরি লাগে অনেক কম। এমনিতে এই মুহুর্তে apache ব্যবহার বন্ধ করা কঠিন। কিন্তু keep-alive ফিচার ব্যবহারের কারনে apache অনেক সময় ধরে রিসোর্স ধরে রাখছিল। সুতরাং keep-alive ফিচারের সাপোর্ট দেয়ার দায়িত্ব nginx এর জন্য রাখা হল আর apache শুধু অ্যাপ্লিকেশন লজিক প্রসেস করবে আপাতত। অল্প সময়ে সার্ভিস দেয়ার কারনে আর স্ট্যাটিক ফাইল সার্ভ না করায় মেমোরি লোড প্রায় নেই বললেই চলে - যেহেতু apache এর keep-alive বন্ধ করা আছে। আর স্ট্যাটিক ফাইলের জন্য nginx পুরো দায়িত্ব নিবে।
nginx - HTTP port সার্ভিস করবে এবং স্ট্যাটিক ফাইল সরাসরি সার্ভিস করবে।
apache অ্যাপ্লিকেশন লজিক প্রসেস করবে আর লোকাল পোর্টে সার্ভিস দেবে। বাইরে থেকে এর সাথে যোগাযোগ করা যাবে না (ফায়ার ওয়ালে পোর্ট খোলা নেই)। nginx এই ধরনের request এর জন্য প্রক্সির ভুমিকা পালন করবে।
সার্ভিস চালু করার তাড়া থাকায় বেঞ্চমার্ক নেয়া হয় নাই। তবে আপাতত ট্রাফিক সামাল দিচ্ছে নতুন কনফিগারেশন।
আমারা apache সার্ভার্ এ পর্যন্ত ব্যবহার করছিলাম। এই apache সার্ভার যেহেতু fork ব্যবহার করে ট্রাফিক সার্ভ করে সে কারণে RAM অনেক বেশি লাগে। এইটা সমাধান করার জন্য আমরা nginx ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলাম। সার্ভার fork ব্যবহার করে না। ইভেন্ট বেজড ডিজাইন - ফলে মেমোরি লাগে অনেক কম। এমনিতে এই মুহুর্তে apache ব্যবহার বন্ধ করা কঠিন। কিন্তু keep-alive ফিচার ব্যবহারের কারনে apache অনেক সময় ধরে রিসোর্স ধরে রাখছিল। সুতরাং keep-alive ফিচারের সাপোর্ট দেয়ার দায়িত্ব nginx এর জন্য রাখা হল আর apache শুধু অ্যাপ্লিকেশন লজিক প্রসেস করবে আপাতত। অল্প সময়ে সার্ভিস দেয়ার কারনে আর স্ট্যাটিক ফাইল সার্ভ না করায় মেমোরি লোড প্রায় নেই বললেই চলে - যেহেতু apache এর keep-alive বন্ধ করা আছে। আর স্ট্যাটিক ফাইলের জন্য nginx পুরো দায়িত্ব নিবে।
nginx - HTTP port সার্ভিস করবে এবং স্ট্যাটিক ফাইল সরাসরি সার্ভিস করবে।
apache অ্যাপ্লিকেশন লজিক প্রসেস করবে আর লোকাল পোর্টে সার্ভিস দেবে। বাইরে থেকে এর সাথে যোগাযোগ করা যাবে না (ফায়ার ওয়ালে পোর্ট খোলা নেই)। nginx এই ধরনের request এর জন্য প্রক্সির ভুমিকা পালন করবে।
সার্ভিস চালু করার তাড়া থাকায় বেঞ্চমার্ক নেয়া হয় নাই। তবে আপাতত ট্রাফিক সামাল দিচ্ছে নতুন কনফিগারেশন।
Subscribe to:
Posts (Atom)