আমরা অনেকেই ভাবি দালাল ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া বিরাট মুশকিল। এটা ঠিক যে দালালদের দৌরাত্ম সবসময়েই আছে, কিন্তু আমার মতে দালালকে মানুষ শুধু শুধুই টাকা দেয়। ফর্ম নিজে পূরণ করতে পারলে এবং ব্যাংকে টাকা জমা নিজে দিতে পারলে শুধু শুধু কেন আমি দালালের কাছে গিয়ে টাকা দেবো। দালালকে টাকা দিলেও আপনাকে লাইনে দাড়াতে হবেই। ফর্ম জমা দেয়ার সময় আপনাকেই সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। আপনার ছবি ও আঙুলের ছাপ নেয়ার ব্যাপারটিতেও দালালের কিছুই করার নেই। তবে কেন দালালের সরণাপন্ন হবেন। তারচেয়ে একটু সময় হাতে নিয়ে, ধৈর্য্য সহকারে নিজেই করে নিন নিজের কাজটা।
গত পর্বে আমরা জেনেছি ফর্ম কিভাবে পূরণ করতে হয়। এবার জানবো পাসপোর্ট অফিসে কি ধরনের অভিজ্ঞতা হতে পারে। ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করে (টাকা জমা দেয়া রশিদ সংযুক্ত করা সহ) আপনাকে যেতে হবে আপনার বর্তমান ঠিকানা যেই আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের (আরপিও) আওতায় পড়েছে, সেই অফিসে যেতে হবে।
বাংলাদেশে মোট ৩৪টি আরপিও রয়েছে। আসুন জেনে নেই কোন কোন থানা কোন কোন আরপিও এর অধীনে পড়েছে-
পাসপোর্ট অফিস সমূহ এবং তার অধীনস্থ এলাকা | |||||
ক্রমিক | পাসপোর্ট অফিস সমূহ | অধীনস্থ এলাকা (থানা) | কার্যালয় | ফোন নম্বর | |
১ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, ঢাকা | মতিঝিল, পল্টন, মিরপুর, শেরে বাংলা নগর, শাহ আলী, পল্লবী, কাফরুল, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, আদাবর, রমনা, শাহবাগ, নিউ মার্কেট, ধানমন্ডি, হাজারিবাগ, ধামরাই এবং সাভার। | পাসপোর্ট ভবন, ই-৭, আগারগাও, শের-এ-বাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭। | ০২-৮১৫৯২৫ | |
২ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, চট্টগ্রাম | কোতয়ালী, পাহারতলী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, বন্দর, ডবল মুরিং, কর্ণফুলী, খুলশী, হালিশহর, বায়েজিদ বোস্তামী, বাকালিয়া, পতেঙ্গা, মীরসরাই, হাটহাজারী, সীতাকুন্ড এবং রাউজান থানার চট্টগ্রামের অংশ। | মুর্শিদাবাদ, চট্টগ্রাম | ০৩১-২৫৫০০১০ | |
৩ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কুমিল্লা | কুমিল্লা সদর (কোতয়ালী), চান্দিনা, বুড়িচং, দেবীদ্বার, দাউদকান্দী, হোমনা, ব্রাহ্মণপাড়া, মুরাদনগর, মেঘনা, মনোহরগঞ্জ এবং তিতাস থানার কুমিল্লা জেলা অংশ | নোয়াপাড়া, কুমিল্লা | ০৮১-৬৫৭৮৬ | |
৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ময়মনসিংহ | ময়মনসিংহ জেলা | জেলা স্কুল রোড, ময়মনসিংহ | ০৯১-৬৬৩৫৭ | |
৫ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, গোপালগঞ্জ | গোপালগঞ্জ জেলা | চান্দমারী রোড, গোপালগঞ্জ | ০৬৬৮-৫৭০৮৯ | |
৬ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, নোয়াখালী | নোয়াখালী জেলা | হাসপাতাল রোড, নোয়াখালী | ০৩২১-৬১৭০৪ | |
৭ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, রাজশাহী | রাজশাহী জেলা | হাতেমখান, রাজশাহী | ০৭২১-৭৭২২৪৮ | |
৮ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, রংপুর | রংপুর জেলা | রোড-৫, মুলাতলা, রংপুর | ০৫২১-৬৪২৫০ | |
৯ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, সিরাজগঞ্জ | সিরাজগঞ্জ জেলা | ০৭৫১-৬২৯০৩ | ||
১০ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, খুলনা | খুলনা জেলা | বাড়ী- ৩৮, রোড- ৫, সোনাডাঙ্গা আ/এ, খুলনা | ০৪১-৭৩২১৪৬ | |
১১ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যশোর | যশোর জেলা | নাজির শংকরপুর, যশোর। | ০৪২১-৭৩৫০৭ | |
১২ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, বরিশাল | বরিশাল জেলা | বাঁধ রোড, বরিশাল | ০৪৩১-৬৪৫৪৯ | |
১৩ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, সিলেট | সিলেট জেলা | বাড়ী- ৫৭, রোড- ০২, ব্লক- ই, শাহজালাল উপশহর, সিলেট | ০৮২১-৭১৪০২২ | |
১৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, হবিগঞ্জ | হবিগঞ্জ জেলা | কোরেশ নগর এলাকা, হবিগঞ্জ | ০৮৩১-৫২৮৯৪ | |
১৫ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফরিদপুর | ফরিদপুর জেলা | ঝিলতলী, ফরিদপুর | ০৬৩১-৬২৭৮৭ | |
১৬ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদপুর | চাঁদপুর জেলা | ০৮৪১-৬৬৪৪৭ | ||
১৭ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মানিকগঞ্জ | মানিকগঞ্জ জেলা | ০৬৫১-৫১০১০ | ||
১৮ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মুন্সিগঞ্জ | মুন্সিগঞ্জ জেলা | |||
১৯ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বগুড়া | বগুড়া জেলা | |||
২০ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, দিনাজপুর | দিনাজপুর জেলা | |||
২১ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পাবনা | পাবনা জেলা | |||
২২ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পটুয়াখালি | পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা | |||
২৩ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মৌলভীবাজার | মৌলভীবাজার | |||
২৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, টাঙ্গাইল | টাঙ্গাইল জেলা | খালেদা মঞ্জিল, হোন্ডিং-২৩৭, পলাশতলী, আকুরটাকুরপাড়া, টাঙ্গাইল। | ||
২৫ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম | চান্দগাঁও | পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম | ||
২৬ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, উত্তরা, ঢাকা। | উত্তরা, এয়ারপোর্ট, গুলশান, বাড্ডা, ক্যান্টনমেন্ট, দক্ষিনখান, উত্তরখান, খিলখেত, আশুলিয়া এবং গাজীপুর জেলা। | বাড়ী- ২৯, রোড- ৭, সেক্টর-১২, উত্তরা, ঢাকা। | ০২-৮৯৬২০৩৯ | |
২৭ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা। | খিলগাঁও, সবুজবাগ, ডেমরা, শ্যামপুর, কদমতলী, গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা, কেরানীগঞ্জ দক্ষিন থানা, চক কোতয়ালী, দোহার, নবাবগঞ্জ, সুত্রাপুর এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা। | বাড়ী-৩৬০৫, মুজাহিদনগর, রায়েরবাগ, কদমতলী, ঢাকা। | ০২-৭৫৪২০৩৩ | |
28. | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কিশোরগঞ্জ | কিশোরগঞ্জ জেলা | |||
২৯ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, নরসিংদী | নরসিংদী জেলা | |||
৩০ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফেনী | ফেনী জেলা | |||
৩১ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া | ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা | |||
৩২ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কক্সবাজার | কক্সবাজার জেলা | |||
৩৩ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, রাঙ্গামাটি | রাঙ্গামাটি জেলা | |||
৩৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কুষ্টিয়া | কুষ্টিয়া জেলা | |||
আবেদনকারীরা পাসপোর্ট এর ফি বাবদ টাকাটা জমা দেবেন রাষ্টায়ত্ব সোনালী ব্যাংক এর নির্দিষ্ট শাখায়। চলুন জেনে নেই কোন পাসপোর্ট অফিসের জন্য কোন কোন শাখায় টাকা জমা দেয়া যাবে।
ক্রমিক | বিভাগীয়/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম | নির্ধারিত সোনালী ব্যাংক শাখার নাম | সংখ্যা |
১ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, আগারগাঁও, ঢাকা। | আগারগাঁও, মহাখালী, কলেজগেট মোহাম্মদপুর, আওলাদ হোসেন মার্কেট, বঙ্গবন্ধু আভিনিউ, দিলকুশা, মগবাজার, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ ও মিরপুর-১২ শাখা। | ১০টি |
২ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, মনসুরাবাদ, চট্টগ্রাম। | আগ্রাবাদ কর্পোরেট, পাঁচলাইশ ও মিঠাগলী শাখা। | ০৩টি |
৩ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, সিলেট। | সিলেট কর্পোরেট, স্টেশন রোড ও মহাজন পট্টি শাখা | ০৩টি |
৪ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, রাজশাহী। | রাজশাহী কর্পোরেট শাখা | ০১টি |
৫ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, রংপুর। | কর্পোরেট শাখা ও কাঁচারী বাজার শাখা | ০২টি |
৬ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, খুলনা। | কর্পোরেট শাখা, খুলনা | ০১টি |
৭ | বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, বরিশাল। | কর্পোরেট শাখা, বরিশাল | ০১টি |
৮ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা। | সদরঘাট, খিলগাঁও ও যাত্রাবাড়ি শাখা | ০৩টি |
৯ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, উত্তরা, ঢাকা। | উত্তরা শাখা | ০১টি |
১০ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদগাঁও, চট্টগ্রাম। | কোর্টহিল, সদরঘাট, বহদ্দার হাট, পাঁচলাইশ শাখা | ০৪টি |
১১ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কুমিল্লা। | স্টেশন রোড ও কুমিল্লা কর্পোরেট শাখা | ০২টি |
১২ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, নোয়াখালী। | মাইজদী কোর্ট শাখা | ০১টি |
১৩ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। | প্রধান শাখা, বি বাড়িয়া | ০১টি |
১৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদপুর। | প্রধান শাখা, চাঁদপুর | ০১টি |
১৫ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, হবিগঞ্জ। | প্রধান শাখা, হবিগঞ্জ | ০১টি |
১৬ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মৌলভীবাজার | প্রধান শাখা, মৌলভীবাজার | ০১টি |
১৭ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কক্সবাজার। | প্রধান শাখা, কক্সবাজার | ০১টি |
১৮ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, রাঙ্গামাটি। | প্রধান শাখা, রাঙ্গামাটি | ০১টি |
১৯ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বগুড়া। | প্রধান শাখা, বগুড়া | ০১টি |
২০ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পাবনা। | প্রধান শাখা, পাবনা | ০১টি |
২১ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, সিরাজগঞ্জ। | প্রধান শাখা, সিরাজগঞ্জ | ০১টি |
২২ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কিশোরগঞ্জ। | প্রধান শাখা, কিশোরগঞ্জ | ০১টি |
২৩ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মানিকগঞ্জ। | প্রধান শাখা, মানিকগঞ্জ | ০১টি |
২৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, টাঙ্গাইল। | প্রধান শাখা, টাঙ্গাইল | ০১টি |
২৫ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ময়মনসিংহ। | প্রধান শাখা, ময়মনসিংহ | ০১টি |
২৬ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, নরসিংদী। | প্রধান শাখা, নরসিংদী | ০১টি |
২৭ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, দিনাজপুর। | প্রধান শাখা, দিনাজপুর | ০১টি |
২৮ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফরিদপুর। | প্রধান শাখা, ফরিদপুর | ০১টি |
২৯ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, গোপালগঞ্জ। | প্রধান শাখা, গোপালগঞ্জ | ০১টি |
৩০ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কুষ্টিয়া। | প্রধান শাখা, কুষ্টিয়া | ০১টি |
৩১ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যশোর। | প্রধান শাখা, যশোর | ০১টি |
৩২ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পটুয়াখালী। | প্রধান শাখা, পটুয়াখালী | ০১টি |
৩৩ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মুন্সীগঞ্জ। | প্রধান শাখা, মুন্সীগঞ্জ | ০১টি |
৩৪ | আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফেনী। | প্রধান শাখা, ফেনী | ০১টি |
৩৫ | ভিসা সেল, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ঢাকা। | ভিসা সেল, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর শাখা, ঢাকা। | ০১টি |
৩৬ | ভিসা সেল, হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, চট্টগ্রাম। | ভিসা সেল, হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর শাখা, চট্টগ্রাম। | ০১টি |
সর্বমোট | ৫৬ টি |
নির্দিষ্ট শাখার কথা এজন্য বললাম যে, সোনালী ব্যাংকের সকল শাখায় পাসপোর্ট এর ফি জমা নেয়া হয় না। তাছাড়া আরপিও অনুযায়ী নির্দিষ্ট শাখায় টাকা জমা দিলে আপনার পাসপোর্ট এর ফি পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ দ্রুত নিশ্চিত হবে যে টাকা সরকারী কোষাগারে জমা পড়েছে। অন্য কোন অনুমোদিত শাখায় টাকা জমা দেয়া হলেও আপনার আবেদন গ্রহন করা হবে, কিন্তু ব্যাংক ফি ভেরিফিকেশন এর বিষয়টা খানিকটা দেরি হবে এবং আপনার পাসপোর্টটি আপনি নির্দিষ্ট সময়ে আপনি নাও পেতে পারেন। তাই নির্দিষ্ট আরপিও-র জন্য সোনালী ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখায় টাকা জমা দিয়ে ভোগান্তি থেকে বাঁচা সম্ভব হয়।
এবার জেনে নেয়া যাক পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে কি ধরনের প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। শুরুতে আপনার ফর্মটি যাচাই করা হবে, অর্থাৎ দ্বিতীয় গেট (তিনটি গেটের মধ্যে মাঝেরটা) দিয়ে ঢোকার পরই একজন সেনা সদস্য আপনার ছবির সাথে আবেদনের ছবি মিলিয়ে দেখবেন এবং ফর্মের পূরণ করার পদ্ধতি সঠিক আছে কিনা দেখে একটি সিরিয়াল নম্বর দিয়ে আপনাকে পাঠিয়ে দেবেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার কাছে ফর্মটি চেক করার জন্য।
আপনার ফর্মটিতে উল্লেখিত সকল তথ্য সঠিক কিনা এবং কাগজপত্র সঠিকভাবে সংযুক্ত করা হয়েছে কিনা দেখবে ওই কর্মকর্তা। এখানে আপনার জাতীয় সনদের মূল কপি, পূর্বের পাসপোর্ট (যদি থাকে) এর মূল কপি দেখতে চাইেব। তাই সেগুলো অবশ্যই সাথে রাখতে হবে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে ওই অফিসার ফর্মটিতে পরবর্তী নির্দেশনা লিখে স্বাক্ষর (সীল সহ) করে পাঠিয়ে দেবেন ছবি তোলার জন্য।
এরপর আপনাকে আরেকজন সেনা সদস্য অারেকটি সিরিয়াল নম্বর বসিয়ে আপনাকে প্রি-এনরোলমেন্ট এর জায়গা দেখিয়ে দেবেন। সেখানে একজন অপারেটর আপনার ফর্মের তথ্য মূল ডাটাবেসে সংযুক্ত করবে। তথ্য সংযুক্ত হবার পর আপনাকে যাচাই এর জন্য একটি প্রিন্ট আউট দেয়া হবে। আপনার তথ্যগুলোর বানান, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, যোগাযোগের নম্বর ভাল করে যাচাই করে নিন সঠিক আছে কিনা, অনেক সময় অপারেটর ভুল করে বসতে পারে, অপনি খেয়াল না করলে ভুলটাই আপনার পাসপোর্টে প্রিন্ট হয়ে যাবে।
এরপর অপারেটর আপনাকে ছবি তোলার নির্দিষ্ট জায়গা দেখিয়ে দেবেন। সেখানে আপনার ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ নেয়া এবং ডিজিটাল প্যাডে আপনার স্বাক্ষর নেয়া হবে। ছবি তোলার পর আপনাকে একটা ডেলিভারী স্লিপ দেয়া হবে, যেখানে পাসপোর্ট প্রদানের তারিখ দেয়া থাকবে।
এর কয়েকদিনের মাঝে আপনার সঙ্গে এসবি (পুলিশ) এর প্রতিনিধি যোগাযোগ করবেন, আপনার তথ্য যাচাই করে রিপোর্ট পাঠাবেন পাসপোর্ট অফিসে। রিপোর্টটি পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছানোর পর আপনার পাসপোর্টটি প্রিন্ট এর জন্য পাঠানো হবে। ডেলিভারী স্লিপে উল্লেখিত প্রদানের তারিখের আগেরদিন আপনার ফর্মে উল্লেখ করা মোবাইল নম্বরে খুদে বার্তার মাধ্যমে আপনাকে জানানো হবে আপনার পাসপোর্টটি প্রস্তুত। ঐদিন আপনি ডেলিভারী স্লিপটি সহ পাসপোর্ট অফিসের ডেলিভারী কাউন্টারে গিয়ে জমা দিলে আপনার পাসপোর্টটি স্বাক্ষর নিয়ে আপনার কাছে হস্তান্তর করা হবে। ডেলিভারী স্লিপটি সাথে না নিয়ে গেলে আপনাকে পাসপোর্ট দেয়া হবে না, তাই ডেলিভারী স্লিপ অবশ্যই সাবধানে রাখবেন, প্রয়োজনে প্রথম দিনই একাধিক ফটোকপি করে একাধিক নিরাপদ জায়গায় রেখে দিন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যার যার পাসপোর্ট তার নিজেকেই তুলতে হবে। বিশেষ বিবেচনায় প্রতিনিধি পাঠালেও তার হাতে যথাযথ প্রত্যয়ন থাকতে হবে। অন্যথায় হয়রানির শিকার হবার সম্ভাবনা থাকবে।
পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হবার কথা। কিন্তু এর মাঝে যেসব অসুবিধা কিংবা হয়রানি হবার সম্ভাবনা আছে সেগুলো হলো-
১। ফর্ম যাচাই এর প্রত্যেকটা পর্যায়ে দীর্ঘ লাইনে দাড়াতে হবে। একদিনে জমা দেয়া (ছবি তোলা সহ) হয়ে যাবার কথা থাকলেও অনেক সময় এটা সম্ভব হয় না, অতিরিক্ত ভীড়ের কারনে। এখানেই দালালদের সাথে আপনাদের দেখা হবে। তারা লাইন ভেঙ্গে আপনাকে সামনের দিকে পৌঁছে দিতে চাইবে, টাকার বিনিময়ে অবশ্যই। কিন্তু এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের দ্বারা আরো বেশি হয়রানির শিকার হবার সম্ভাবনা থাকে। আবার আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর বেশ কিছু অসাধু সদস্য এই লাইন বিষয়ক দূর্নীতির সাথে জড়িত। এখানে আপনাকে ধৈর্য্য রাখতে হবে।
২। ফর্মের যে কোন জায়গায় কোনরকম ভুল বা কমতি থাকলে আপনাকে আবার তা সংশোধন করে লাইনের পেছন থেকে শুরু করতে হতে পারে। এক্ষেত্রে সেখানে অবস্থিত কর্মকর্তাগন আপনাকে ছাড় কতটা দেবেন তা বলা কঠিন।
৩। পনের বছরের নিচে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাবা-মা একজনকে উপস্থিত থাকতেই হবে, অন্য কোন অভিভাবক (চাচা, মামা, ভাই, বোন) থাকলেও ফর্ম জমা নেয়া হবে না। বাবা-মা জীবিত না থাকলে কিংবা দেশে উপস্থিত না থাকলে যথাযথ অভিভাবক উপস্থিত থাকতে পারবে।
৪। বিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে স্বামী সহ ফর্ম জমা দেবার দিন আসতে হবে, তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় কাবিন-নামা দেখতে চাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ডিভোর্সীদের ক্ষেত্রে যথাযথ কাগজ সংযোজন করতে হবে।
৫। পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় পুলিশ কর্মকর্তার মর্জি অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে হবে, এই ভেরিফিকেশন রিপোর্টটি অনুকূলে না হলে আপনার পাসপোর্ট প্রিন্ট হবে না, অর্থাৎ আপনাকে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে না। এমনকি পাসপোর্ট অফিসে নির্দিষ্ট সময়ে ভেরিফিকেশন রিপোর্ট যেতে দেরী হবার কারনে অনেক পাসপোর্ট নির্দিষ্ট দিনে প্রদান না করতে পারার ঘটনাও অনেক ঘটেছে। ব্যাক্তিবিশেষে ডেলিভারীর তারিখের তিনদিন, সাতদিন, একমাস, দুই মাস এমনকি বছরখানেক পরেও পাসপোর্ট হাতে পাবার ব্যাপার ঘটেছে। সুতরাং বাস্তবতা মেনে নিয়ে বুদ্ধিমান ব্যাক্তি ভেরিফিকেশনের জন্য আসা কর্মকর্তার ইশারা বুঝবেন, হয়রানি কম হবে।
উপরোক্ত সব হয়রানিগুলো যে আপনার ক্ষেত্রেও ঘটবেই এমন কোন কথা নেই, সঠিক নিয়মে আবেদন করলে এবং ধাপগুলোর অসুবিধার কথা মাথায় রেখে (মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে) আবেদন করে ফেলুন, অনেক অসম্ভবের দেশে আপনার পাসপোর্টটিও যথা সময়ে, বিনা হয়রানিতে পেয়ে যেতেও পারেন। আপনার জন্য শুভ কামনা।
No comments:
Post a Comment