পাসপোর্ট করতে সকলেরই কমবেশি ঝক্কি পোহাতেই হয়। জানলে কষ্টটা করার জন্য একটা মানসিক প্রস্তুতি থাকে। চলুন জেনে নেই পাসপোর্ট পেতে প্রথম ঝামেলাটা কিভাবে পার হওয়া যেতে পারে। প্রথমে নির্ধারিত ফর্মটি পূরণ করতে হবে। ফর্ম পেতে হলে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তথ্যকেন্দ্র থেকে সংগ্রহ যাবে, অথবা www.dip.gov.bd এই ওয়েব সাইট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
[caption id="attachment_910" align="aligncenter" width="691"] Download MRP Application Form[/caption]
এবার আসা যাক ফর্ম পূরণ করার সঠিক পদ্ধতি বিষয়ে। ফর্মটি অবশ্যই ইংরেজীতে ক্যাপিটাল লেটারে পূরণ করতে হবে। শুধুমাত্র বাংলাতে লিখতে বলা যায়গায় বাংলা লেখা যাবে। ফর্ম পূরণের আগে ফর্মের শেষ পাতায় উল্লেখিত নির্দেশনাটি পড়ে নিন, এতে পূরনের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।
[caption id="attachment_911" align="aligncenter" width="768"] Instructions[/caption]
ধরা যাক আপনার হাতে একটি ফর্ম আছে চলুন পূরণ করার চেষ্টা করি।
১. ফর্ম এর উপরে যে ছবি দেবার ঘর আছে তাতে আপনার একটি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গীন ছবি (সাইজটি ফর্মে উল্লেখ আছে) অবশ্যই আঠা দিয়ে আটকাবেন, স্ট্যাপলার করা হলে বাতিল হয়ে যাবে। ডানপাশে পিতা-মাতার ছবি দেবার কথা দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। কেবলমাত্র পনের বছরের নিচে যারা তাদের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার স্ট্যাম্প সাইজের ছবি আঠা দিয়ে আটকাতে হবে।
[caption id="attachment_912" align="aligncenter" width="768"] Attach Photo[/caption]
২. আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম ইংরেজীতে (ক্যাপিটাল লেটার) লিখুন। আবেদনের প্রকৃতি এর জায়গায় যথাযথ টিক চিহ্ন দিন। আবেদনেরকৃত পাসপোর্টের প্রকৃতি আপনি যদি কূটনৈতিক কিংবা সরকারী কর্মচারী না হন তাহলে সাধারন-এ টিক দিন। পাসপোর্ট বিতরনের প্রকৃতি এর জায়গায় আপনার পছন্দের ধরনে টিক দিন, মনে রাখবেন, সাধারণ পাসপোর্টের ফি তিন হাজার টাকা এবং জরুরী পাসপোর্টের ফি ছয় হাজার টাকা।
৩. ১ নম্বর ঘরে আবেদনকারীর নাম বাংলাতেই লিখুন। ২ নম্বর ঘরে নামটা ইংরেজী লিখুন। এখন ৩ নম্বর ঘরে প্রথম অংশ হিসেবে আপনার নামটি লিখুন (গ্যাপ ছাড়া, প্রতি ঘরে একটি করে শব্দ) এবং দ্বিতীয় অংশে বংশনাম বা সারনেম লিখুন (নামটি যদি আশিকুর রহমান হয় তাহলে প্রথম অংশে – আশিকুর, দ্বিতীয় অংশে – রহমান) যদি আপনার নাম দুই এর অধিক অংশ যুক্ত হয় তাহলে শুধু টাইটেল দ্বিতীয় অংশে লিখুন (আফজাল হোসেন খান, প্রথম অংশ – আফজাল হোসেন, দ্বিতীয় অংশ – খান)। প্রথম অংশে নামের দুই অংশের মাঝে একটি ঘর ফাকা রাখতে হবে (অবশ্যইইংরেজীতেএবংক্যাপিটালে)।
[caption id="attachment_913" align="aligncenter" width="768"] Part 3 of he Form[/caption]
৪. এরপর ৭ নম্বর পর্যন্ত যথাযথভাবে ইংরেজীতে (অবশ্যই ক্যাপিটালে) পূরণ করুন।৮ নম্বরে টিক দিন আপনার বৈবাহিক অবস্থার ঘরে। ৯ নম্বর ঘরে আপনার পেশা লিখুন। আপনি সরকারী চাকুরিজীবী হলে কিংবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরিজীবী হলে এর বর্ধিতাংশটিও পূরণ করুন। এরপর ১০ নম্বর থেকে ২১ নম্বর পর্যন্ত যথাযথ তথ্য লিখুন এবং টিক চিহ্ন দিন। ২২ নম্বর ঘরে একজনের রেফারেন্স দিন যে আপনার আত্মীয় এবং জরুরী প্রয়োজনে তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব। (বড় ভাই, বোন, চাচা, মামা যে কেউ)
[caption id="attachment_915" align="aligncenter" width="768"] Reference Section[/caption]
৫. ২৩ নম্বরটি শুধু মাত্র তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যাদের পূর্বের পাসপোর্ট আছে। উল্লেখ্য পূর্বের পাসপোর্টটি ফর্ম জমা দেবার দিন সঙ্গে অবশ্যই আনতে হবে। তাই যদি বহু আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে সেটার কথা উল্লেখ না করাই ভাল। আর যদি সম্প্রতি (পাঁচ বছরের মাঝে) মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে উল্লেখ করে দেয়াই ভাল কারন পূর্বের পাসপোর্টের রেফারেন্স থাকলে পুলিশ ভেরিফিকেশন এর প্রয়োজন হয় না এবং সময়মত ডেলিভারী পাওয়া যায়। আরেকটি প্রয়োজনীয় বিষয় জানা থাকা ভাল, মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে যত বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তার প্রতি বছরের জন্য ৩০০ টাকা করে মূল ফি এর বাইরে (আলাদা স্লিপে) ব্যাংক জমা দিতে হবে। মেয়াদ থাকা অবস্থায় পাসপোর্টটি নবায়ন (হাতে লেখা হলে মেশিন রিডেব্ল এ রূপান্তর) করে নেয়া ভাল।
[caption id="attachment_914" align="aligncenter" width="768"] Passport Renewal[/caption]
৬. ২৪ নম্বরটি পুরণ করা জরুরী, অর্থাৎ মূল ফর্মের সাথে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি (দুই পাশ একই দিকে) সংযোজন করতেই হবে। যদি জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তবে জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অবশ্যই দিতে হবে। অন্যথায় আপনার আবেদন অসম্পূর্ণ বলে বাতিল হবে। এরপর সরকারী কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত, পুরনো পাসপোর্টধারী, পেশাদার, ব্যবসায়ী যার যার প্রযোজ্য কাগজটির ফটোকপি সংযুক্ত করে দেবেন এবং যা সংযোগ করা হলো ২৪ নম্বর ঘরে তা টিক দিয়ে উল্লেখ করে দেবেন।
[caption id="attachment_917" align="aligncenter" width="768"] Attached Documents[/caption]
৭. ২৫ নম্বর ঘরে ব্যাংকে টাকা জমা দেবার তথ্য টাকা জমা দেবার পর উল্লেখ করুন। টাকা জমা দেবার স্লিপটিতে রশিদ নম্বর লাল কালিতে লিখে দেয়া থাকবে। টাকা জমা দেবার স্লিপটি আঠা দিয়ে প্রথম পাতায় ছবির ডানপাশে (পিতা-মাতার ছবি থাকলে তার নিচে) আটকে দিন।
৮. এরপরের অংশে স্বাক্ষর করুন তারিখ দিন। স্বাক্ষর বাংলাতেও হতে পারে।
[caption id="attachment_916" align="aligncenter" width="768"] Signature[/caption]
৯. সর্ব শেষ পাতায় প্রত্যয়ন অংশ তাকে দিয়ে পুরণ করুন যে আপনার পাসপোর্ট ফর্ম এবং সংযোজিত সকল ফটোকপি সত্যায়িত করেছেন। তার টেলিফোন নম্বরটি অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে (ঠিকানা সহ)। পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করার নিয়মটি জানা না থাকলে বলছি, প্রথম পাতায় ছবির উপর (অর্ধেক ছবি, অর্ধের ফর্ম) সত্যায়নকারী স্বাক্ষর এবং সীলমোহর প্রদান করবেন। পিতা-মাতার ছবি সংযোজিত থাকলে তার উপরেও আলাদা ভাবে স্বাক্ষর-সীলমোহর দিতে হবে। উল্লেখ্য, ফটোকপি এবং ফর্ম একই ব্যাক্তি কর্তৃক পূরণ করতে হবে, অন্যথায় ফর্ম বাতিল হবে।
[caption id="attachment_918" align="aligncenter" width="768"] Certification[/caption]
এভাবে আপনার ফর্মটি পূরণ করা হলো। আপনি অনলাইনেও আবেদন করতে পারবেন। www.dip.gov.bd এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে আবেদন করলে লক্ষ করবেন শেষ অংশে সাবমিট করার আগে সাক্ষাতকারের তারিখটি আপনি নিজে পছন্দ করতে পারছেন। ওখানে শুক্রবার এবং শনিবার বাদে পরের পনের দিনের মাঝে আপনার পছন্দমত যে কোন একটি তারিখ উল্লেখ করে আপনি সাবমিট করুন। এরপর আপনার উল্লেখিত ই-মেইল এ আপনার ফর্মটির পূরণকৃত পিডিএফ পৌঁছে যাবে। আপনি সেটা প্রিন্ট করে নেবেন (নতুন আবেদন হলে দুই কপি, পূর্বের পাসপোর্ট থাকলে কিংবা সরকারি কর্মকর্তা হলে এক কপি) এবং সত্যায়ন করবেন। অবশ্যই ছবি আঠা দিয়ে লাগাতে ভুলবেন না, নাহলে ফর্ম অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এবং এক্ষেত্রেও সত্যায়ন ছবির উপরেই হতে হবে।
[caption id="attachment_919" align="aligncenter" width="768"] Online Application[/caption]
আপনি যদি নতুন আবেদনকারী হন তাহলে ফর্ম দুই কপি পূরণ করবেন। দুইটাই সত্যায়ন করবেন, দুইটার সঙ্গেই সত্যায়িত ফটোকপি সংযোজন করবেন। এবং যে কোন একটা কপির প্রথম পাতায় উপরে ব্যাংক জমার স্লিপটি আঠা দিয়ে আটকে দেবেন। শুধুমাত্র ফটোকপিগুলো ফর্ম এর সাথে স্ট্যাপ্লার দিয়ে আটকাবেন।
এই হলো পাসপোর্ট ফর্ম পূরনের সঠিক উপায়, অনেকেই পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বার বার ঘুরে আসেন কিংবা দালালের কাছে ধরা দেন সঠিকভাবে ফর্ম পুরণ করতে না পারার কারনে। আমার পরবর্তী লেখায় পাসপোর্ট বিষয়ক আরো টুকিটাকি উল্লেখ থাকবে। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে।
Good one, informative. Want more like this from you. Thanks.
ReplyDeletethank you bhaiya :)
ReplyDeletewill try my best!
How to Write Name: H. M. AL- MAMUN ??
ReplyDeleteTry to write full form of your Name, and don't use dots and dashes (. / -) in between your name. On the First part write full form of H M and AL MAMUN on the Second part, of course maintain a gap between parts of your name (leave a box blank). In the passport your name would be shown as
ReplyDeleteAL MAMUN
H M
hope you got your answer. Thank you for asking :)
আমার কাছে একটা হাতে লেখা পাসপোর্ট আছে, যেটার মেয়াদ শেষ হবে জুনে ২০১৪।
ReplyDeleteএখন আমি machine readable passport করার জন্নে, আমাকে কি
১) passport renewal এর জন্নে অ্যাপ্লাই করতে হবে অথবা
২) machine readable passport এর জন্নে অ্যাপ্লাই করতে হবে। please help.
আর একটি ব্যাপার, আমার ক্ষেত্রে যদি MRP এর জন্নে অ্যাপ্লাই করতে হয়, তাহলে কি আমি অনলাইনে অ্যাপ্লাই করতে পারব? কারন অনলাইন এ পুরন পাসপোর্ট এর নাম্বার দেয়ার জাইগা নাই।
ReplyDeleteধন্যবাদ। সুন্দর তথ্যভিত্তিক লেখাটির জন্য। আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলে খুশি হব।
ReplyDeleteআমার বাড়ী নারায়ণগঞ্জ। আমার বাবার mrp পাসপোর্ট করাব অতি সম্প্রতি। উনার হাতে লেখা পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৩ সালের মার্চ মাসে। তিনি একটি বেসরকারি ফার্মে চাকরি করতেন। এখন অবসর। আমার প্রশ্নগুলো হল...
১। ফর্মের ৯ (নয়) নম্বরে পেশায় অবসরপ্রাপ্ত লিখি তাহলে বরধিতাংশ লিখতে হবে? আর এ সংক্রান্ত কোন ডকুমেন্ট কি দিতে হবে?
২। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে যত বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তার প্রতি বছরের জন্য ৩০০ টাকা করে মূল ফি এর বাইরে (আলাদা স্লিপে) ব্যাংক জমা দিতে হলে, বাবার ক্ষেত্রে এক বছর ধরে ৩০০ টাকা লাগবে? (মেয়াদ শেষ হয়েছে মার্চ ২০১৩)। যদি দিতে হয় ব্যাংক ড্রাফট এ কি লিখব?
৩। নারায়নগঞ্জের সোনালী ব্যাঙ্কে কি টাকা জমা দেয়া যাবে?
প্লীজ উত্তর দিলে উপকৃত হব।
২০২৩ সালের পাসপোর্ট এর সকল প্রকার তথ্য জানতে epassport info
ReplyDeleteএই ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন