ইতিবাচক মনোভাব যেমন সাফল্যকে ত্বরান্বিত করে তেমনি নেতিবাচক মনোভাব সাফল্যকে করে বাধাগ্রস্ত। নেতিবাচকের চেয়ে ইতিবাচক কর্মকান্ড ও মনোভাব সবার কাছেই বেশি গ্রহণযোগ্য। আপনি যদি সত্যিই সফল হতে চান সেক্ষেত্রে আপনার প্রথম কাজ হবে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা এবং একই সাথে তা ধরেও রাখা।
ইন্টারনেট থেকে পাওয়া এই কৌতুক হয়ত অনেকের জানা। জুতা কোম্পানীর সেই দুজন বিক্রেতা যাদেরকে আলাদাভাবে পাঠানো হয়েছিল এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জুতার সম্ভাব্য বাজার নির্ধারন করতে। একজন এসে বলল যে ওখানে জুতার কোন বাজারই নেই। পাঁচ হাজার লোকের বসবাস সেখানে কিন্তু কেউ জুতা পায়ে দেয় না। অন্যজন বলল যে ওখানে জুতার বাজারের বিপুল সম্ভবনা কারন পাঁচ হাজার লোকের কেউই জুতা পায়ে দেয় না। একজন নিরাশাবাদী মানুষ অনেক সম্ভাবনার মধ্যেও সমস্যা খুঁজে বের করতে পারে আর একজন আশাবাদী মানুষ অনেক সমস্যার মধ্যেও খুঁজে বের করতে পারে সম্ভাবনা।
যখন আপনি কোন কাজে নেতৃত্ব দেবেন তখন ইতিবাচক মনোভাব না থাকলেও হয়তো কাজটি সম্পন্ন হবে কিন্তু আপনার ইতিবাচক মনোভাব সবাইকে তার নিজের সবচেয়ে ভাল কাজটুকু করতে উৎসাহিত করবে। আর তা মাথায় রেখেই জানাচ্ছি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার ৮টি উপায়ঃ
১. লক্ষ্যের সাথে সংগতি রেখে কাজ করুন:
কোন কাজ শুরু করার আগে ভাবুন এটি কিভাবে আপনাকে আপনার আসল লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যাবে। যদি আপনার কাজ আর লক্ষ্যের মধ্যে মিল না থাকে তবে তা না করাই ভাল। উদ্দেশ্যহীন কাজ শুধু আপনার সময় আর শক্তিই নষ্ট করবে।
২. প্রতিদিন নিজেকে পুরোনো সীমাবদ্ধতাগুলো থেকে বের করে আনার চেষ্টা করুন:
পূর্বে যতই সফলতা আনুক না কেন একই কাজ বার বার করলে তা বিরক্তির সৃষ্টি করে। সফলতা অনেকটা শরীরচর্চা করার মত,শরীরচর্চা যেমন নিয়মিত চর্চা করতে হয় সফলতা পেতে হলেও প্রতিনিয়ত নিজের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে তা ঠিক করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়।
৩. লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট রাখুন- ফলাফল নয়ঃ
সাধারণত জীবনের নানা ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং আপনি যেমন ফলাফল চান সে অনুযায়ী কাজগুলো সাজাতে হয়। কিন্তু আগে থেকে কোন সুনির্দিষ্ট ফল আশা করার মানেই হচ্ছে সেই ফল কোন কারনে না পেলে তা থেকে হতাশায় ভোগা। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করুন লক্ষ্যে পৌঁছাতে কিন্তু ফলাফল নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না।
৪. অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিনঃ
অতীতের অসফলতা নিয়ে হতাশ না হয়ে চেষ্টা করুন ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাবার। অতীতটা ভুল হোক বা শুদ্ধ, তাতে কিছু আসে যায় না। মনে রাখুন আপনি যে ফলাফল পেতে চান তা পাওয়ার পন্থা লুকিয়ে আছে আপনি যে ফলাফল ইতোমধ্যে পেয়েছেন তার মধ্যেই।
৫. ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন মানুষের সাথে মিশুন:
এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে আপনার মস্তিষ্ক আপনার অজান্তেই আপনার আশেপাশের মানুষগুলোর আচরণ নকল করতে থাকে (যার কারন হচ্ছে ‘a mirror neuron’)। এর মানে হচ্ছে ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন মানুষের সাথে মিশলে আপনার মনেও তার প্রভাব পরবে। আর নেতিবাচক মনোভাবাপন্ন মানুষের সাথে মিশলে তার প্রভাবও আপনার উপর পরবে। তাই সবসময় চেষ্টা করুন ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন মানুষের সাথে মিশতে।
৬. নিজেকে বেশি গুরুত্ব দেবেন নাঃ
আপনি যদি চান যে আপনার আশেপাশের মানুষগুলো আপনার সাথে সহজভাবে মিশবে তাহলে নিজের করা ভুলগুলো স্বীকার করে তা নিয়ে নিজেই মজা করতে শিখুন, নিজের উপর হাসতে শিখুন। যদি আপনি নিজে নিজের ভুলগুলো নিয়ে হাসতে না পারেন তবে নিশ্চিত থাকুন আপনার অবর্তমানে অন্যরা সে কাজটি অবশ্যই করে।
৭. অন্যদের অক্ষমতা সহজভাবে নিনঃ
সবার কাজ করার ক্ষমতা একই রকম হয় না। যেভাবে আপনি একটি কাজ করতে পারতেন ঠিক সেভাবে অন্য কেউ নাও করতে পারে, তাই এটি নিয়ে মন খারাপ করা ঠিক হবে না।
৮. ধন্যবাদ বলুন নিয়মিতঃ
কৃতজ্ঞতা বোধ তৈরি হবে তখনই যখন আপনি জীবনের ছোট ছোট দুঃখকষ্টগুলোকে সরিয়ে প্রাপ্তিগুলোকেই বড় করে দেখবেন। অন্যদের দেয়া উপহারগুলোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন, হোক না তা এক চিলতে হাসি।
সুত্রঃ Inc.com
No comments:
Post a Comment