পড়ন্ত বিকেল।আলোর ঝলকানি এসে চোখে লাগল।ক্লান্ত অবসাদ এ দেহ যেন লুটিয়ে পরছে। না চাকুরিটা আজ ও হলো না। কোন উপায় নেই সেই পুরনো বন্ধুই শেষ ভরসা।কাল তার কাছেই যাব।দুঃখ নিজের ইগোটা রাখতে পারলাম না। দেখা করলাম বন্ধুর সাথে। শেষ চেষ্টায় চাকুরিটা হলো।কিন্তু শর্ত হল তিন বছরে ও বাড়ি যাওয়া যাবে না। কোন উপায় নেই তাও রাজি।পারি দিলাম অজানা পথে কোন এক নির্জন দ্বীপের উদ্দেশ্য।চাকুরিটা হলো গেইট ম্যানের।ভিতরে অনেক মানুষ কাজ করে। জানলাম না এর ভিতরে কিসের কাজ।দিন গড়িয়ে মাস,বছর পেরয়।দিন দিন নতুন মানুষের আনাগোনা।কিন্তু পঙ্গু মানুষেরই আনা হয় বেশী।কিন্তু তারা আর এখান থেকে বেরোয় না।মনে নিজের অজান্তেই কৌতুহূল সৃষ্টি হলো।অনেক চেষ্টার পরে জানতে পারলাম এটা একটা হাসপাতাল।এখানে পঙ্গুদের নিয়ে গবেষণা করা হয়। পরে বন্ধুর কাছ থেকে সব জানতে পারলাম। সে বললো যে এখানে একজন ডাক্তার গবেষণা করেন।এমন কিছু প্রাণী আছে যারা তাদের অঙ্গ হারালেও পুনরায় তা সৃষ্টি হ্য়। তাইলে মানুষের ক্ষেত্রে কেন সম্ভব না।এমন কিছু প্রাণী হল হাইড্রা,টিকটিকি।এরা অঙ্গ হারালেও পুনরায় ফিরে পায়।যদি মানুষের ডিএনএ এর সাথে এসব প্রাণীর ডিএনএ মিলন ঘটানো যায় তাইলে হয়তো মানুষের ক্ষেত্রেও সম্ভব। কোলন করার কথাও চিন্তা করল। শুরু হল কোলন করার চেষ্টা। মানুষের শুক্রানুর সাথে যদি টিকটিকির ডিম্বাণু মিলানো যায় তাইলে হয়তো হারানো অঙ্গ ফিরে পাওয়া যাবে। যেই কথা সেই কাজ। কিন্তু কোন ফল পজিটিভ আসলো না। কোলন করা হলেও একটাও বাঁচল না। কোনটা দুই এক দিন। এক দিকে এই চেষ্টা অন্য দিকে মানুষের দেহে অই বিশেষ জীন ঢোকানোর চেষ্টা, যেটা হারানো অঙ্গ ফিরে পাবার জন্য দায়ী। কিন্তু তাও ব্যার্থ । উলটা যে মানুষের দেহে জীনটা ঢোকান হচ্ছে সে মারা যাচ্ছে। অনেক মানুষ মারা গেছেন তাও ডাক্তার চেষ্টা করছেন। কোলন করার পর দুইটা বাঁচল। কিন্তু এটার অবয়ব ঠিক মানুষ না। কোনটার লেজ আছে আবার কোনটার মাথা ঠিক মানুষের মত না। এদের উপরেই চলল গবেষণা। শুরু হল প্রথম টার উপর গবেষণা। লেজ কেটে ফেলা হল। কিন্তু সেটা মারা গেল না। দুই এক দিন পর দেখা গেল লেজ পুনরায় গজাল। বিজ্ঞানী খুবি খুশি। তারপর একটা হাত কেটে ফেলা হল। হাতের ক্ষেত্রেও পুনরায় হাত গজাল কিন্তু সেটার অবয়ব ঠিক থাকল না।অবশেষে কিছুদিন পর মারা গেল। বাকিটার উপরও চলল গবেষণা কিন্তু কোথায় যেন একটু গরমিল। কোনটাই বাঁচল না। ডাক্তার হতাশ হয়ে পরেছিল। কোলনে ব্যার্থ হয়ে পুনরায় গবেষণা শুরু করলেন কিন্তু এবার অন্য উপায়ে। মানুষের দেহে অই বিশেষ জীন পুশ করার মাধ্যমে। পঙ্গু মানুষের উপর চলল গবেষণা। এখানে যে সব পঙ্গু মানুষদের আনা হত তাদের উপর চলত এ গবেষণা। অনেক মানুষ মারা গেছেন এই গবেষণায়। প্রথমে দেখা যেত এ জীন দেবার পরেও কোন কাজ হত না কিন্তু সাইড ইফেক্ট করত। কেমন যেন সেই জীনটা মানুষের ডিএনএ সিকুয়েনচ এর সাথে মিলত না। কিছুদিন পর অই মানুষ মারা যেত। এতেও থামে নি তার গবেষণা সে চালিয়ে যাচ্ছে।আরও অনেক দিন গবেষণার পর দেখা গেল একজন বাঁচল। এবং তার দেহে জীন ঢুকানর আগে হাত ছিল না কিন্তু জীন দেবার পরে তার হাত গজান শুরু করল। এবার ডাক্তার খুব আশাবাদী। কিছুদিন পর লোকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠলেন। কিন্তু সেই হাত দিয়ে খুব একটা কাজ করা যেত না। ডাক্তার এতেও খুশি মানুষকে পঙ্গুত্তের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। কিছুদিন পর ঘটল বিপত্তি। হাত খসে পরে যাচ্ছে।মুহুরতেই সব কিছু পরিবর্তন। লোকটা হয়ে গেল আগের মত। সব কিছুই পণ্ড হয়ে গিয়েছিল। সবই জানলাম এখানকার গবেষণা সম্পর্কে। মনে মনে বললাম নিঃসন্দেহে এটা একটা ভাল কাজ কিন্তু এত মানুষ মারা যাচ্ছে এটা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কাম্য নয়। কিন্তু নিজেকে নিরুপায় মনে হচ্ছিল। কিছুই করার নেই চাকুরীটা চলে যাবে।এভাবে যেতে থাকল কিছু দিন। হঠাৎ একদিন রাতে পুলিশ চার দিক থেকে ঘেরাও করল। ডাক্তার পালাতে যেয়েও ধরা পরল। অনেক মানুষ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচল। মনে মনে খুশি হলাম কিন্তু আবার বললাম যদি ডাক্তার এতে সাফল্য পেতেন মানুষ পঙ্গুত্ত থেকে বেঁচে যেত। ছোট মস্তিষকে চিন্তা করলাম হয়ত ইনি পারলেন না কিন্তু বিজ্ঞান একদিন ঠিকিই এই অসম্ভবকে সম্ভব করবে।
Name: Md. Tanjijul Haque
Department: Biochemistry & Molecular Biology
Reg: 2011433023
Email: tonmoyhaq@yahoo.com
Mobile No: 01725727722
No comments:
Post a Comment