Monday, December 23, 2013

চলছে জব্বর কেনাকাটার মৌসুম, বাড়ছে ভুয়া ই-কমার্স সাইটের দৌরাত্ম্য: যেভাবে নকল পণ্যে সয়লাব প্রতারক ওয়েবসাইট থেকে বাঁচবেন

অবকাশ মৌসুমে ক্রেতারা ঝুঁকছেন কেনাকাটার দিকে, প্রতারকরাও কিন্তু বসে নেই।

যেহেতু বছরের এ সময়টাতে খুচরা বিক্রেতারা সর্বোচ্চ মূল্যছাড় দিয়ে থাকেন সেহেতু প্রতারকরাও এ সময়টাকেই বেছে নেয় ভুয়া অনলাইন সাইটের মাধ্যমে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য।

ভুয়া ই-কমার্স সাইটগুলো আজকাল ভালোই কামিয়ে নিচ্ছে। কারণ ইন্টারনেটের এ যুগ প্রতারক ব্যবসায়ীদের ফুলে-ফেঁপে উঠতে যথেষ্ঠ সহায়ক।

মার্কমনিটরের তথ্যানুযায়ী, অনলাইনে বিশ্বজুড়ে নকল ও পাইরেটেড পণ্যের রয়েছে ৩৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশাল বাজার। উল্লেখ্য, মার্কমনিটর বিভিন্ন ব্র্যান্ডপণ্যের সুরক্ষায় সেবা ও সমাধান প্রদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান।

মার্কমনিটরের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ফ্রেড ফেল্ডম্যান অনলাইনের ভুয়া মার্কেটের একটি চিত্র তুলে ধরেছেন এবং সুকৌশলী স্ক্যামারদের চিহ্নিত করার জন্য ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় টিপস দিয়েছেন। আর এ টিপসগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরছে iferi.com ।

অবকাশ মৌসুমে ভুয়া শপিং সাইটগুলো কতটা তৎপর থাকে?

নকল পণ্যের কেনাবেচা এ মৌসুমে অন্যান্য পণ্যের মতোই বেশি হয়ে থাকে। বৈধ পণ্য বিক্রয়কারী ও নকল পণ্য বিক্রয়কারী উভয় সাইটের বিক্রিই এ সময়ে বেশি হয়ে থাকে।

এ মৌসুমে প্রতারকরা কী কৌশল অবলম্বন করে?

বৈধ পণ্য বিপণনকারীদের মতোই প্রতারকরা ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেরা কৌশলগুলোই ব্যবহার করে থাকে। ক্রেতারা সাধারণত যে শব্দগুলো দিয়ে সার্চ করে প্রয়োজনীয় পণ্য খুঁজে বের করে সে ধরণের শব্দ তারাও তাদের সাইটে যুক্ত করে ক্রেতাদের নিজেদের সাইটের দিকে নিয়ে আসে। কেনাকাটার এ মৌসুমে তারা আরো যেটা করে সেটা হলো ক্রেতাদের ক্রয়ে উৎসাহিত করতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হানা দেয়। বিশেষ করে সেই মাধ্যমগুলোতে যেগুলোতে প্রচুর সম্ভাব্য ক্রেতা ভিড় করে যেমন- Pinterest।

প্রতারকরা পিন্টারেস্টের মতো সাইটগুলোতে ব্র্যান্ডের সাইট থেকে নেয়া আসল পণ্যের ছবি দেয় কিন্তু তাকে লিংক করে রাখে ভুয়া পণ্য বিক্রয়কারী সাইটের সাথে। নিজের চোখে দেখার জন্য আপনার পছন্দের কোনো জুতা বা খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ডের পণ্যের নাম দিয়ে সার্চ করে দেখতে পারেন। আর, পণ্যের আগে cheap বা discount শব্দগুলো জুড়ে দিতে ভুলবেন না যেন। বহু ভুয়া সাইট হাজির হয়ে যাবে। প্রতারক বিক্রেতারা এ বিষয়ে সিদ্ধহস্ত। এই সময়টাতে সবাই যখন সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে ব্যস্ত তখন তারাও ব্যস্ত নকল ও অবৈধ পণ্য ক্রেতাদের গছিয়ে দিতে।

অবকাশ মৌসুমে কোন কোন পণ্যে সাধারণত ছাড় দেয়া হয়?

জুতা, তৈরি পোশাক, বিলাসদ্রব্য ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য ডিজাইন ভিত্তিক পণ্যে এই সময়টাতে ছাড় দেয়া হয়। আর তাই প্রতারকদের টার্গেট হয় এসব পণ্যকে ঘিরেই। এ সকল ক্যাটাগরির নামীদামী ব্র্যান্ডগুলোই প্রতারকদের মূল লক্ষ্য। “really big brand” “cheap” “Christmas” এসব কি-ওয়ার্ড একত্রে লিখে সার্চ দিলে ভুয়া পণ্যে বিক্রির একগাদা সাইটের ঠিকানা এসে হাজির হবে। ইলেক্ট্রনিক পণ্যও কিন্তু প্রতারকদের অন্যতম টার্গেট।

কীভাবে গ্রাহকরা ভুয়া ই-কমার্স সাইটগুলোকে চিহ্নিত করতে পারবে?

  • মূল্য: মূল্য যদি অপ্রত্যাশিত রকমের কম হয় তাহলে তা সন্দেহজনক। গ্রাহককে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

  • সাইটটি চেহারা: কিছু কিছু সাইটকে প্রথম দর্শনে পেশাদার মনে হলেও ব্র্যান্ড-নকলকারী ভুয়া সাইটগুলো সাধারণত About বা FAQ পেইজের সতর্ক থাকে না। সেখানে গেলে তাদের জারিজুরি ফাঁস হয়ে যেতে পারে।

  • অতিরিক্ত মূল্যহ্রাসের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন: অপ্রত্যাশিত রকমের ডিসকাউন্ট কিন্তু সন্দেহজনক। প্রতারকরা দামের ব্যাপারে খুব ছাড় দিতে চাইলেও পণ্যের মান ও টেকার প্রশ্নে ইতস্তত করতে থাকে।

  • দিন কে দিন নকল পণ্য সরবরাহকারী সাইটগুলো নিজেদের পরিশীলিত ও বৈধ চেহারা দিয়ে যাচ্ছে। একজন সাবধানী ক্রেতার উচিৎ হবে সাইটের লিংকগুলো (প্রাইভেসি পলিসি, অ্যাবাউট আস, রিটার্ন পলিসি ইত্যাদি) ভালোভাবে চেক করা। সেই সাথে সার্চ ইঞ্জিনে ঐ সাইটের নামের সাথে “Scam” শব্দটি জুড়ে দিয়ে সার্চ করে দেখা যে পূর্বে অন্য কোনো ক্রেতা ঐ সাইট সম্পর্কে কোনো অভিযোগ করেছেন কিনা। অনেকগুলো ব্র্যান্ড তাদের সাইটে নকল পণ্য বিক্রয়কারী সাইটগুলোর তালিকা দিয়ে রাখে। সেগুলোও চেক করা যেতে পারে।

  • রিটার্ন পলিসি ভালো করে জেনে নিতে হবে। খ্যাতিসম্পন্ন সাইটগুলো প্রথমেই স্পষ্ট করে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য দিয়ে দেয়।

  • প্রাইভসি পলিসি নিয়ে ঘেঁটে দেখতে হবে। নকল ব্র্যান্ডের পণ্য বিক্রয়কারী সাইটগুলো শক্তিশালী প্রাইভেসি পলিসি তৈরির পেছনে সময় ব্যয় করে না।

  • নাম-ডাক কেমন? ঐ সাইটের নাম কি স্ক্যাম সতর্ককারী কোনো সাইটের তালিকায় রয়েছে? “vendor+scam” লিখে সার্চ করে দেখতে হবে কী ফল আসে। সার্চ দেয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে: প্রতারকরা নিজেদের গা বাঁচানোর জন্য মৌসুম পরিবর্তনের সাথে সাথে কি-ওয়ার্ড বদলে ফেলে। মার্কমনিটরের একটি অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, মৌসুম ভিত্তিক ব্যবহৃত সার্চ টার্মগুলো দিয়ে সার্চ করলে যে সকল পেইড অ্যাড হাজির হয় তার ১৭% ই সন্দেহজনক নকল ও পাইরেটেড পণ্যের সাইট। আর পণ্যের নামের আগে “cheap” অথবা “discount” শব্দগুলো জুড়ে দিয়ে সার্চ করলে শতকরা ৫০ ভাগ পাইরেটেড বা নকল পণ্যের সাইট এসে হাজির হয়।

  • অ্যাড্রেসবারে ওয়েবসাইটের নামের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রতারকরা প্রায়ই ইচ্ছা করে সম্ভাব্য ভুল বানানে নামকরা ব্র্যান্ডের নাম.com এভাবে ডোমেইন কিনে রাখে যাতে করে অ্যাড্রেসবারে টাইপ করার সময় ভুল হলে সরাসরি তাদের ভুয়া ই-কমার্স সাইটে গ্রাহক পৌঁছে যায়। টাইপের ভুলে অনেক সময় অ্যাডাল্ট সাইটেও চলে যেতে হতে পারে। এ সবই প্রতারকদের কারসাজি।


নিজের কষ্টের পয়সা দিয়ে মানসম্মত আসল পণ্যটি কেনাই তো ভালো তাই না? গ্রাহকগণ যেন কখনোই ভুয়া পণ্য বিক্রিকারী কোনো ই-কমার্স সাইট দ্বারা প্রতারিত না হন সে লক্ষ্যেই আজকে iferi.com কর্তৃক এ আয়োজন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর iferi.com ২০১১ সাল থেকে বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। Iferi সব সময় চায় গ্রাহকদের কাছে গ্যারান্টি সহকারে মানসম্মত পণ্যটি পৌঁছে দিতে। পণ্যের মানের সাথে কখনোই আপোষ না করায় সম্মানিত গ্রাহকরাও iferi.com এর ওপর আস্থা রাখছেন।

No comments:

Post a Comment