তীব্র পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছে নিহানের। পানি, পানি বলে কিছুক্ষন চেচাল কিন্তু কেউ তাকে পানি এনে দিল না। সামনে কিছু মানুষের অবয়ব দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারছে না সে কোথায়। এটা তো পৃথিবী হতে পারে না। তার স্পেসশিপে মারাত্মক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। মারাত্মক ঝাকুনিতে বাম হাতে তীব্র আঘাত পায় সে। তারপর কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়ে জ্ঞান হারায়। বাম হাতে আঘাতের যন্ত্রনা এখনো টের পাচ্ছে। কারা যেনো তার বাম হাত কিছু একটা দিয়ে ঢেকে রেখেছে। ৫ বছর আগে পৃথিবী থেকে পাড়ি জমায় নিহান। উদ্দেশ্য ছিল নতুন সভ্যতার খোজ করা। কিন্তু স্পেসশিপের ক্রু মেম্বারদের অভ্যন্তরীন হানাহানিতে যান্ত্রিক গোলযোগের শিকার হয় তার স্পেসশিপটি। নিহান এখন কোথায় কিছুই জানে না সে।
ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকাল নিহান। আলোর উজ্জ্বলতা কমতে সামনের অবয়বটা পরিষ্কার হল তার কাছে। মানুষের অবয়ব বিশিষ্ট্য একটি প্রানী। চুলবিহীন মাথা, ধুসর গাত্র বর্ন, বড় বড় ডিম্বাকৃতির চোখ। কি একটা ভাষায় নিহানকে কিছু একটা বলল। কিন্তু নিহান কিছু বুঝতে পারছে না। তাহলে কি নতুন কোনো সভ্যতা খুজে পেয়েছে সে? যে মিশন নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে এসেছিল সেটি সফল। কিন্তু এখন সে নিজের ঘরে কিভাবে ফিরবে? যত গুলো ভাষা জানে সব গুলোতে সে কথা বলল। কিন্তু সামনের ওই প্রানীটি কিছুই বুঝতে পারলো বলে মনে হয় না। শুধু ভাবলেশবিহীন ভাবে নিহানের দিকে তাকিয়ে রইলো। নিহান কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না।
একটু পর নিহান সুস্থ অনুভব করল। সে দাঁড়িয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাইরে বের হল। প্রানীটি তাকে বাধা দিল না। শুধু বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। বাইরে বের হয়ে নিহান দেখলো পাহাড় জঙ্গল ঘেরা জায়গা। গ্রহের পরিবেশ পৃথিবীর মতই। আশে পাশে শুধু ঝোপ ঝাড় আর জঙ্গল বলে নিহান ভাবল এই প্রজাতি হয়ত এখনো ততটা উন্নত হয় নি। কিন্তু তার ভুল ভাংতে দেরি হল না। কিছুক্ষন পর আকাশ বাতাস কাপিয়ে নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর অনেকগুলো বাহন তাকে ঘেরাও করল। অস্ত্রে সজ্জিত কিছু প্রানী নিচে নেমে আসলো। নিহানকে নিয়ে তারা একটি বাহনে উঠালো।
কতক্ষন সময় পার হয়েছে নিহান কিছুই জানে না। তাকে একটি বেডে শুইয়ে রাখা হয়েছে। কিছু যন্ত্রপাতি নিহানের শরীরে লাগানো। তার ধারনা তাকে নিয়ে এই প্রানী গুলো পরীক্ষা চালাচ্ছে। প্রানী গুলো নিষ্ঠুর নাকি দয়াশীল এই কথা যখন নিহান ভাবছে তখন দরজায় খুট করে শব্দ হল। নিহান সে দিকে তাকিয়ে দেখল একটি প্রানী তার দিকে এগিয়ে আসছে। তার কাছে এসে অবিকল পৃথিবীর ভাষায় প্রানীটি বলল, ‘এখন কেমন বোধ করছ?’ এই প্রানীর মুখে পৃথিবীর ভাষা শুনে নিহান অবাক হল। সে বিড়বিড় করে বলল, ভাল। তার বিস্ময়ের কারন অনুমান করতে পেরে প্রানীটি বলল, ‘আমার নাম ওরি। আমাদের প্রজাতির নাম রুটাস। ২ দিন আগে আমাদের প্রতিরক্ষা সেন্সরে তোমার স্পেসশিপ ধরা পরে। কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে তোমার স্পেসশিপ আমাদের গ্রহে আছড়ে পরে। আমাদের গ্রহের বায়ুমন্ডলের ঘর্ষনে তোমার স্পেসশিপের সিগনাল প্রেরনকারী যন্ত্র, সেন্সর সব নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমাদের সেন্সরে তোমার অবস্থান আমরা হারিয়ে ফেলি। তুমি যে যায়গায় ছিলে সেটা ছিল অনগ্রসর উপজাতিদের এলাকা। আমাদের নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী তোমাকে এই খানে নিয়ে আসে। তুমি এখন আমাদের গ্রহের সবচেয়ে সুরক্ষিত গবেষনা কেন্দ্রে আছ।'
‘কিন্তু তোমরা আমার ভাষা কিভাবে জানো?’ নিহানের এর প্রশ্নের জবাবে ওরি বলল, ‘তোমার দেহের নিয়ন্ত্রনকারী ও তথ্য সংরক্ষনকারী অংগ যেটাকে তুমি মস্তিষ্ক বল, আমরা সেই মস্তিষ্কের ভিতরকার সব তথ্য বের করে ফেলেছি। তোমার মস্তিষ্কের তথ্য গুলো বিশ্লেষন করে আমরা জানতে পারলাম তুমি কে, কোথা থেকে এসেছ এবং তোমার ভাষা। আমরা প্রযুক্তিতে তোমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে।' নিহান জিজ্ঞেস করল, ‘আমার স্পেসশিপে ৪০ জন ক্রু মেম্বার ছিল। তারা কোথায় জানো?’ ওরি বলল, ‘তুমি ছাড়া আর কেউ বেচে নেই।' এটা শুনে নিহানের মন অনেক খারাপ হয়ে গেল। যদিও তার ক্রু মেম্বারদের ঝগড়া আর হানাহানির জন্য তার শিপ নষ্ট হয়ে গেছে এবং সে বেচে গিয়েছে অল্পের জন্য, তবুও ওদের জন্য নিহানের তীব্র মন খারাপ হল।
হঠাত রুমে ২ জন সশস্ত্র সৈন্য প্রবেশ করল। তাদের পিছনে আরেকটি লোক আসলো। ওরি তখন বলল, ‘নিহান, উনি জেনারেল কিয়ো। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান’।
‘কেমন আছ?’ কিয়ো নিহানকে জিজ্ঞেস করল।
‘ভাল। তবে একটু ঘোরের মধ্যে আছি।'
‘তোমরা অনেক বিচিত্র প্রজাতি।'
‘কেন?’
‘তোমরা জ্ঞান বিজ্ঞানে অনেক উন্নতি করেছ। কিন্তু একই সাথে তোমরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করছ। নিজেরা নিজেদের রক্ত ঝরাচ্ছ। এই গুলো বন্ধ না করলে তোমরা কখনই প্রকৃত ভাবে উন্নতি করতে পারবে না।'
‘সব মানুষই খারাপ না।'
‘তুমি ভাল মানুষ নাকি খারাপ?’
‘আপনার কি মনে হয়?’
‘তোমার মস্তিষ্ক ঘেটে যতটুকু জানলাম তোমার স্পেসশিপ বিধ্বস্ত হয়েছে নিজেদের মাঝে হানাহানির কারনে। সেই হানাহানির মাঝে তুমিও ছিলে।'
‘ওটা একটা দূর্ঘটনা ছিল।'
‘তোমার প্রজাতি দূর্বল যুক্তি দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে। ডক্টর ওরির রিপোর্টে পড়লাম। এখন দেখছি সত্যিই।'
‘আমাকে আমার গ্রহে পাঠানোর ব্যাবস্থা করুন।'
‘এত তাড়াতাড়ি নয়।'
‘আমার উপর কি আরো গবেষনা চালানো হবে?’
‘তোমার উপর সব গবেষনা করা হয়ে গেছে। কিন্তু তোমার প্রজাতির বাকিদের উপর কিছু গবেষনা বাকি আছে। তোমার মস্তিষ্ক এবং জীনোমের তথ্য বিশ্লেষন করে জানা গেছে তোমরা আমাদের জন্য বিপদজনক।'
‘বিপদজনক!’
‘হ্যা। তোমরা নিজেদের চেয়ে বুদ্ধিমান কাউকে সহ্য করবে না। আর তোমরা ধ্বংস করতে অনেক পারদর্শী। প্রযুক্তিতে যথেষ্ট উন্নতি সাধনের পর তোমরা নিজেদের চেয়ে বুদ্ধিমান প্রানীকে মেরে ফেলে মহাবিশ্বে একক ক্ষমতাধর হতে চাইবে। তোমাদের সে সুযোগ দেয়া হবে না। আমাদের রণতরী গুলো আমার নির্দেশের অপেক্ষায় আছে। আগামী কালের মধ্যে আমরা তোমাদের গ্রহে সামরিক অভিযান চালাবো।'
‘কিন্তু একটু আগে আপনিই বলেছিলেন হানাহানি বন্ধ না করলে কেউ প্রকৃত ভাবে উন্নত হয় না। আর নিছক অনুমানের উপর ভিত্তি করে আপনি এত বড় হত্যাযজ্ঞ কেনো করবেন?’
‘তোমরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি কর। আমরা কখনো নিজেদের মধ্যে হানাহানি করি না। তোমরা নিজেরা ধ্বংস হও এবং অন্যকেও ধ্বংস করো। মহাবিশ্বে তোমাদের প্রয়োজন নেই। আর তোমরা সুযোগ পেলে আমাদের তথা নিজেদের চেয়ে বুদ্ধিমান কোনো প্রানীকে হত্যা করবে এটা অনুমান নয়, এটা নির্ভূল হিসাব। তোমার জীনোম থেকে মানব প্রজাতি সম্পর্কে যে সব তথ্য পাওয়া গেছে তার মাঝে এটি একটি। এমনকি তোমাদের নিজেদের প্রজাতির মধ্যে যারা বেশি বুদ্ধিমান তাদের কম বুদ্ধিমান লোকেরা হিংসা করে। বুদ্ধিতে তোমাদের চেয়ে এগিয়ে, হোক সেটা তোমাদের নিজের প্রজাতি বা হোক সেটা অন্য প্রজাতি, তোমরা কখনো তার ভাল চাও না। তোমরা নিজেদের চেয়ে বুদ্ধিমান সত্তার ধ্বংস চাও।'
‘আমার গ্রহে অনেক নিরাপরাধ মানুষ রয়েছে। আমার গ্রহে অনেক মানুষ আছে যারা বুদ্ধিমান লোকদের কদর করে।'
‘আমাদের অস্তিত্বের জন্য যারা হুমকি তাদের সবাইকে ধ্বংস হতে হবে।'
‘তাহলে আমাকে আমার গ্রহে পাঠিয়ে আমাকে সহ ধ্বংস করুন।'
‘না। তোমাকে আমাদের গ্রহে রেখে দেয়া হবে তোমার গ্রহের শেষ চিহ্ন হিসেবে’।
‘নাহহহ’, বলে আর্তনাদ করে উঠল নিহান।
জেনারেল কিয়ো ও ডক্টর ওরি কক্ষ থেকে বের হয়ে এল। একা রুমে নিহান অসহায় ভাবে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। তার গ্রহ, তার গ্রহের সব মানুষ, সবাইকে ধ্বংস করা হবে। সে কিছুই করতে পারছে না। দুচোখ ফেটে পানি আসছে তার। তাকে কিছু একটা করতে হবে। কিন্তু কিভাবে সে এত উন্নত প্রানীদের মোকাবিলা করবে। তাকে সাহায্য করার কেউ নেই। সে একা।
কতক্ষন ঘুমিয়ে ছিল নিহানের মনে নেই। চোখ খুলে দেখল ডক্টর ওরি তার সামনে দাঁড়ানো। ওরি নিহানের শরীর থেকে যন্ত্রপাতি গুলো খুলে বের করলো। তারপর নিহানকে তার সাথে চুপচাপ আসতে বলল। ঘটনার আকস্মিকতায় হত বিহবল নিহান ওরিকে অনুসরন করলো। ওরি নিহানকে একটি কক্ষে প্রবেশ করিয়ে তাকে একটি পোশাক দিল, সামরিক বাহিনীর পোশাক। এই পোশাকে নিহানের সম্পূর্ন দেহ ও মাথা ঢেকে যাওয়ায় কেউ তাকে এখন চিনতে পারবে না। ওরি নিহানকে কম্পিউটারের মত দেখতে একটি যন্ত্র দিল। সে বলল, ‘নিহান, এই যন্ত্রটিতে আমাদের স্পেসশিপ চালানোর নিয়ম দেয়া আছে। তোমার গ্রহ থেকে কয়েক আলোক বর্ষ দূরে বসবাসযোগ্য একটি গ্রহ আছে। এই শিপ নিয়ে তোমার গ্রহে যাও। যতজনকে পার বাচিয়ে ওই গ্রহে পালিয়ে যাও। কিয়োর নিষ্ঠুরতা আমি থামাতে পারবো না। কিন্তু তোমার প্রজাতি যেন বিলুপ্ত না হয়। যাও, জলদি যাও। কিয়োর বিশাল রণতরী বাহিনী তোমার গ্রহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়েছে কিছুক্ষন আগে।'
নিহান কি করবে বুঝতে পারছে না। তবে কিছু মানুষকে বাচানোর একটা সুযোগ তার হাতে আছে। তাকে যে করেই হোক পৃথিবীতে যেতে হবে। তারা ২ জন একটি করিডোর ধরে হাটছে। করিডোরের শেষ মাথায় একটি স্পেসশিপ দেখতে পেল নিহান। ওরিকে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় জানালো। স্পেসশীপে উঠে নিহান আবিষ্কার করলো পৃথিবীর স্পেসশিপের সাথে এর আকাশ পাতাল পার্থক্য। শুধু তাই না, এটি আলোক গতিতে চলতে পারে। পৃথিবীর কো অর্ডিনেট প্রবেশ করিয়ে অটো পাইলট মুডে স্পেসশিপটা সেট করলো সে। স্পেসশিপের বিশাল ইঞ্জন গর্জে উঠলো। আলোক গতিতে কয়েক মিনিটেই পৃথিবীতে পৌছে যাওয়ার কথা তার।
প্রায় আধা ঘন্টা পর যখন নিহানের স্পেসশিপ সৌর জগতে প্রবেশ করে পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে লাগলো তখন দূর থেকে কিয়োর রণতরী গুলোর ধ্বংসযজ্ঞ নিহানের চোখে পড়ল। চারিদিক থেকে বিশাল বিশাল রণতরী তার পৃথিবীকে ঘিরে রেখে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। নিহান পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করলো। নিজেদের গ্রহের একটি স্পেসশিপকে পৃথিবীতে প্রবেশ করতে দেখে রণতরীর সৈন্যরা অবাক হল। তারা বারবার এই স্পেসশিপের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলো। কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো সাড়া নেই। রণতরীর কমান্ডার ব্যাপারটা জেনারেল কিয়োকে জানালেন। কিয়ো বুঝতে পারলো ওই স্পেসশিপে কে আছে। তাই সেটিকে ধ্বংস করার নির্দেশ দিল সে। সাথে সাথেই একটি রণতরী থেকে নিহানের স্পেসশিপ লক্ষ্য করে মিসাইল ছুড়ে দেয়া হল। নির্ভুলভাবে নিশানায় আঘাত করলো মিসাইলটি। পৃথিবীর সব প্রানী মারা গেছে বলে উল্লাস শুরু হয়ে গেল রণতরী গুলোতে। জেনারেল কিয়ো আর তার বাহিনী বিপদজনক মানব প্রজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে নিজের গ্রহে ফিরে গেলেন।
নিহানের স্পেসশিপের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থার কারনে মিসাইলের আঘাতে সম্পূর্ন ধ্বংস হয়নি স্পেসশিপটি। নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সজোরে পৃথিবীর মাটিতে আছড়ে পরে চূর্ন বিচূর্ন হয়ে গেল সেটি। খুব বাজে ভাবে আহত হয়ে নিহান খুড়িয়ে খুড়িয়ে স্পেসশিপের দরজা খুলে পৃথিবীর মাটিতে নামল। চারিদিকে যতদুর চোখ যায় শুধু ধ্বংসস্তুপ। পৃথিবীর একটি প্রানীও রেহাই পায়নি কিয়োর হাত থেকে। ঢুকরে কেদে উঠলো নিহান। বিশাল এই পৃথিবীতে সে এখন একা। সম্পূর্ন একা। নিঃসঙ্গ অবস্থায় সে একা বেচে থাকবে নাকি আত্মহত্যা করবে? জানে না সে, কিছুই জানে না। অশ্রুভেজা চোখে অস্তমিত সূর্যের দিকে তাকিয়ে রইল সে। এত ধ্বংস যজ্ঞের মাঝেও অস্তমিত সূর্যের লাল আভা তার কাছে অনেক সুন্দর মনে হল।
লেখকঃ মো. শফিকুল ইসলাম
আইপিই
১/২
ভাল লাগল
ReplyDeleteaverage.
ReplyDelete