Tuesday, December 10, 2013

মহাজাগতিক সংযোগঃ দি ডিভাইন ম্যাট্রিক্স

মিনহাজ ইসলাম


সিইপি ৩/২


 

 

Reality exists only where the mind creates a focus____ buddha

প্রেমে ‘ব্যর্থ’ শব্দটা হয়তো যথার্থ না। প্রেম কোন প্রচেষ্টা না বরং সুপরিকল্পিত সৃষ্টি; জীবনের পথে নতুন সংযোজন। কোন নতুনত্বই ক্ষুদ্র নয়। তবুও ধরা যাক কোন পুরনো দালানের জীর্ণ বারান্দায় বসে আছে আপাত সাধারণ এক যুবক যে হাত বাড়ালেই খুঁজে পায়না আরেকটি প্রিয় হাত, যার হৃদয়ের গর্জন সভ্যতার কোলাহলের চেয়ে নগণ্য। নিরন্তর দেখে যাচ্ছে দিবাস্বপ্ন, জীবনকে বদলানোর স্বপ্ন, পরিচিত চুলের ভাঁজে নাক ডুবানোর স্বপ্ন। জ্ঞানী বলে এসব অর্থহীন, তার কিছুই নেই অবশিষ্ট। অথচ তার আবেগ ছিল, বিশ্বাস ছিল, অনুভূতির তীব্রতা ছিল, এসব কি সত্যিই কিছু নয়! অথবা এক উঠতি তরুণীর কথা বলি, যার ঘরে একটাই আয়না। তরুণী প্রতিদিন অসংখ্যবার ঘুরেফিরে নিজেকে দেখে কিন্তু প্রতিবারই তার নিজেকে আগের চেয়ে সুন্দরী মনে হয়। সত্যিই কি এভাবে সে সুন্দরী হচ্ছে! জ্ঞানী বলে এসব বিভ্রম, তার কিছুই নেই। অথচ তার কল্পনা ছিল, সেটাকি সত্যিই কিছু নয়?

শতাব্দী প্রাচীন মানবীয় অনুভূতিকে যখন স্থুল সভ্যতা বিসর্জন দিয়েছে অত্যন্ত নির্মম নিষ্ঠুরতার সাথে তখনই বিজ্ঞানের পরিচয় হয় এক ভিন্ন জগতের সাথে। অস্পষ্ট সে জগতে বিচরণ করতে গিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে এক ভিন্ন বাস্তবতা। বহুবছর ধরে বিজ্ঞানের জগতে দুটি শাশ্বত সত্য ছিল।

১) শূন্যস্থান শুধুই শূন্য।

২)মহাজগতের বাহ্যিক গঠনের উপর একটি সচেতন মস্তিষ্কের কোন প্রভাব নেই।

অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে দুটি তথ্যই সম্পূর্ণ ভুল। প্রথমত শূন্যস্থান বলতে আমরা যা বুঝি তা মোটেও শূন্য না বরং অবিচ্ছেদ্য এনার্জি ফিল্ড দ্বারা পূর্ণ। দ্বিতীয়ত একটি সচেতন (conscious ) সত্ত্বা মোটেও কোন অকার্যকর অংশ নয়। প্রথমে তিনটি প্রস্তাবনা দেখা যাক যা পরে ব্যাখ্যা করা হবে।

** একটি অবিচ্ছেদ্য এনার্জি ফিল্ড দ্বারা আমাদের মহাবিশ্ব গঠিত।

** আমাদের দেহ এবং বস্তুজগত এই এনার্জি ফিল্ড হতে উদ্ভুত

**চেতনা(consciousness) এবং পর্যবেক্ষণ কোয়ান্টাম ‘সম্ভাবনা’ কে বাস্তবতায় রুপান্তর করে।

তার আগে একটি ঘটনার দিকে নজর দেয়া যাক। ১৫ই জুন ২০০৫ সালে আল্বারতা ক্যানাডা নামে একজন লোক কোনরূপ শারীরিক ক্ষতি ছাড়াই জলন্ত কয়লার উপর দিয়ে প্রায় ২২০ ফুট হেঁটে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। কয়লার তাপমাত্রা ছিল ১৭০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট, যে তাপে একজন সুস্থ মানুষ পুড়ে ছাই হয়ে যাবার কথা। এ সকল অসংখ্য বিস্ময়কর ঘটনার রেকর্ড দেখা যায়। চিরাচরিত পদার্থবিদ্যা যার ব্যাখ্যা দিতে সমর্থ হয়নি।কিন্তু আধুনিক পদার্থবিদ্যা আমাদের ভিন্ন কথা বলে।

বিজ্ঞানের জগতে মহান কবি আইনস্টাইন বলেন, ‘মানুষ মহাবিশ্বে এতোই তুচ্ছ অংশ যে আমরা যদি মহাবিশ্বের অতি ক্ষুদ্র অংশ সম্পর্কেও জানতে পারি তবুও নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারি।’ আইনস্টাইনের ভাবনায় একটি বুদ্ধিমান সত্ত্বা মহাজগতের সাপেক্ষে মূল্যহীন। কিন্তু তার একই সময়ের আরেকজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী জন উইলারের মতে, ‘এমন কোন মহাবিশ্ব অসম্ভব যেখানে কোন দর্শকসত্ত্বা (মানুষ) থাকবে না কেননা মহাবিশ্ব গঠনের প্রধান শর্ত হচ্ছে কোন সচেতন সত্ত্বার বুদ্ধিদীপ্ত পর্যবেক্ষণ।’উইলার আরও বলেন, ‘মহাবিশ্ব অসম্পূর্ণ, যার সম্পূর্ণতায় আমরা সহযোগিতা করছি।’ উইলারের এমন বক্তব্য একসময় শুধুই দর্শন ভাবা হলেও কোয়ান্টাম বিজ্ঞানের অত্যাশ্চর্য অগ্রগতি উইলারকে একজন মহান বিজ্ঞানীর আসনে বসিয়েছে। এবার কোয়ান্টাম জগতের বিস্ময়কর বাস্তবতার সাথে পরিচিত হওয়া যাক।

একটি কোয়ান্টাম কণা ( ফোটন, ইলেকট্রন) যা দিয়ে মানুষসহ বস্তুজগত গঠিত তার কিছু অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যে আলোকপাত করা যাক। একটি কোয়ান্টাম কণা একই সময়ে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান অবস্থায় থাকতে পারে।একই সময়ে অসংখ্য স্থানে অবস্থান করতে পারে। একটি পরীক্ষায় একটি কোয়ান্টাম কণা নেয়া হয়। ধরা যাক কণাটিকে একটি অবস্থান থেকে অন্য অবস্থানে নেয়া হল অর্থাৎ অতীত থেকে বর্তমানে আনা হল এবং এতে কিছু পরিবর্তন ঘটানো হল। আশ্চর্যজনকভাবে গবেষকেরা লক্ষ্য করেন সাথে সাথে কণাটির আগের অবস্থাও পরিবর্তিত হয়ে গেছে যদিও তা ঘটে গেছে অতীতে। কণাটি বর্তমানে থেকে তার অতীতের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে এবং তার অতীতকে পরিবর্তন করতে পারছে।

d

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোয়ান্টাম কণা দ্বারা বস্তুজগত এবং আমরা গঠিত তবে কি আমাদের ক্ষেত্রেও এমনটি সত্য কিনা। গবেষকদের মতে সত্য না হবার কোন যৌক্তিক কারণ নেই।

আমরা যদি এনার্জি ফিল্ড থেকে উদ্ভুত হই তবে কিভাবে এনার্জি ফিল্ড হতে বস্তুর উদ্ভব ঘটে, কি বলের দ্বারা কোয়ান্টাম কণাগুলো সংঘবদ্ধ হয়ে দৃশ্যমান বস্তুর উদ্ভব ঘটায় তা জানা প্রাসঙ্গিক। এর উত্তর হচ্ছে ‘চেতনা’ বা ‘consciousness’। বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে তা ব্যাখ্যা করা হবে কিন্তু তার আগে একটি ছোটো বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া যাক। আমরা কি কখনো অবাক হইনা কেন বিজ্ঞানীরা এখনো পদার্থের ক্ষুদ্রতম কনিকা খুঁজে পায়নি অথবা কেন মহাবিশ্বের শেষ প্রান্ত খুঁজে পাওয়া যায় না। ল্যাবরেটরীতে যখন একটি ক্ষুদ্র কনাকে অন্যটির সাথে সংঘর্ষ ঘটানো হয় তবে তা ভেঙ্গে গুনিতক হারে নতুন কনার উদ্ভব ঘটে।কারন হচ্ছে আমাদের ‘চেতনা’ বা কন্সাসনেস সবসময় কিছুর অস্তিত্ব অনুসন্ধান করে এবং সেই বল এনার্জি ফিল্ডকে সংঘবদ্ধ করে বস্তু বা ম্যাটারের সৃষ্টি করে। ১৯৪৪ সালে কোয়ান্টাম বিজ্ঞানী মার্ক্স প্লাঙ্ক বলেন, ‘আমরা সাধারণত চিন্তা করি যে সকল বস্তুকণা দিয়ে আমরা গঠিত, সত্যিকার অর্থে তাদের অস্তিত্ব নেই। সকল বস্তুর উদ্ভব ঘটে একটি অদৃশ্য বলের সহায়তায়, যে বলের পিছনে একটি শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান চেতনা জড়িত।’

একটি কোয়ান্টাম কনাতে একই সাথে সকল সম্ভাবনা বিরাজ করে। একই সাথে সেটি দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যমান, একই সাথে কণা এবং তরঙ্গ। বস্তুজগত যেহেতু সৃষ্টি কোয়ান্টাম কণা থেকে সুতরাং মহাবিশ্বে একই সাথে সকল সম্ভাবনা টিকে থাকে। একই সাথে আমরা জ্ঞানী এবং মূর্খ, একই সাথে বিত্তবান এবং দরিদ্র, একই সাথে জীবিত এবং মৃত, সুখী এবং অসুখী। যে শক্তিশালী বল এ সকল সম্ভাবনার কোন একটিকে নির্বাচন করে এবং সত্যে পরিণত করে তা হচ্ছে বিশ্বাস এবং পর্যবেক্ষণ।

সম্ভবত বিশ্বাসকে সংজ্ঞায়িত করার সময় এসেছে। বিশ্বাস হচ্ছে চিন্তা এবং আবেগের সমন্বয়ে গঠিত অনুভূতি যা কোন ঘটনা বা তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রত্যাশা করে। মানুষ বিশ্বাস অর্জন করে ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে। বিশ্বাস এবং চেতনা কোয়ান্টাম সম্ভাবনাকে বাস্তবে পরিণত করে।

কিভাবে পর্যবেক্ষণ বাস্তবতার উপর প্রভাব ফেলে তা জানার জন্য একটি বেশ জনপ্রিয় পরীক্ষার বর্ণনা দেয়া যাক যা ‘ডাবল স্লিট’ পরীক্ষা নামে পরিচিত। ১৯০৯ সালে বিজ্ঞানীরা একটি ফোটন কণা নেন যার সামনে একটি প্রতিবন্ধক রাখা হয় যেখানে একটি সরু ছিদ্র (স্লিট) করা ছিল। ফোটন কণাটিকে সরু ছিদ্র দিয়ে যেতে দেয়া হয় যা একটি ‘ফোটন ডিটেক্টরে’ আঘাত করে।এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল, ফোটন কণাটি কণা হিসেবে আচরন করে। এবার বিজ্ঞানীরা প্রতিবন্ধকে দুটি ছিদ্র করেন এবং কণাটিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেছে নিতে দেন।

 

e

 

f

যা ঘটলো তার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিল না। কণাটি অদৃশ্য হয়ে গেলো। আশ্চর্যজনক ভাবে ফোটন ডিটেক্টরে তরঙ্গের উপস্থিতি ধরা পড়লো। অর্থাৎ কণাটি নিজেকে তরঙ্গে রুপান্তর করে নিল যাতে দুটো ছিদ্র দিয়েই একই সময়ে যেতে পারে এবং আরোপিত শর্ত পূরণ করে। এবার তারা সম্মুখীন হলেন সবচেয়ে চমকপ্রদ প্রশ্নের। প্রতিবন্ধকে যে দুটি ছিদ্র ছিল তা কে জানতো? কোয়ান্টাম কণা ফোটন এবং পর্যবেক্ষক । যেহেতু কোয়ান্টাম কনার জানার ক্ষমতা নেই সুতরাং পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণ এক্ষেত্রে বাস্তবতা পরিবর্তনের জন্য সরাসরি দায়ী। এভাবেই একটি বুদ্ধিমান চেতনা বাস্তবতার উপর প্রভাব ফেলে তাকে পরিবর্তন করতে সক্ষম।

১৯৯৮ সালে ওেয়েইজম্যান ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে এ পরীক্ষাটি আবার করা হয় যেখানে এর সত্যতার পাশাপাশি আরেকটি চমকপ্রদ অনুসিদ্ধান্ত বের হয়ে আসে। তা হল পর্যবেক্ষণের পরিমান যত বেশি হয় তা বাস্তবতাকে তথা কোয়ান্টাম কণাকে ততো বেশি প্রভাবিত করে। কোয়ান্টাম জগতের এই পরাবাস্তব ঘটনাকে আইনস্টাইন একসময় ‘উদ্ভট বিজ্ঞান’ বলে কটাক্ষ করেন এবং বলেন, ‘আমি এটা ভাবতেই পছন্দ করি যে প্রত্যেকটি কোয়ান্টাম কনার একটি নির্দিষ্ট এবং পৃথক বাস্তবতা আছে এবং সেটা পর্যবেক্ষণ কিংবা কোন শর্তের উপর নির্ভরশীল নয়।’ যদিও কোয়ান্টাম বিজ্ঞানের সুপ্রতিষ্ঠাই প্রমান করে একজন মহান বিজ্ঞানীর পছন্দ কিংবা অপছন্দের উপরও সত্য নির্ভর করে না।

১৯৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিকোলাস একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। সেখানে তিনি একটি ফোটন কণা নেন এবং তাকে দুই অংশে ভাগ করেন। এ দুভাগকে তিনি একটি ১৪ মাইল লম্বা নলের দুপ্রান্তে স্থাপন করেন। নিকোলাস একটি অংশে কিছু পরিবর্তন সাধন করেন এবং অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন সাথে সাথে ফোটনের অন্য অংশেও একই পরিবর্তন ঘটে যায় যদিও দুটি অংশ পরস্পর থেকে ১৪ মাইল দূরে অবস্থিত। কণাটির দুই ভাগ পৃথক করা হলেও তারা এনার্জি ফিল্ড দ্বারা যুক্ত থাকে।

 

পরীক্ষাটির অনুসিদ্ধান্ত হচ্ছে যদি কোন কণা কোন সময় একসাথে যুক্ত থাকে তবে তাদেরকে আলাদা করা হলেও তারা এমনভাবে আচরন করতে সক্ষম যেন কণাগুলো এখনো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত। বিজ্ঞানে এ ঘটনার নাম ‘কোয়ান্টাম এনটেঙ্গলমেনট’... এবার আমরা মহাবিgশ্ব সৃষ্টির একেবারে প্রাথমিক সময়ে ফিরে যাই যখন সমস্ত বস্তুজগত একটি অতিক্ষুদ্র কণা আকারে ছিল যাকে ‘সিঙ্গুলারিটি’ বলে। বিগ ব্যাঙ্গের ফলে বিভিন্ন ধাপে সেই কণা থেকে পুরো মহাবিশ্বের উদ্ভব ঘটে। এবার আমরা একটি নান্দনিক সৌন্দর্যের সম্মুখীন হই। যদিও মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু পৃথক সত্ত্বার অধিকারী তবুও কোয়ান্টাম এনটেঙ্গলমেনট বলে পুরো মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু নিবিড়ভাবে পরস্পরের সাথে যুক্ত। বহুদুরের কোন বাস্তবতার উপর প্রভাব ফেলতে আমাদের সহস্র আলোকবর্ষ পাড়ি দেয়ার প্রয়োজন নেই বরং উপযুক্ত ভাষার মাধ্যমে একজন পর্যবেক্ষক তথা মানুষ একটি স্থানে থেকেই সমগ্র মহাজগতের সাথে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এ উপযুক্ত ভাষা কি হতে পারে তা জানার জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষার দিকে দৃষ্টি দিই।

রাশিয়ান কোয়ান্টাম বায়োলজিষট্‌ ভ্লাদিমির পপোনিওন ১৯৯০ সালে পরীক্ষার জন্য একটি কাচনল নেন এবং তাকে বায়ুশূন্য করেন। কাচনলে অবশিষ্ট থাকে কিছু ফোটন কণা। তিনি ফোটনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দেখেন নলের ভিতরে ফোটন কণাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে আছে। এরপর তিনি একটি মানুষের DNA কাচনলে স্থাপন করেন এবং সবিস্ময়ে লক্ষ্য করেন ফোটন কণাগুলো আর বিক্ষিপ্ত অবস্থায় নেই বরং তারা DNA’র ডাবল হেলিক্সের সাথে লেগে আছে। এরপর তিনি DNA কে কাচনল থেকে বের করে আনেন কিন্তু মজার ব্যপার হল ফোটন কণাগুলো তখনো DNA’র গঠনের মত করে সজ্জিত অবস্থায় বিরাজ করছিল। কোয়ান্টাম কনার উপর মানব DNA’র এরুপ প্রভাবকে ‘DNA ফেনটম ইফেক্ট’ বলে। অর্থাৎ মানুষের DNA তার চারপাশের পরিবেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

h

মানবিক আবেগের সাথে DNA’র অবস্থার সরাসরি সম্পর্ক আছে। এক গবেষণায় দেখা যায় কিছু আবেগ এবং অনুভূতি DNA কে প্রসারিত করে আর কিছু আবেগ এবং অনুভূতি DNA কে সঙ্কুচিত করে।  এভাবে মানবিক আবেগ , বিশ্বাস , অনুভূতি DNA কে প্রভাবিত করে। আমরা আগেই জেনেছি কিভাবে DNA তার চারপাশের কোয়ান্টাম কণাকে প্রভাবান্বিত করে। অন্যভাবে মানবিক অনুভূতির দ্বারা মানুষ তার চারপাশের বাস্তবতাকে প্রভাবিত এবং পরিবর্তিত করতে পারে। আর অনুভুতিই হচ্ছে উপযুক্ত ভাষা যার মাধ্যমে মহাজগতের সাথে মানুষ যোগাযোগ করতে সক্ষম কেননা আমরা মহাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন কোন সত্ত্বা নই বরং অবিচ্ছিন্ন মহাজগতের অংশ। প্রাচীন মানব সমাজে আধ্যাত্মিক সাধনায় মানবিক অনুভূতির সুনিয়ন্ত্রণের চর্চা হতো, আধুনিক সভ্যতার ঊষালগ্নে যার মৃত্যু ঘটে। কোয়ান্টাম বিজ্ঞান আমাদের সামনে উন্মোচন করে চলেছে এক অদ্ভুত সম্ভাবনার দিগন্ত, মানুষকে মুক্ত করে চলেছে তার বস্তুগত সীমাবদ্ধতা থেকে।

 

লেখকঃ মিনহাজ ইসলাম

সিইপি বিভাগ

তৃতীয় বর্ষ/দ্বিতীয় সেমিস্টার

No comments:

Post a Comment