Tuesday, December 10, 2013

জাদুকরী টাচস্ক্রিন

বর্তমান ইলেক্ট্রনিক্স এর এই সময়ে মানুষের মুখে মুখে যে শব্দটি ঘুরে তা হল টাচস্ক্রীন অর্থাৎ স্পর্শকাতর পর্দা।আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আমরা যে স্মার্টফোন ,ট্যাবলেট পিসি,ল্যাপটপ প্রভৃতি ব্যাবহার করি তা যেন টাচস্ক্রীন ছাড়া চলেই না।ইন্টারনেট ব্রাউজিং,সামাজিক যোগাযোগ,আ্যপস,গেমস এ টাচস্ক্রীনযোগ করেছে নতুন মাত্রা।আমাদের কৌতুহলী মনে মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন উদয় হয় যে এই জিনিসটি কিভাবে এত দ্রুত কাজ করে আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে।

টাচস্ক্রীন প্রযুক্তি রয়েছে নানা ধরনের (চিত্র -১)।

image001

চিত্র -১ – বিভিন্ন ধরনের টাচস্ক্রীন প্রযুক্তি


তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় –রেসিস্তিভ এবং ক্যাপাসিটিভ।

রেসিস্তিভ টাচস্ক্রীন– এই প্রযুক্তি প্রথম দিকের উদ্ভাবিত স্মার্টফোনগুলোতে বেশি ব্যবহার করা হত।এতে ২টি স্তর রয়েছে – কনডাকটিভ(পরিবহনকারী ) স্তর ও রেসিস্তিভ স্তর।স্তরদ্বয় ছোট ছোট বিন্দু অথবা এয়ার গ্যাপ দ্বারা পৃথক থাকে।কনডাকটিভ স্তরের মধ্যে দিয়ে সর্বদাই তড়িৎ প্রবাহিত হয়।এই স্ক্রীন চাপের উপর নির্ভরশীল। যখন আঙুল দিয়ে জোরে রেসিস্তিভ স্তরের উপর যখন চাপ প্রয়োগ করা হয় তখন  রেসিস্তিভ ও কনডাকটিভ স্তর পরস্পরের সংস্পর্শে আসে এবং যে বিন্দুতে সংস্পর্শ ঘটে সেখানে তড়িৎ প্রবাহের একটি পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।তখন সেই বিন্দুতে যে ফাংশনছিল সেটা কাজ করে(চিত্র -২)।

image002

চিত্র -২ –রেসিস্তিভটাচস্ক্রীন এর কার্যপদ্ধতি


এই প্রযুক্তির অন্যতম সুবিধা হচ্ছে স্বল্প উৎপাদন খরচ।কিন্তু এই স্ক্রীনে কিছু সমস্যাও রয়েছে যেমন - এই  টাচস্ক্রীন এর লেখাসমূহ পরতে অনেক কষ্ট হয় কারন এতে আলোর প্রতিফলন অনেক বেশি হয়।

ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রীন–বর্তমান সময়ের স্মার্টফোনগুলোতে জনপ্রিয় হচ্ছে এই প্রযুক্তি।এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে – ব্যবহারবিধি সহজ, চাপের উপর নির্ভরশীলতা নেই,আলোর প্রতিফলন ও অনেক কম।এতে প্রয়োজন হয় মানুষের শরীর থেকে প্রবাহিত চার্জ।এই স্ক্রীন এর গঠনগত উপাদান হচ্ছে কপার ও ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইড যা চুলের চেয়েও সূক্ষ্ম কিছু তার দ্বারা গঠিত তড়িৎক্ষেত্রে তড়িৎ আধান সঞ্চয় করে। এই টাচস্ক্রীন এ ৩টি স্তর বিদ্যমান – গ্লাস স্তর,কনডাকটিভস্তর, প্রটেকটিভ স্তর এবং রয়েছে একটি কন্ট্রোলার।স্তরসমূহের প্রান্তে রয়েছে ইলেক্ট্রোড(তড়িৎদ্বার)...ইলেক্ট্রোডসমূহ একটি আদর্শ তড়িৎক্ষেত্র গঠনের জন্য এতে অল্প ভোল্টেজ সৃষ্টি করে।যখন স্ক্রীন স্পর্শ করা হয়(চিত্র -৩),

image003

চিত্র -৩ –ক্যাপাসিটিভটাচস্ক্রীনের কার্যপদ্ধতি


ঠিক তখনি বর্তনী সম্পূর্ণ করার জন্য ক্ষুদ্র চার্জ আঙ্গুলে চলে  আসে এবং সেই বিন্দুতে  ভোল্টেজ ড্রপ সৃষ্টি হয়।কন্ট্রোলার,ভোল্টেজ ড্রপের স্থান রেকর্ড করে এবং সেই অনুযায়ী ঐ বিন্দুতে সংশ্লিষ্ট ফাংশন কাজ করে।

এভাবেই আমরা সহজেই টাচস্ক্রীন ব্যবহার করি।টাচস্ক্রীন এর কার্যপদ্ধতি আসলেই খুব মজার।সর্বোপরি বলা যায়,সর্বত্র এখন টাচস্ক্রীন এর জয়জকার।এর দ্রুত কাজ কর্ম করার ক্ষমতা,সহজলভ্যতাই এই প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

 

 

তথ্যসুত্র –

১. www.wikipedia.org\touchscreen

২.Introductory Circuit Analysis,Robert L. Boylestad,12th edition,page-440

৩.www.youtube.com\capacitive touch pad

 

লেখকঃ  সৌমিক সিংহ

সেমি. – ১/২

সেশন – ২০১২-১৩

বিভাগ - EEE

No comments:

Post a Comment