Wednesday, December 11, 2013

পৃথিবীতে মহাপ্রলয় - আজ নাকি আগামীতে ?

 মোঃ তারেক বিন আবদুল্লাহ 


পিএমই ১/২


 

 

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা নাকচ করে দিয়েছেন অতি সম্প্রতি কোন মহাপ্রলয় হওয়ার আশঙ্কা তথা খুব দ্রুত পৃথিবীর পরিবেশের আকস্মিক অভাবনীয় পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কাকে । সম্প্রতি “Trends in Ecology and Evolution” নামক সাময়িকীতে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেন যে-“ পরিবেশগত ‘Tipping point’ অসম্ভাব্য এবং পৃথিবীর বিশাল অঞ্চলজুড়ে পরিবেশগত বড় পরিবর্তন হবে ক্রমান্বয়ে ও ধারাবাহিকভাবে”- যা “Planetary tipping point বা বৈশ্বিক প্রলয়” ধারণার সাথে সাংঘর্ষিক।

সম্প্রতি “Planetary tipping point” বলে একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যা বিজ্ঞান এবং নীতি নির্ধারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে। “Planetary tipping point ” সম্পর্কে বলা হয়েছিল- এটি ঘটবে অধিক জনসংখ্যার চাপে জীব-বৈচিত্র্যের বা জমির মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির ফলে যা সারাবিশ্বে প্রভাব ফেলতে পারে।

সাময়িকীর প্রধান লেখক ও এডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিজ্ঞানের অধ্যাপক ব্যারি ব্রুক বলেছেন “এটা খুবই ভালো সংবাদ যে, আমরা এই অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়কে সম্ভবত এড়াতে পারব”

“বৈশ্বিক প্রলয়” এর ধারণা এবং এর দিকে মননিবেশ করার ফলে একদিকে যেমন পরিবেশগত রূপান্তর হতে দৃষ্টি সরে যেতে পারে, অন্যদিকে যা অহেতুক অদৃষ্টবাদের  (ভাগ্যের হাতে হাল ছেড়ে দেওয়ার মনোভাব্) সূচনা ঘটায়। “একটি অসম্ভাব্য ঘটনার দিকে অধিক মনোনিবেশ করা পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য সহায়ক নয়। আমাদের উচিত বিশ্বের পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব কমাতে চেষ্টা করা।”

image001

“একটি বাস্তুতন্ত্রের প্রাণীরা বিলুপ্ত হলে, কার্বন নিঃসরণ দ্রুত বেড়ে প্রাণীদের সহ্যক্ষমতাকে অতিক্রম করলে “Tipping Point” সৃষ্টি হয়। অনেক স্থানীয় এবং আঞ্চলিক স্তরের বাস্তুতন্ত্রে (যেমন হ্রদ ও তৃণভূমি) এরকম ঘটেছে।

 দ্রুত প্রলয় ঘটার সম্ভাবনা নেই কেন?

তত্ত্ব বলে যে, পৃথিবীজুড়ে “বৈশ্বিক প্রলয়” ঘটতে পারে যদি পৃথিবীর সর্বত্র জনসংখ্যার চাপ সমান হয়, যাতে এর প্রভাব সারা বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়াতে পারে। সুতরাং এর জন্য পৃথিবীর সব মহাদেশগুলোর বাস্তুসংস্থানকে একত্রিত হতে হবে। কিন্তু, বাস্তবে এসব ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। “প্রথমত, মহাদেশগুলোর বাস্তুসংস্থানের মধ্যে সম্পর্ক বেশ শিথিল। দ্বিতীয়ত, জনসংখ্যার চাপের ফলে ভুমি বা আবহাওয়ার উপর সৃষ্ট প্রভাব একেক অঞ্চলে একেক ধরনের।

বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর বাস্তুসংস্থানের পরিবর্তন লিপিবদ্ধ করতে চার ধরনের পরীক্ষা করেন- আবহাওয়ার পরিবর্তন, ভুমির পরিবর্তন, জিব-বৈচিত্রের ক্ষয়, বাসস্থানের ক্ষয়। পরীক্ষার ফলাফলে তারা Tipping Point ঘটার অসম্ভাব্যতা দেখেতে পান।

image002

সহস্রাব্দ মানুষের শাসনের পরও আমাদের বাস্তুতন্ত্রের জীবজগতের চার-পঞ্চমাংশ বাস্তুসংস্থান এখনও টিকে আছে।  স্থানীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে পরিবেশ সংরক্ষণ প্রচেষ্টাও দিন দিন বাড়ছে। যদিও,  বাস্তুসংস্থান ও বৈশ্বিক পরিবর্তন ঘটছে- তা শীঘ্রই একটি প্রলয় ঘটানোর মত দ্রুত ঘটছেনা।

No comments:

Post a Comment